shono
Advertisement
Sheikh Hasina

গোয়েন্দা ব্যর্থতার জেরেই দেশ ছাড়তে হয়েছে মুজিবকন্যাকে, মানলেন হাসিনার মন্ত্রী

স্বমহিমায় ফিরবে আওয়ামি লিগ, দাবি বাংলাদেশের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রীর।
Published By: Kishore GhoshPosted: 09:57 AM Jul 17, 2025Updated: 04:01 PM Jul 17, 2025

গোয়েন্দা ব্যর্থতার জন্যই শেষ পর্যন্ত দেশ ছাড়তে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। জটিল পরিস্থিতিতে পুলিশ-সেনার উপর নির্ভর করে ভুল করেছিল দল। – বুধবার কলকাতায় বসে এভাবেই হাসিনা-বিরোধী অভ্যুত্থানের বাড়বাড়ন্তের কারণ ব্যাখ্যা করলেন দেশের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তাঁর সঙ্গে কথা বললেন অর্ণব আইচশীর্ষেন্দু চক্রবর্তী। 

Advertisement

আওয়ামি লিগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের অভিযোগ, “এখন দেশে ভয়ংকর অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আইনের শাসন একেবারের মুছে গিয়েছে। জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। পরিস্থিতি প্রতিমুহূর্তে খারাপ হচ্ছে।” প্রাক্তন মন্ত্রীর আরও অভিযোগ, আসলে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার তৈরি করার কোনও সদিচ্ছা নেই এই অন্তর্বর্তী সরকারের। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্যই তারা একাধিক সংবিধান বিরোধী পদক্ষেপ করে চলেছে।
সংবিধান বিরোধী পদক্ষেপ মানে?

প্রশ্নটা শুনেই একটু থমকে গেলেন। একটু থেমে পাল্টা প্রশ্ন– এটা কি কোনও নির্বাচিত সরকার? এরা কীভাবে সংবিধান পরিবর্তনের কথা বলে? আসলে জানেন তো, মুহাম্মদ ইউনূস যে করেই হোক ক্ষমতা ধরে রাখতে চান। সে জন্যই তো জুলাই সনদের নাম করে একটা জোরজুলুম পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে। এটা কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।

এখানেই শেষ নয়। হাছানের অভিযোগ, দেশের মানুষকে খুন করে রাস্তায় ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। একটা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করা হয়েছে। কোনও সভ্য দেশে এবাবে মানুষ খুন করে ঝুলিয়ে রাখা হয় না। আসলে এসব করে বিরোধীদের কণ্ঠরোধের একটা চক্রান্ত চলছে বাংলাদেশ জুড়ে।

আওয়ামি লিগকে তো কার্যত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তো ভোটে লড়াই করাও সম্ভব নয়। তা হলে কি এত দিনের ঐতিহ্যশালী দলটা বাংলাদেশ থেকে মুছে যেতে চলেছে?

এবার চোয়াল শক্ত হয়ে উঠল লিগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের। বেশ কিছুটা জোরের সঙ্গে দাবি করলেন, প্রধানমন্ত্রী তথা নেত্রী দলের প্রতিটি কর্মীর সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তাঁর নির্দেশমতোই সংগঠনের কাজ চলছে। এটা ঠিক, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আওয়ামি লিগের কর্মী-নেতারা অনেকেই দেশের বাইরে আছেন। অনেককে একাধিক মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পুরে রাখা হয়েছে। তা বলে আমরা পিছিয়ে থাকব না। সংগঠন মজবুত করার কাজ চলছে। আমি আশাবাদী সঠিক সময়ই আমরা আবার নিজেদের স্বমহিমায় তুলে ধরতে পারব।

প্রায় ঘণ্টাখানেকের সাক্ষাৎকার পর্বে স্বাভাবিকবাবেই চলে এল ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক প্রসঙ্গ। হাসিনা জমানার বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “কোনও বিদেশি রাষ্ট্রের হাত ধরে নয়। আমাদের নিজেদের শক্তি নিজেদেরকেই সঞ্চয় করতে হবে। বিদেশি শক্তির হাত ধরে তো আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছিল। এটা আজ গোটা বিশ্বের সামনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, কীভাবে বিদেশি শক্তি এবং বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের মদতে কিছু ছাত্রকে সামনে রেখে লুঠপাট চালানো হয়েছিল।”

ক্ষণিক থেমে প্রাক্তন মন্ত্রী ফের বলতে শুরু করলেন, “আগেও একাধিকবার দলের তরফ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছিল। আজ আমিও বলছি। সে দিন যদি শেখ হাসিনা চাইতেন, ক্ষমতা ধরে রাখতে পারতেন। তাতে হয়তো রক্তপাত হত। তিনি সেটা চাননি বলেই ক্ষমতা ছেড়ে, দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন।

–এর পরই হাসিনার মন্ত্রীর সতর্কতা, “আমাদের ভদ্রতাকে অনেকে দুর্বলতা মনে করতে শুরু করেছেন। মনে রাখবেন, আজও গোপালগঞ্জে মানুষ আওয়ামি লিগের সমর্থনে পথে নেমেছেন। শুধু গোপালগঞ্জ নয়। একে একে মানুষ মুখ খুলছেন। ধারাবাহিক অরাজকতার বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন। যে ভয়ের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা হয়েছিল, সেটা আস্তে আস্তে মানুষের মন থেকে মুছে যাচ্ছে। দেশের মানুষ আজও শেখ হাসিনাকেই ক্ষমতায় চান।”

কীভাবে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে মুক্তি সম্ভব?
আওয়ামি লিগ কি আবার স্বমহিমায় ফিরে আসবে?
বাংলাদেশে যে খুন-হিংসার ঘটনা ঘটছে, তার থেকে কি রেহাই মিলবে?

এক সঙ্গে এতগুলো প্রশ্ন শুনে প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করলেন, একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। একটা কথা মনে রাখবেন, রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছু নেই। দেশের স্বার্থে অনেক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ভবিষ্যতে নেওয়া হতে পারে।
এর পরই হাছানের দাবি, বেশ কিছু বিদেশি শক্তির মদতে বাংলাদেশে অরাজকতা তৈরির চক্রান্ত চলছে।

–কোন দেশের দিকে আঙুল তুলছেন?

সরাসরি কোনও দেশের নাম না করলেও কথায় কথায় বুঝিয়ে দিলেন, তাঁদের অভিযোগ আমেরিকা এবং অবশ্যই পাকিস্তান। হাছানের কথায়, “মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তো পাকিস্তানের ভালো সম্পর্ক। এখন তো ওদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কও নতুনভাবে শুরু হয়েছে। আর সেই সব কিছুর সঙ্গে বেড়ে চলেছে জঙ্গি কার্যকলাপ। কিছু না বলেও যেন বুঝিয়ে দিলেন, বাংলাদেশের বাড়ছে জঙ্গি কার্যকলাপ। বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে জাল নোটের। প্রতিবেশী দেশে জঙ্গি কার্যকলাপের বাড়বাড়ন্ত নিঃসন্দেহে ভারত বা আরও স্পষ্ট করে বললে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে অবশ্যই মাথাব্যথার কারণ। আর সে দিকেই যেন ইঙ্গিত করে গেলেন হাসিনার মন্ত্রী।

তবে, তাঁর দাবি, দিল্লি প্রথম থেকেই হাসিনার পাশে রয়েছে। নয়াদিল্লি বাংলাদেশের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। তাদের পাশে আছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • প্রায় ঘণ্টাখানেকের সাক্ষাৎকার পর্বে স্বাভাবিকবাবেই চলে এল ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক প্রসঙ্গ।
  • সরাসরি কোনও দেশের নাম না করলেও কথায় কথায় বুঝিয়ে দিলেন, তাঁদের অভিযোগ আমেরিকা এবং অবশ্যই পাকিস্তান।
  • নয়াদিল্লি বাংলাদেশের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।
Advertisement