shono
Advertisement

ATM যন্ত্রে আঁচড়টুকু নেই, অথচ উধাও লক্ষ-লক্ষ টাকা, শহরে জাল নয়া প্রতারণা চক্রের

নয়া সফটওয়্যারের খোঁজে গোয়েন্দারা।
Posted: 09:22 PM May 29, 2021Updated: 09:23 PM May 29, 2021

অর্ণব আইচ: এটিএম অটুট রয়েছে। কোনও আঁচড়ের দাগ নেই। কিন্তু এটিএম (ATM) যন্ত্রের ভিতর থেকে রহস্যজনকভাবে টাকা উধাও। কলকাতার অন্তত দু’জায়গায় ঘটেছে এই ঘটনা। পুলিশের কাছে আসা অভিযোগ অনুযায়ী, কাশীপুর ও যাদবপুরে কলকাতার দু’টি এটিএম থেকে মোট ৪৫ লক্ষ টাকা উধাও করেছে জালিয়াতরা। এ হেন ‘ভূতুড়ে’ রহস্যের সমাধানে নেমেছে লালবাজারের গোয়েন্দাদের টিম।

Advertisement

প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দা পুলিশের ধারণা, কোনও সফটওয়্যার ব্যবহার করে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কী সেই সফটওয়্যার, তা নিয়েই সৃষ্টি হয়েছে রহস্য। এর আগে কলকাতায় একাধিকবার এটিএম ভেঙে টাকা লুঠপাটের ঘটনা ঘটেছে। এটিএমে স্কিমার যন্ত্র বসিয়ে প্রচুর টাকা জালিয়াতি করেছে রোমানীয় জালিয়াতরা। শুক্রবারও গড়িয়াহাটে এটিএম ভেঙে লুঠপাটের অভিযোগে একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু কাশীপুর ও যাদবপুরে যা ঘটেছে, তা একেবারেই নতুন বলে দাবি পুলিশের। আরও একটি এটিএম থেকেও টাকা চুরির খবর এসেছে পুলিশের কাছে।

[আরও পড়ুন: কোভিডের ‘বেঙ্গল স্ট্রেন’ সবচেয়ে মারাত্মক! সংক্রমণ রুখতে রাজ্যের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা]

পুলিশ জানিয়েছে, দিন কয়েক আগে উত্তর কলকাতার কাশীপুর রোডের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএমে টাকা ভরতি করতে এসেছিল একটি সংস্থা। তখন এটিএমের ভিতরে প্রবেশ করেন একটি নিরাপত্তারক্ষী সংস্থারও কর্মীরা। বিশেষ পদ্ধতি মেনে এটিএম খুলে ভিতরে টাকা রাখতে গিয়েই রীতিমতো আঁতকে ওঠেন তাঁরা। এটিএমের ভিতর টাকার ট্রে শূন্য। অথচ হিসাব অনুযায়ী, অন্তত সাত লক্ষ টাকা থাকার কথা ওই এটিএমের ভিতর। প্রথমে তাঁরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানান। তাঁরাও বিষয়টি বুঝতে না পেরে ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের বলেন। ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা এসে এটিএম যন্ত্রটি পরীক্ষা করে দেখেন, তা ভাঙা হয়নি। তাতে কোনও আঁচড়ের দাগও নেই। যদিও এটিএমের পিছনের দিকে কোনও তার বেরিয়ে রয়েছে, এমন দেখা যায়। বিষয়টি তাঁরা কাশীপুর থানাকে জানান। পুলিশ প্রাথমিক অনুসন্ধান করে। জানানো হয় গোয়েন্দা বিভাগকেও। কিন্তু এর মধ্যে আরও একটি ঘটনা নজরে আসে লালবাজারের গোয়েন্দাদের।

দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে টাকা ভর্তি করতে এসে এটিএম খুলতেই ওই সংস্থার কর্মীরা দেখেন, ভিতর থেকে উধাও টাকা। ওই ব্যাঙ্কের আধিকারিকরাও এসে দেখেন যে, এটিএম না ভেঙেই ভিতর থেকে উধাও হয়েছে প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার দুটি এটিএম থেকে মোট ৪৫ লক্ষ টাকা উধাও হওয়ায় লালবাজার বিষয়টিকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। দু’টি এটিএম পরীক্ষা করেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিকভাবে তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছেন, কোনও সফটওয়্যার ব্যবহার করে এই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা আধিকারিকদের মতে, এটিএমগুলির পিছন দিক থেকে তার বেরিয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। ওই তারের মাধ্যমেই সফটওয়্যার ব্যবহার করে পুরো টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলেই ধারণা গোয়েন্দাদের। এই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে এটিএম দু’টির সিসিটিভির ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে।

[আরও পড়ুন: অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি, রোগীর পরিবারের ‘তাণ্ডবে’ ধুন্ধুমার বাগুইআটির নার্সিংহোমে]

তবে যে সংস্থাগুলির উপর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ টাকা ভরতি করার দায়িত্ব দেয়, সেই সংস্থার কেউ এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত, এমন সম্ভাবনা গোয়েন্দারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। কারণ, ওই সংস্থার কর্মীরা জানেন যে, কীভাবে এটিএমের ভিতর টাকা ভরতি ও বের করা যায়। আবার এই নতুন ধরনের অপরাধের পিছনে বাইরের কোনও জালিয়াত থাকার সম্ভাবনাও পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। সেই জালিয়াত কলকাতার না কি ভিনরাজ্য বা বিদেশি, তা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে রহস্য। এখন কঠোর নিষেধাজ্ঞায় রাস্তায় লোক কম থাকার ফলেই সম্ভবত জালিয়াতরা এই সুযোগ পেয়েছে। তাই দিন ও রাতে কলকাতার প্রত্যেকটি এটিএমের উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement