সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অমিত শাহর সাম্প্রতিক বঙ্গ সফর ঘিরে নতুন করে চাঙ্গা হওয়ার চেষ্টা করেছিল বিজেপি। অক্টোবরের শেষে পশ্চিমবঙ্গে সদস্য সংগ্রহ অভিযান কর্মসূচিতে এসেছিলেন অমিত শাহ। সল্টলেকের প্রেক্ষাগৃহে সেই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন 'মহাগুরু' মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। সেখানে তাঁর মুখে রীতিমতো অতীতের নকশালপন্থীদের মতো কথা শোনা গিয়েছিল। আর তা 'উসকানিমূলক' বলে উল্লেখ করে এবার থানায় অভিযোগ দায়ের হল মিঠুনের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি বিধাননগর দক্ষিণ থানায় এনিয়ে অভিযোগ দায়ের করে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন জনৈক ব্যক্তি।
গত ২৭ অক্টোবর অমিত শাহ এসেছিলেন কলকাতায়। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্দেশে চালু হওয়া নয়া কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে সংগঠনকে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে তাঁর আগমন। সল্টলেকে দলের মূল দপ্তরের সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন বিজেপি নেতা, সদ্য 'দাদাসাহেব ফালকে' পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। ওইদিন তাঁর বক্তব্য ছিল সম্পূ্র্ণ রাজনৈতিক। মিশে ছিল প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারিও। তিনি বলেছিলেন, “আজ অভিনেতা হিসেবে নয়, আমি সেই ষাটের দশকের মিঠুন চক্রবর্তী বলছি। আমি রক্তের রাজনীতি করেছি। তাই রাজনীতির মারপ্যাঁচ আমার কাছে নতুন নয়। জানি, কোন পদক্ষেপে কোন কাজ হবে। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সামনেই বলছি, এর জন্য যা দরকার, সব করব। কুছ ভি, মানে কুছ ভি…। আর এই কথাটার একটা অন্তর্নিহিত অর্থ রয়েছে।''
শাসকদল তৃণমূলকে বিঁধতে গিয়ে মিঠুনের মুখে এও শোনা গিয়েছিল, “ এখানকার এক নেতা বলেছিলেন, হিন্দুদের কেটে ভাগীরথীতে ভাসিয়ে দেব। ভেবেছিলাম, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কিছু বলবেন, বলেননি। কিন্তু আমি বলছি, তোমাকে তোমার মাটিতেই পুঁতে দেব। ” আর তাঁর এসব মন্তব্যে যথেষ্ট উসকানি রয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়ে সরাসরি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন এক নাগরিক। বিধাননগর দক্ষিণ থানায় দায়ের হয়েছে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। অনেকেই বলছেন, সিনেমার পর্দায় 'জাতগোখরো' সুলভ সংলাপ বলা 'মহাগুরু' রাজনীতির আঙিনায় নেমেও সেসব সংলাপই বলছেন এবং বার বার বিতর্কে জড়াচ্ছেন। বউবাজার থানায় মামলা দায়ের তারই অংশ।
এনিয়ে তৃণমূলের মিডিয়া কমিটির সদস্য কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ''যদি কোনও দায়িত্বশীল নাগরিকের মনে হয় যে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মঞ্চে বসে আপত্তিকর সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক কিছু বলেছেন, তাতে সেটা তো নিন্দাজনক তো বটেই। তাতে কারও এফআইআর করবেন বলে মনে করলে তিনি করেছেন। এটা নিয়ে আইনের দ্বারস্থ কেউ হলে আইন আইনের পথে চলবে।''