সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক এক বছর আগের কথা। বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। স্বভাবতই সেবার ধুমধাম করে একুশে জুলাই পালিত হয়েছে ধর্মতলায়। কিন্তু তারপরই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার হন তৎকালীন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। দিনটা ছিল ২৩ জুলাই। তারপর থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি তিনি। এই প্রথমবার একুশের শহিদ স্মরণে সরাসরি দলের সঙ্গে নেই এতদিনকার সৈনিক। আজকের দিনে প্রেসিডেন্সি জেলে বসে কার্যত মনমরা তিনি।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে বারবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছেন, তিনি দলের সঙ্গেই রয়েছেন এবং দলও তাঁর সঙ্গে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছিল, দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পরপরই দল তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে। দলের সমস্ত পদ থেকে রাতারাতি ছেঁটে ফেলা হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তবু দলের একনিষ্ঠ সেনা হিসেবে তিনি বারবার নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন। বুকে তাঁর একুশের আবেগ। এবারই প্রথম তিনি দলের কোনও কর্মসূচিতে কোথাও নেই। বিশেষত একুশে জুলাইয়ের (TMC 21 July Rally) স্বভাবতই মন খারাপ তাঁর।
[আরও পড়ুন: সম্মতি মেলেনি রাজ্যপালের, বিধানসভার বাদল অধিবেশন অনিশ্চিত, ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর]
এদিকে, নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তারির এক বছরের মুখে অবশ্য সুদিন ফেরার ক্ষীণ আশা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর হয়ে বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশালের ইডির বিশেষ আদালতে জামিনের আবেদন জানান দুঁদে আইনজীবী ড. সামসুদ্দিন শামস। উল্লেখ্য, তিনি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটেরই প্রাক্তন বিশেষ আইনজীবী। যদিও এদিন পার্থর জামিনের জন্য আবেদন দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণে ইডির আইনজীবীরা আবেদন জানাতে পারেননি।
[আরও পড়ুন: দেশের সবচেয়ে ধনী বিধায়ক কর্ণাটকের শিবকুমার, সবচেয়ে গরিব বাংলারই এক বিধায়ক]
ফের ২৭ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের শুনানি হবে। আইনজীবী ড. সামসুদ্দিন শামস দাবি করেন, গত ২২ জুলাই তাঁর বাড়িতে সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়াই ইডি (ED) তল্লাশি চালায়। পার্থ বারবার সার্চ ওয়ারেন্ট দেখতে চাইলেও তা দেখানো হয়নি। প্রায় ৩২ ঘণ্টা ধরে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশির শেষে একটি নথি তাঁকে দেওয়া হয়। বাড়ি থেকে ১৭টি বস্তু প্রথমে আটক করা হয়েছে বলা হলেও ১২টির কথা উল্লেখ রয়েছে। সেখানে পার্থর সই নেই। রয়েছে দুই ব্যাংক অফিসারের। প্রাক্তন মন্ত্রী হওয়ার কারণে তাঁর বাড়িতে অ্যাডমিট কার্ড-সহ বিভিন্ন ধরনের নথি থাকতেই পারে। আবার বাইরে থেকে কেউ তাঁর বাড়িতে নথি রেখে দিতেও পারে। তল্লাশি চলাকালীন তাঁকে বাইরে থাকতে বলা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার পরও কীভাবে ইডি তদন্তের কথা বলছে? এক বছরে তদন্তের কী অগ্রগতি হয়েছে? তাঁর বাড়ি থেকেও টাকা বা গয়না উদ্ধার হয়নি। পার্থর শারীরিক সমস্যা উল্লেখ করে জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী।