স্টাফ রিপোর্টার: খসড়া ভোটার তালিকার ম্যাপিং না হওয়া প্রায় ৩২ লক্ষ ভোটারের শুনানি শুরু হচ্ছে শনিবার থেকে। তার জন্য বুধবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে দু'দফায় প্রশিক্ষণ হল মাইক্রো অবজার্ভার পদে নিয়োগ করা ৪৬০০ কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিকদের। আর সেই প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পরই রাজ্যের সিইও দপ্তরে এসে শুনানির কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন জমা দিলেন শতাধিক মাইক্রো অবজার্ভার। যা নিয়ে বুধবার চাঞ্চল্য তৈরি হয়। যদিও এ প্রসঙ্গে কমিশন জানিয়েছে, মাইক্রো অবজার্ভারদের মহকুমা শাসকের কাছে রিপোর্ট করতেই হবে। তারপর রেহাই দেওয়ার বিষয় ভাবা হবে।
এদিন যে সমস্ত সদ্য নিযুক্ত মাইক্রো অবজার্ভার কাজ শুরুর আগেই রেহাই চেয়েছেন, তাঁরা নানাবিধ ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছেন বলেই কমিশন সূত্রে খবর। যার অনেকটাই যুক্তিযুক্ত বলে কমিশনের একাংশ মনে করছে। সিইও দপ্তরে এসে যে সদ্য নিযুক্ত মাইক্রো অবজার্ভাররা কাজ শুরু আগেই রেহাই চেয়েছেন, তাঁদের কেউ মায়ের অসুস্থতাকে কারণ হিসাবে দেখিয়েছেন, কেউ জমা দিয়েছেন প্রতিবন্ধী শংসাপত্র। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজনের বক্তব্য, তাঁর ২৮ তারিখ রিজিওনাল ব্যাঙ্ক আফিসার পদে পরীক্ষা আছে বলে তিনি রেহাই চাইছেন। অন্য একজনের সমস্যা তাঁর স্ত্রী সরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি করায় এবং সপ্তাহে তিনদিন নাইট শিফট থাকায় সাত বছরের সন্তানকে দেখার কেউ নেই। তাছাড়া বাড়ি থেকে দূরের জেলায় পাঠানোতেই অনেকে যেতে নারাজ।
সিইও দপ্তর সূত্রে খবর, শুনানিপর্বে এই মাইক্রো অবজার্ভাররাই কমিশনের চোখ ও কান। এজন্য শুনানিকক্ষে তাঁদের কী ভূমিকা পালন করতে হবে, সে কথা বুধবার প্রশিক্ষণ শিবিরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাজের ন'দফা তালিকায় আছে- বিএলওদের ডিজিটাইজ করা এনুমারেশন ফর্ম যাচাই, জন্ম ও মৃত্যুর নথির সঙ্গে ভোটার তালিকার তুলনা, দাবি ও আপত্তির ক্ষেত্রে জমা পড়া নথি পরীক্ষা, শুনানি প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ, পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণে নির্বাচনী অবজার্ভারদের সহায়তা প্রভৃতি।
রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের মন্তব্য, “এসআইআর নিয়ে নানা ভুলভাল সিদ্ধান্ত হয়েছে। যে পদ্ধতিতে হওয়ার কথা, তা না হয়ে হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অজস্র ভুলভাল হয়েছে।" সিইও দপ্তরের কর্তাদের একাংশের কথায়, গোড়া থেকেই এসআইআরের পদ্ধতিতে কিছুটা গলদ ছিল। যা পরে বুঝতে পেরে দফায় দফায় সংশোধন করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কীভাবে এসআইআর হবে, তা স্থির করার সময় প্রত্যেক রাজ্যের প্রশাসনিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চরিত্রের পার্থক্য মাথায় রাখা উচিত ছিল। তা না করে সব রাজ্যকে এক পঙ্ক্তিতে ফেলে দিয়েছিল কমিশন।
