সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভবিষ্যত নিয়ে এখনও সন্দিহান এসএসসির ২৬ হাজার চাকরিহারা শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা। চাকরি কি ফিরবে নাকি ফের পরীক্ষায় বসতে হবে তাঁদের, সেই সদুত্তর এখনও অধরা। তবে আইনি লড়াই লড়ে চাকরি ফেরানোর আশা ছাড়ছেন না তাঁরা। পাশাপাশি পথে নেমে জনমত তৈরি করতে আন্দোলনও চালিয়ে যাবেন। সোমবার বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা জানালেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরিচ্যুতদের একটা বড় অংশ।
সোমবার, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের সমাবেশে প্রতিশ্রুতিমতো যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee Teachers Meeting)। ‘যোগ্য’দের পাশে থেকে চাকরি বাঁচানোর আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, "যোগ্যদের নিয়ে আমরা সুপ্রিম কোর্টের কাছে ব্যাখ্যা চাইব। জানতে চাইব, যাঁরা এতদিন কাজ করছিলেন, তাঁরা এখন কী করবেন? স্কুলে যাবেন না? বাচ্চাদের পড়াবেন না?" এরপরই ‘যোগ্য’দের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ”কোনও নোটিস না পাওয়া পর্যন্ত আপনারা স্কুলে যান। কেউ বারণ করবে না।" তাঁর আশ্বাসের পরও পুরোপুরি চিন্তামুক্ত হতে পারেননি চাকরিহারাদের বড় অংশ। এ প্রসঙ্গে অন্যতম চাকরিহারা শিক্ষক মেহবুব মণ্ডল বলেন, "আজকে আমাদের বৈঠকের পরও ধ্রুব সত্যকে অস্বীকার করতে পারছি না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আমাদের চাকরি গিয়েছে। চাকরি ফেরানোর প্রক্রিয়া বেশ কঠিন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ থেকে এখন রিভিউ পিটিশান। সেখান থেকে কিউরেটিভ পিটিশান। গোটা প্রক্রিয়ায় বেশ কঠিন ও জটিল।"
তবে শুধুমাত্র আইনি লড়াই নয়। বরং রাস্তায় নেমে নিজেদের পক্ষে জনমত তৈরির নীল নকশাও তৈরি করতে তৎপর চাকরিহারারা। মেহবুবেক কথায়, "আইনি লড়াইয়ের সঙ্গে জনমতেরও প্রয়োজন রয়েছে। মানুষের মুখ থেকেও যেন রিভিউয়ের দাবি ওঠে। মানুষ যদি মনে করে আমরা অযোগ্য, তাহলে সেটা মাথা পেতে নেব। জনমত গঠনের জন্য একটাই পথ রাস্তায় নামা। অ্যাজেন্ডা তৈরি হচ্ছে। জেলা ভিত্তিকের পাশাপাশি সার্বিকভাবে অ্যাজেন্ডা বানানো হচ্ছে। কোথাও একটা অবস্থান করব। সেখান থেকে আইনি লড়াই চলবে। বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব।"
কোন পথে এগোবে আন্দোলন? ২১ এপ্রিল নবান্ন অভিযান হবে? জবাবে মেহবুর জানান, "আজ রাতে মিটিং হবে। সেখানে ঠিক হবে পরবর্তী কর্মসূচি। আমাদের কলকাতা এবং জেলাজুড়ে কী আন্দোলন হবে, সেটা এখানেই ঠিক হবে। আপাতত ধর্মতলায় অবস্থান চলবে।" মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি নিয়ে তাঁর মত, "বৈঠকের ফল আংশিক। সবটাই এখনও প্রতিশ্রুতি। রাজার প্রতিশ্রুতি স্বাভাবিক।"
একই সঙ্গে ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের নেপথ্যে বিরোধীদের চক্রান্ত নিয়েও সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি-সিপিএম চাকরি বাতিলের খেলা খেলছে বলেও বিস্ফোরক দাবি করেছেন তিনি। যদিও চাকরিহারাদের একাংশ বলছে, "শুধু বিরোধীরা নয়, রাজ্য সরকারও আমাদের নিয়ে খেলছে। সব রাজনৈতিক দলই খেলছে।" আর এত জটিলতার মধ্যেই আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি পথেও নামছেন তাঁরা।