shono
Advertisement

‘বন্ধু’বিশেষ বাইক কাম হুইল চেয়ার, পক্ষাঘাতকে তুড়ি মেরে অপরাজিত অভিষেক

এবার থেকে একাই স্কুলে পড়াতে যেতে পারবেন মেধাবী শিক্ষক।
Posted: 03:51 PM Jul 02, 2022Updated: 03:54 PM Jul 02, 2022

স্টাফ রিপোর্টার: “অভিষেকের হাতে বেহালা তুলে দিয়ে ডাক্তারবাবু বলেছিলেন, বাজাও। আমি শুনব। সিস্টার শুনবেন।” পিজি হাসপাতালের (PG Hospital) বেডে শুয়ে ডা. রাজেশ প্রামাণিকের কথা শুনে চোখে জল তরুণের। কোলে পড়ে রইল বেহালা। একদিন, দু’দিন। কয়েক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে, বেহালা রয়ে গিয়েছে কোলেই। কয়েক মাসের চেষ্টায় একদিন সুর উঠল, “যদি সব হারিয়ে/ দু’টি হাত বাড়িয়ে…।”

Advertisement

এবার অন্য দৃশ্য। ডাক্তারবাবু আপ্লুত। তরুণের হাত দু’টো ধরে বলেছিলেন, “তুমিই পারবে। পারতেই হবে।” শুক্রবার ভবানীপুর বকুলবাগান রোডের এই যুবকের হাতে অত্যাধুনিক ব্যাটারি চালিত বাইক কাম হুইল চেয়ার (Wheel Chair) তুলে দিয়েছেন এসএসকেএম-এর (SSKM) অধিকর্তা ডা. মণিময় বন্দ্যোপাধ‌্যায়। পাশে দাঁড়িয়ে রাজেশবাবু বললেন, “ডক্টরস ডে’তে এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে? এখন থেকে নিজেই বাইক চালিয়ে পড়াতে যাবে। পক্ষাঘাতকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে সে। কারও উপর ভরসা করতে হবে না ওঁকে।” হলঘরে তখন পিন পতনের নীরবতা।

[আরও পডুন: ভুল করে ভারতে ঢুকে দিশাহারা, কান্নায় অস্থির পাক শিশু, ঘরে ফেরাল মানবিক BSF]

২০১৭ সালের জুন মাসে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে ঘাড়ের শিরদাঁড়ায় মারাত্মক চোট পান সেন্ট জেভিয়ার্সের প্রাক্তনী অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। তারপর থেকেই পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন। কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে চেন্নাই থেকে বিফল হয়ে ফিরে আসেন অভিষেকের পরিবার। শেষ ভরসা পিজি হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (PMR)। টানা দু’বছর হাসপাতালে ভরতি ছিলেন এই তরুণ। রসায়ন ও বায়োকেমিস্ট্রিতে এমএসসি করা অভিষেক রুবি পার্কে একটি বেসরকারি স্কুলে অঙ্কের শিক্ষক। প্রথম যখন হাসপাতালে আনা হয় তাঁর কোনও সাড় ছিল না। সর্বাঙ্গে বেডসোর। আঙুল নড়াচড়া করতে পারতেন না।

[আরও পডুন: বুর্জ খালিফার পর ফের থিমভাবনায় চমক শ্রীভূমির, এবারের আকর্ষণ কী? জানালেন সুজিত বসু]

এদিন অভিষেকের এমন উন্নতি দেখে এসএসকেএমের অধিকর্তা ডা. মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিভিন্ন ধরনের হুইল চেয়ার এখন পাওয়া যাচ্ছে। এগুলি আগে ছিল না। যাঁর যে হুইল চেয়ার দরকার তাঁকে যেন সেটাই দেওয়া হয়। তার জন্য চিকিৎসক, প্যারামেডিক্যাল কর্মী সকলেরই সচেতন হওয়া প্রয়োজন।” চিকিৎসকদের অভিমত, “বিভিন্ন সময়ে হুইল চেয়ার দেওয়া হয়। কার কী ধরনের হুইল চেয়ার দরকার, সেটা না দেখে দিলে আদতে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।”

যেমন পক্ষাঘাতের রোগীকে পা কাটা রোগীর হুইল চেয়ার দিলে সেটা বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। রাজেশ প্রামাণিকের কথায়, “প্রত্যেকের পেশাগত জীবন আলাদা। তাই অভিষেকের জন্য এমন ব্যাটারিচালিত হুইল চেয়ার দেওয়া হয়েছে।” পিজি হাসপাতাল সূত্রে খবর, একবার চার্জ দিলে অন্তত ৩০ কিলোমিটার চলতে পারবে এই হুইল চেয়ার। ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার গতি। হেলমেট পরে অভিষেক বাইকে উঠবে – সেই সময়ের অপেক্ষা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার