গৌতম ব্রহ্ম: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে 'বিষাক্ত' স্যালাইন কাণ্ডে জোড়া তদন্ত। স্বাস্থ্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রসূতি মৃত্যুর কারণ খুঁজে দেখবে সিআইডি। আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট দেবে তারা। 'বিষ' স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে জানালেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। ১৫ জন এক্সপার্ট কমিটির রিপোর্টে প্রসূতি মৃত্যুর নেপথ্যে চিকিৎসকদের গাফিলতির ইঙ্গিত রয়েছে। বিস্তারিত রিপোর্ট এলে কড়া ব্যবস্থা। স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী সাফ নির্দেশ, মৃত্যুকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত কাউকে রেয়াত করা হবে না। কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যু ও ৪ প্রসূতির গুরুতর অসুস্থতার ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। ঘটনার পরদিনই হাসপাতালে গিয়েছিল ১৫ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ বা এক্সপার্ট কমিটি। তারা স্বাস্থ্যভবনে রিপোর্ট জমা করে। এদিন সেই রিপোর্ট হাতে নিয়েই নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মনোজ পন্থ। পাশে ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, এক্সপার্ট কমিটির রিপোর্টে 'হিউম্যান এরর'- এর ইঙ্গিত মিলেছে। বিস্তারিত রিপোর্ট এলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মনোজ পন্থ জানিয়েছেন, নিয়ম বলছে, একজন সিনিয়র চিকিৎসকের নেতৃত্বে জুনিয়র ডাক্তাররা অপারেশন করেন। কিন্তু সেদিন সিনিয়র ডাক্তার অনুপস্থিত ছিলেন বলে খবর। এবিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারও গাফিলতি ধরা পড়লে বরদাস্ত করা হবে না সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যসচিব।
এদিন এক্সপার্ট কমিটির রিপোর্ট নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন ১০ জন স্বাস্থ্য কর্তা ও ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। সেই বৈঠকে মমতার স্পষ্ট নির্দেশ, মৃত্য়ুর নেপথ্যে কারও গাফিলতি থাকলে বরদাস্ত করা হবে না। অভিযোগ উঠছে, স্যালাইনে বিষক্রিয়া থেকেই মৃত্যু। ১৪ দিন পর পরীক্ষা রিপোর্ট এলে তা স্পষ্ট হবে। তবে অন্যান্য ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রিঙ্গার ল্যাকটেট ব্যবহারের উপর আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে একটি বিষয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যালের এই মর্মান্তিক ঘটনার ঠিক আগের দিন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল রিঙ্গার ল্যাকটেট। কেন আচমকা এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়? প্রশ্নের জবাবে মুখ্যসচিব জানান, ওষুধ বা স্যালাইন ব্যবহারের ছাড়পত্র পেতে হলে একাধিক পরীক্ষায় পাশ করতে হয়। এক্ষেত্রে এনএবিএলের একটি পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি সেটা। তাই উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।