shono
Advertisement

রাজ্য নেতাদের উপর আস্থা নেই! জেলায় ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’ করবেন বঙ্গ BJP’র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক

নিষ্ক্রিয় পুরনো কর্মীদের দলে ফেরান,সুকান্তদের নির্দেশ কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের।
Posted: 08:42 PM Sep 19, 2022Updated: 08:42 PM Sep 19, 2022

রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপর চব্বিশে লোকসভার ভোট। তার আগে রবি ও সোমবার, টানা দু’দিন ধরে চলা বঙ্গ বিজেপির (BJP) সমস্তস্তরের নেতাদের নিয়ে বিশেষ সাংগঠনিক বৈঠকের পর কোন্দল সামলাতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। বিক্ষুব্ধদের সামাল দিতে হিমশিম অবস্থা। তাই দলের বিক্ষুব্ধদের বিভিন্ন কমিটিতে যুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা মুখ বন্ধ রাখে। পাশাপাশি জেলায় জেলায় বসে যাওয়া দলের পুরনো নেতা—কর্মীদের তালিকা তৈরি করে অবিলম্বে তাদের কাছে যাওয়ার বার্তাও সুকান্ত—অমিতাভদের দিলেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, মঙ্গল পান্ডেরা।

Advertisement

একইসঙ্গে রাজ্য নেতাদের ছাড়াই বিভিন্ন জেলায় ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’ করবেন সুনীল বনসল। পুজোর পরই জেলা সফর শুরু করছেন তিনি। রাজ্য নেতাদের উদ্দেশে এদিন বনসলের কড়া নির্দেশ, এখানে বসে থেকে কিছু হবে না। জেলায়—বুথে—মন্ডলে যান। একদিকে দলের পুরনো কর্মীদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অন্যদিকে নতুনরা যাতে দলে আসে সেই পথও খোলা রাখা। অর্থাৎ দ্বন্দ্ব ঠেকাতে নতুন—পুরনো ভারসাম্য রেখেই যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চলার পক্ষপাতী সেটা দলের বর্তমান ক্ষমতাসীন শিবিরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন বনসল। একইসঙ্গে দলের রাশও যে তারা হাতে নিচ্ছেন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

[আরও পড়ুন: SSC মামলা: সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য]

সোমবার আইসিসিআরে বৈঠকের শেষদিন জেলা সভাপতি, জোন ও জেলা ইনচার্জদের পাশাপাশি মোর্চা ও সেলগুলির সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করেন বনসল, মঙ্গল পান্ডে, আশা লাকড়া, অমিত মালব্য, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ ও অমিতাভ চক্রবর্তীরা। বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরের বিরুদ্ধে যে বিরাট ক্ষোভ রয়েছে তা জানেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সুকান্ত—দিলীপ—শুভেন্দু শিবির, এই তিন গোষ্ঠীতে বিভক্ত বঙ্গ বিজেপি। এদিন সুনীল বনসল স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যাঁরা রাজ্য পার্টির দায়িত্বে আগে ছিলেন তাঁদের যথেষ্ট কৃতিত্ব রয়েছে। তারা দলকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়েছে। মঙ্গল পান্ডে বলেছেন, “নতুন ও পুরনোদের মধ্যে যেন সম্পর্ক ঠিক থাকে। পুরনোদের সম্মান দিতে হবে। যিনি এখন দায়িত্বে এসেছেন তিনিও আগামীদিনে পুরনো হয়ে যাবেন।” কেন্দ্রীয় নেতার এই ইঙ্গিত দলের বর্তমান পদাধিকারীদের দিকেই বলে মনে করা হচ্ছে।

এরপরই সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “আমাদের মন বড়। সবাইকে নিয়েই বিজেপি পরিবার চলবে।” পুজোর পরই রাজ্যজুড়ে জেল ভরো আন্দোলনের কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। যা নিয়ে অবশ্য বিজেপিকে এদিন কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “বিজেপির জেল ভরো কর্মসূচি হোক না। তবে শুরুটা হোক সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম থাকা শুভেন্দুকে দিয়ে। এদিকে, পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করাতে চাইছে বিজেপি।” তা নিয়ে কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, “ওদের যদি গোটাটাই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আলোচনা হয়। একুশের নির্বাচনেও তো কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। তাও হেরেছে। এটা তো বিজেপির লোকেদের ব্যর্থতা ঢাকার নাটক।”

[আরও পড়ুন: ‘প্রধানমন্ত্রীর হাত নেই, ইডি-সিবিআইয়ের পিছনে শুভেন্দু, বিজেপি নেতারা’, দাবি মমতার]

এদিন আইসিসিআরের বৈঠকে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, দলের প্রতি যাদের আনুগত্য আছে তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হোক। বুথ ও মন্ডল কমিটির সংগঠন যে নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে তা এদিন কার্যত স্পষ্ট করে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মন্ডল কমিটিকে সক্রিয় করে তোলার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি শক্তিশালী বুথ কমিটি তৈরির জন্য টিম বানিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তারা। জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বিধায়ক—সাংসদদের সমন্বয় ছিল না। একাধিক বিধায়ক ও সাংসদকে সাংগঠনিক বিষয়ে বা সব বৈঠকে ডাকা হয় না বলে অভিযোগ ছিল। এদিন, মঙ্গল পান্ডে বলেছেন, জেলা সভাপতিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে দলের বিধায়ক ও সাংসদদের। সুকান্ত মজুমদারের রাজ্য সভাপতি পদে একবছর পূর্ণ করা নিয়ে এদিন আইসিসিআরে সুকান্তকে সংবর্ধনা দেন দলের নেতা—কর্মীরা। যা নিয়ে অবশ্য বিক্ষুব্ধ শিবির কটাক্ষ করতেও ছাড়েনি। এদিন সেভ বঙ্গল বিজেপি—র তরফে আবার টুইট করে বলা হয়েছে, নবান্ন অভিযানে জেলারই বেশিরভাগ কর্মী আহত হয়েছেন। অথচ কেন্দ্রীয় টিমকে কার্যত কলকাতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখল রাজ্য নেতারা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement