অর্ণব আইচ: প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখে সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারীর নাম। বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে ঢোকার মুখে বিস্ফোরক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অনৈতিক কাজ করতে পারেন না বলেও দাবি তাঁর। এদিকে, এদিন আদালত চত্বরে ফের তাঁকে লক্ষ্য করে ‘চোর’ স্লোগান দেয় এক যুবক।
জেল হেফাজত শেষে বৃহস্পতিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়। আদালতে ঢোকার সময় মুখ খোলেন পার্থ। তিনি বলেন, “যে সুজনবাবু, দিলীপবাবু, শুভেন্দুবাবুরা বড় বড় কথা বলছেন তারা নিজের দিকে দেখুন। উত্তরবঙ্গে তাঁরা কী করেছেন? সুজন বাবুদের জিজ্ঞেস করুন কী হয়েছিল? কতজন ডিওয়াইএফআই লোকের চাকরি হয়েছিল? ২০০৯-১০ সালের CAG রিপোর্ট পড়ুন। সব জায়গায় তদ্বির করেছেন সুজন-শুভেন্দুরা। যেহেতু আমি বলেছিলাম বেআইনি কাজ করতে পারব না। আমি নিয়োগকর্তা নই। শুভেন্দুর ২০১১-১২ সালটা দেখুন না। ডিপিএসসিতে দেখুন না কী করেছিল।”
[আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী মন্দার মাঝেই আশার আলো, চলতি বছরে ভারতীয়দের বেতন বাড়তে পারে ১০.২ শতাংশ]
পার্থ চট্টোপাধ্যায় আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে মন্তব্য করেন বেলা ১২টা ৫ মিনিটে। আর ওই তিন বিরোধী নেতার নাম উল্লেখ করে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ টুইট করেন বেলা ১১টা ৪২ মিনিটে।
স্রেফ ১৮ মিনিটের ব্যবধানে পার্থ এবং কুণালের মন্তব্য নিয়ে নয়া জল্পনা দানা বেঁধেছে। বিরোধীদের দাবি, পার্থ এবং তৃণমূল একই সুরে কথা বলছে। যদিও বিরোধীদের দাবি নস্যাৎ করেছেন কুণালবাবু। তাঁর মতে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় একসময় শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তাছাড়া তিনি নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত। তাই তাঁর দাবি অনুযায়ী সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারীদের গ্রেপ্তার করা উচিত। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিস্ফোরক মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব সুজন-দিলীপ ঘোষরা। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, “২০১৫ সালে রাজনীতিতে এসেছি। ২০১৬ সালে পরিচয়। তার আগের কোনও বছর নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলাই উচিত নয়। অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে পার্থর বদলে আমি জেলে যাব।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, জেলে থেকে প্রলাপ বকছেন পার্থ। তবে এখনও পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে, এদিন পার্থকে লক্ষ্য করে আদালত চত্বরে ফের ‘চোর’ স্লোগান দেয় এক যুবক। তাতেই বেশ খানিকটা অভিমানী পার্থ। তিনি বলেন, “কিছু বলব না ভেবেছিলাম। এখন দেখছি না বললে আমার বিরুদ্ধে যাচ্ছে। সেটা আমি চাই না। তাই আবার বলা শুরু করব। পাঁচ বছর ধরে যে লোকটা রাস্তায় বসে কাজ করেছে। করোনা সামলেছে। সে লোকটা চুরি করতে পারে না। যে জানে সে আমাকে নিয়ে খারাপ কিছু লিখতে পারে না। আমি একই জায়গা থেকে পাঁচবার জিতেছি। কখনও অন্য কোথাও থেকে লড়াই করিনি। যদি সৎ না হতাম তাহলে মানুষ কী জেতাত?” ঘনিষ্ঠরাই পার্থকে বলেন, “আপনাকে চোর বলেছে আপনারই বেহালার মানুষ।” পার্থ বলেন, “মিথ্যা কথা। আমাকে বলতেই পারে না। চুরির প্রমাণ নিয়ে এসে বলুক। ওরা সিপিএমের লোক।”
[আরও পড়ুন: ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ বাতিল করে ফিরছে ইন্টারভিউ! শিক্ষক নিয়োগের বিধিতে বদলের সুপারিশ SSC’র]