ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: পদার্থবিদ্যার সূত্র অনুযায়ী, একজন মানুষ একই সময় দু জায়গায় থাকতে পারে না। ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই অবস্থানগত সংশয় এখন তোলপাড় আর জি কর হাসপাতাল। এখানেও নেপথ্যে সেই সন্দীপ ঘোষ এবং তাঁর 'স্নেহভাজন' প্রসূন চট্টোপাধ্যায়। তিনি নাকি সন্দীপের আপ্ত সহায়ক হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে তিনি নাকি উপস্থিত ছিলেন। আবার ন্যাশনাল মেডিক্যালের রেজিস্টার বলছে, প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের স্বাক্ষর রয়েছে। তিনদিন আগে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের যে ঘরটিতে তিনি বসতেন, ঘটনার পর সেই ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন পড়ুয়ারা। ফলত ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে উপাধ্যক্ষ অর্ঘ্য মৈত্র দৈনন্দিন কাজ করতে পারছেন না। ঘটনা হল, অর্ঘ্য মৈত্রের ঘরেই গত তিন বছর ধরে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন, মাইনে তুলতেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে।
সূত্রের খবর, ৯ আগস্ট তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস ধর্ষণ-খুনের দিন অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে প্রসূনকেও দেখা গিয়েছিল আর জি করের (RG Kar Hospital) সেই সেমিনার রুমে। সেদিনই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের রেজিস্টারেও তাঁর উপস্থিতির স্বাক্ষর (Signature) স্পষ্ট। স্বভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এমনটা হয় কীভাবে? একই সময়ে দু জায়গায় কীভাবে একজন ব্যক্তির উপস্থিতি কি সম্ভব? প্রসূন চট্টেপাধ্যায় কিন্তু এনিয়ে চুপ। কোনও মন্তব্য করছেন না। কিন্তু সরব হয়েছেন আর জি কর ও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের (National Medical College) পড়ুয়ারা।
[আরও পড়ুন: জনপ্রিয় ফুটবলারকে মন দিয়েছেন ‘রানিমা’, দিতিপ্রিয়ার প্রেমিকের পরিচয় জানেন?]
তাঁদের অভিযোগ, রোজ সকালে প্রসূন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে সই করেই চলে আসতেন আর জি করে। সন্দীপ ঘোষের (Sandip Ghosh)ঘরে বসে তাঁর নির্দেশেই একের পর এক কাজ করে গিয়েছেন। ফাইল পাঠিয়েছেন। এমনকী স্বাস্থ্যভবনেও গিয়েছেন। এই অভিযোগ শুধু আর জি করে নয়, স্বাস্থ্যভবনেও (Swasthya Bhaban) পৌঁছেছে।
[আরও পড়ুন: ‘অন্ধকার সুড়ঙ্গ শেষে আলো থাকে’, শাহের সঙ্গে সাক্ষাতের পর মন্তব্য রাজ্যপালের]
এও অভিযোগ উঠেছে, দিনের পর দিন আর জি করে কাজ করেছেন প্রসূন। কিন্তু সরকার থেকে নাকি তাঁকে যে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল, সেখানে আদৌ তিনি কাজ করেননি। তা নিয়ে এখন স্বাস্থ্যভবনে তদন্ত শুরু হতে চলেছে। এমনকী শুধু আর জি কর বা ন্যাশনাল মেডিক্যাল নয়, রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজেও এমন অনৈতিক কাজ হয়ে আসছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদের একটা বড় অংশ। সেসবও এবার তদন্তের আওতায় আসতে চলেছে।