রমেন দাস: ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীকে চিকিৎসা না করে ফেলে রাখার অভিযোগ। প্রতিবাদ করে হেনস্তার শিকার চিকিৎসক তাপস প্রামাণিক। কীভাবে গোটা ঘটনা সংবাদমাধ্যম জানল, সেই প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদী চিকিৎসকের উপরে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল হাসপাতালেরই জুনিয়র চিকিৎসকদের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে। পালটা জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, তেমন কিছুই ঘটেনি! পুরোটাই বেশি করে দেখানো হচ্ছে!

কিন্তু কেন এই ঘটনা? প্রতিবাদী ওই চিকিৎসক অর্থাৎ তাপস প্রামাণিকের দাবি, বুধবার বিকেলের দিকে এক রোগীকে জরুরি বিভাগে তিনি দেখেন। কিন্তু সেই রোগীর কাগজ নির্দিষ্ট বিভাগে পাঠানোর পরেও আইনি কারণ দেখিয়ে সেই কাগজ প্রত্যাখ্যান করেন কর্তব্যরত নার্স! এদিকে রোগীর চিকিৎসায় কেন দেরি? এই প্রশ্নে সরব হন তাপস। যদিও এই টানাপোড়েনে কেটে যায় প্রায় ৩ ঘণ্টা! রোগীর চিকিৎসায় দেরি নিয়ে প্রশ্ন তোলে রোগীর পরিবার। ওই চিকিৎসকের কথায়, "এই ঘটনার পর বুধবার সন্ধ্যা ৭টা সাড়ে ৭টা নাগাদ আমার বসার ঘরে একদল জুনিয়র চিকিৎসক এবং কয়েকজন নার্স হাজির হন। আমি কেন ওই রোগীর কার্ডে সত্যি লিখেছি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। আমাকে ঘিরে ধরে চিৎকার করতে শুরু করেন। আমি বাধ্য হয়ে ট্রমা কেয়ার বিল্ডিংয়ে আমার ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসি। ওঁরা সেখানেও চড়াও হয়ে মৌখিক হেনস্তা করতে থাকেন, কেন আমি ওই কার্ড অর্থাৎ রোগীর জন্য নির্দিষ্ট ইমারজেন্সি টিকিট বদল করছি না। কিন্তু রোগীর চিকিৎসায় যে গড়িমসি ছিল, সেটা সত্যি। তাহলে আমি কেন লিখব, এই প্রশ্ন তুলি!'' তাপসের আরও দাবি, তিনি ঘটনার কথা রাতেই সুপারকে জানান। সিআরপিএফ, পুলিশ সাহায্য করে। তাঁকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিতে হয়।
ডা: তাপস প্রামাণিক আরও বলেন, "বৃহস্পতিবার সুপারের ঘরে রীতিমতো অশ্রাব্যভাষায় কথা বলা হয়। নানা প্রশ্ন করা হয়, কেন এই খবর সংবাদ মাধ্যম পেল, সেটাও জিজ্ঞাসা করা হয়। অর্থাৎ আমাকে সন্ধ্যায় হেনস্তার পরে আবার মুখোমুখি হতে হয়।" কিন্তু কেন প্রতিবাদ করে এই অবস্থা? তাপস প্রামাণিক বলছেন, "একটা বড় অংশের জুনিয়র চিকিৎসক এসব করেছেন। কর্তৃপক্ষকে বলেছি ব্যবস্থা নিতে। এভাবে ডিউটি করা সম্ভব না। আমি ছুটি চেয়েছি। আজ থেকেই ছুটিতে যাচ্ছি!" যদিও এই বিষয়ে জানতে আর জি করের (RG Kar Controversy) আন্দোলনরত এক চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তাঁরা জানান, "এই বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারব না। কিছু হয়েছে কিনা জানি না এখনও। যিনি অভিযোগ করছেন তাঁর কথা ধরেই যা লেখার লিখে দিন! আমরা এখনও কিছু জানি না।"