shono
Advertisement

Breaking News

একইদিনে একইসঙ্গে MAKAUT বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দুই উপাচার্য! অস্বস্তিতে কর্মীরা

ব্যাপারটা কী?
Posted: 09:34 AM Aug 05, 2022Updated: 09:34 AM Aug 05, 2022

স্টাফ রিপোর্টার: একজন যখন উপাচার্যের নিজস্ব চেম্বারে বসে কাজকর্ম করছেন, অন‌্যজন সেই সময় উপাচার্যেরই ভিজিটর্স লাউঞ্জে বসে হাই কোর্টের নির্দেশমতো নিজের দায়িত্বপালনে মগ্ন। বৃহস্পতিবার নজিরবিহীন এমনই ঘটনার সাক্ষী হলেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি (MAKAUT)-এর আধিকারিক ও কর্মীরা। একইদিনে বিশ্ববিদ‌্যালয়ে দুই উপাচার্যকে কর্মরত অবস্থায় দেখে কিংকর্তব‌্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন তাঁরা! বেনজির এই ঘটনায় শাঁখের করাতের অবস্থা বিশ্ববিদ‌্যালয়ের কর্মীদের। কে আসলে উপাচার্য, কে নয়– তা বুঝতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের। ফলে, সপ্তাহের মাঝখানে কার্যত অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ববিদ‌্যালয়ের হরিণঘাটা ক‌্যাম্পাসে। পরে অবশ‌্য হাই কোর্টের নির্দেশ সরকারিভাবে হাতে আসার পর পুরনো উপাচার্যের হাতে দায়িত্ব তুলে দিয়ে ক‌্যাম্পাস ছাড়েন তাঁর পূর্বসূরি।

Advertisement

প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুলাই আচমকাই ম্যাকাউট-এর উপাচার্য সৈকত মৈত্রকে অপসারণের নোটিস দেয় রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর। সেই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সৈকত। তাঁর দাবি, মেয়াদ শেষের আগেই ম্যাকাউটের উপাচার্যের পদ থেকে তাঁকে অপসারণ করা হয়েছে। কী কারণে তাঁকে পদ থেকে সরানো হচ্ছে, তা জানতে চেয়েছিলেন উপাচার্য। কিন্তু সদুত্তর মেলেনি। তাঁর প্রশ্ন ছিল, এভাবে রাতারাতি কি নোটিস দিয়ে উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া যায়? রাজ্যের তরফে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট, ২০০০-এর উল্লেখ করে জানানো হয়, উপাচার্যের ২ বছরের বেশি মেয়াদ থাকে না। সেই নিয়ম মেনে তাঁকে সরানো হয়েছে বলে দাবি রাজ্যের।

[আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ছবি কেতুগ্রামে, রাস্তা মেরামতির দাবিতে পোস্টার হাতে অবরোধ স্কুলপড়ুয়াদের]

পালটা সৈকতবাবুর আইনজীবীরা বলেন, এরপর ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট, ২০১৭ এসেছে। যেখানে উপাচার্যদের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাহলে সৈকত মৈত্রের ক্ষেত্রে আলাদা নিয়ম হল কেন? বুধবার সওয়াল জবাব শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রাখে আদালত। বৃহস্পতিবার বিচারপতি কৌশিক চন্দ উপাচার্যের আবেদনকে মান্যতা দেন। রাজ্যের জারি করা সেই বিজ্ঞপ্তি খারিজ করার পাশাপাশি বিচারপতি কৌশিক চন্দ সৈকত মৈত্রকে পুনরায় উপাচার্য পদে পুনরায় বহাল করতে তিন সপ্তাহ সময় বেঁধে দেন। তবে সূত্রের খবর, সিঙ্গল বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যাচ্ছে রাজ্য। এদিকে, সেই সময় বিশ্ববিদ‌্যালয়ের হরিণঘাটা ক‌্যাম্পাসে বেনজির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সৈকত মৈত্রের পরিবর্তে মলয়েন্দু সাহাকে উপাচার্য নিয়োগ করেছিল রাজ‌্য সরকার। এদিন আদালতের রায়ের কপি নিয়ে বেলা দেড়টা নাগাদ সৈকত মৈত্র সটান চলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে।

গিয়ে দেখেন, উপাচার্যর ঘরের চেয়ারে দিব্যি বসে রয়েছেন মলয়েন্দু সাহা। তিনি হাই কোর্টের আদেশের কপি মলয়েন্দু সাহাকে দেখান। আদেশের কপি দেখার পরও মলয়েন্দু সাহা উপাচার্যের ঘরের চেয়ারেই বসে থাকেন। তিনি অবশ্য সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলতে রাজি হননি। তাকে জোরপূর্বক উপাচার্যের ঘর থেকে বার করে দেওয়ার পথে না গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটর্স লাউঞ্জেই কোর্টের নির্দেশমতো উপাচার্য হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম শুরু করে দেন সৈকত মৈত্র। দুই উপাচার্যকে দেখে তখন কী করবেন, বুঝতে পারছিলেন না কর্মীরা। বিকেল প্রায় পৌনে পাঁচটা নাগাদ উপাচার্যের ঘর থেকে বেরিয়ে মলয়েন্দু সাহা ভিসিটর্স লাউঞ্জে এসে উপাচার্য সৈকত মৈত্রের সঙ্গে সৌজন্যসাক্ষাৎ করেন। তাঁদের মধ্যে কিছুটা হালকা কথাবার্তা হয়। এরপরই মলয়েন্দু সাহা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বেরিয়ে যান।

সৈকত মৈত্র বলেন, ‘‘নতুন যাঁকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল, আমি তাঁকে কোর্টের রায়ের অর্ডারের কপি দেখাই। তা সত্ত্বেও উনি গোঁ ধরে চেয়ার দখল করে ছিলেন। আমি ভদ্রলোক। আমি তো আর কাউকে গায়ের জোরে ঘর থেকে বার করে দিতে পারি না।’’

[আরও পড়ুন: লক্ষ্য অরিজিৎ সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ, মধ্যমগ্রাম থেকে হেঁটে জিয়াগঞ্জ পৌঁছলেন যুবক!]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement