shono
Advertisement

২০১৭’র টেটে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নম্বর প্রকাশ পর্ষদের, ২০১৪’র নম্বরও জানা যাবে চলতি সপ্তাহে

টেট ২০১৪ তে ৮২ পাওয়া প্রার্থীদের নিয়ে চুপ কেন পর্ষদ? প্রশ্ন তুলে আদালতে গেল চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।
Posted: 08:44 AM Nov 08, 2022Updated: 04:59 PM Nov 08, 2022

স্টাফ রিপোর্টার: ২০১৭ সালের প্রাথমিক টেট (TET) উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নম্বর প্রকাশ করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (West Bengal Board of Primary Education)। সোমবারই পর্ষদের ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেওয়া হয়েছে উত্তীর্ণ সকল প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই প্রকাশ করে দেওয়া হবে ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ সকল প্রার্থীর নম্বর। সোমবার ঘোষণা করলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। বলেন, ‘‘মোট ১৫০ নম্বরের পরীক্ষায় প্রার্থী কত নম্বর পেয়েছে, আমরা সেটা দিয়ে দেব। ২০১৭ সালের টেট-এ উত্তীর্ণদের নম্বর আজই প্রকাশ করে দেওয়া চেষ্টা করছি। আশা করছি, ২০১৪ সালের ক্ষেত্রে এই সপ্তাহের মধ্যেই নম্বর জানিয়ে দিতে পারব। যদি কাজ শেষ করতে পারি, তার আগেও জানিয়ে দিতে পারি।’’ তবে, নম্বর জানিয়ে দিলেও, শংসাপত্র এখনই দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি। তাঁর কথায়, ‘‘কয়েকদিন দেরি হলেও পর্ষদ শংসাপত্র দেবে। তবে, তার জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকাবে না।’’

Advertisement

বিকেলে এই ঘোষণার পর সন্ধেতেই পর্ষদের ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণ সকল প্রার্থীর নম্বর প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে। নাম, রোল নম্বর, ক্যাটেগরি ও টেট-এ প্রাপ্ত নম্বর দেওয়া হয়েছে সেই তালিকায়। সেই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে আরও একটি ঘোষণা করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। বলা হয়েছে, গত ৩ নভেম্বর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে যে সকল প্রার্থী ২০১৭ সালের টেট-এ ৮২ নম্বর পেয়েছেন, তাঁদেরও টেট উত্তীর্ণ হিসাবে গণ্য করা হবে। সেই প্রার্থীদের তালিকা শীঘ্রই আলাদা করে প্রকাশ করা হবে। ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট-এ অংশগ্রহণ করেছিলেন প্রায় ২০ লক্ষ পরীক্ষার্থী। উত্তীর্ণ হয়েছিলেন প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার প্রার্থী। ২০১৭ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতামান নির্ণায়ক টেট-এ অংশগ্রহণ করেছিলেন ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫১৪ জন। উত্তীর্ণ হন ৯ হাজার ৮৯৬ জন। হাই কোর্টের নির্দেশে ৮২ নম্বর পাওয়া প্রার্থীদেরও উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই এই সংখ্যা আরও বাড়তে চলেছে। এই দু’টি পরীক্ষাতেই অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছেন, এমন বেশ কিছু প্রার্থী সম্প্রতি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁদের আবেদন, তাঁরা দু’টি টেট-এই উত্তীর্ণ।

[আরও পড়ুন: বাড়ির সামনে অনুগামীদের ভিড়, দলীয় কর্মীদের আনা কেক কেটে হিরোর মতো জন্মদিন পালন অভিষেকের]

বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ১১ হাজার ৭৬৫ শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। টেট-এ প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নম্বর দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে দু’টি টেট-এ উত্তীর্ণ হলেও কোনটিতে বেশি নম্বর পেয়েছেন, তা জানতে পারলে সেই টেট-এর ভিত্তিতেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে পারবেন তাঁরা। তাই টেট-এ প্রাপ্ত নম্বর জানতে চান ওই প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি যথার্থ বলে মত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের। এদিন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ‘‘এনসিটিই-র নিয়ম অনুযায়ী, শংসাপত্রে নম্বর দেওয়া থাকে। প্রার্থীদের দাবি যথার্থ। কারণ, টেট-এর প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কত নম্বর পাবেন তা নির্ভর করছে।’’

সেই প্রেক্ষিতেই সোমবার পর্ষদ ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের টেট-এ উত্তীর্ণ প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশের সময়সীমা জানানো হল। পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছেন, ১১ হাজার ৭৬৫টি শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য আবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন আগামী ১৪ নভেম্বর। সেই তারিখের পরে নম্বর প্রকাশ করা অর্থহীন। সে কারণেই যত দ্রুত সম্ভব দু’টি টেট-এর নম্বর প্রকাশের চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে ২০২২, নম্বর জানাতে প্রায় সাত বছর বিলম্ব কেন?

[আরও পড়ুন: সিবিআই তদন্তের মাঝেই ইডি দপ্তরে হাজিরা পরেশ অধিকারীর, সাড়ে ৪ ঘণ্টা চলল জিজ্ঞাসাবাদ]

সে প্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ‘‘পর্ষদের কাছে ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণদের নম্বর আছে। তা আজই প্রকাশ করতে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু, ২০১৪ সালের টেট-এ প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। সেখানে কিছু সমস্যা থেকে গিয়েছে। ২০১৪ সালের ক্ষেত্রে অনেক প্রার্থী প্রশ্নভুলের কারণে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন। প্রশ্নভুলের কারণে তাঁদের ৬ নম্বর দেওয়া হোক বলে আবেদন জানিয়েছিলেন। হাই কোর্টের নির্দেশে পর্ষদ মামলাকারীদের ৬ নম্বর বাড়িয়ে তাঁদের উত্তীর্ণ বলে ঘোষণা করেছে। নম্বর বাড়ার পর তাদের রেজাল্টটা আপডেট করার কাজটা চলছে।’’

এদিকে টেট ২০১৭ তে ৮২ পাওয়া সংরক্ষিত বিভাগের (রিজার্ভ ক্যাটাগরি) প্রার্থীদের পর্ষদের তরফে টেট উত্তীর্ণ বলে গণ্য করা হলেও, ২০১৪ নিয়ে এখনও কেন চুপ প্রাথমিক পর্ষদ ? প্রশ্ন তুলে আদালতে আবেদন করলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। গত ৩ রা নভেম্বর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, ২০১৪ এবং ২০১৭ র টেটে সংরক্ষিত বিভাগের যে প্রার্থীরা ৮২ পেয়েছেন তাদের টেট উত্তীর্ণ হিসাবে গন্য করতে হবে এবং ২০২২ এর প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহনের সুযোগ দিতে হবে। এর ফলে পর্ষদ দ্বারা ঘোষিত লক্ষাধিক “টেট অনুত্তীর্ণ” প্রার্থী ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহন করতে পারবেন।

[আরও পড়ুন: ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রায় বিপত্তি, রাহুলের পাশে হাঁটতে হাঁটতে মৃত্যু কংগ্রেস নেতার়়]

সেই নির্দেশ মোতাবেক গতকাল ২০১৭ র টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নম্বর প্রকাশ করে পর্ষদ। ৮২ পাওয়া সংরক্ষিত বিভাগের প্রার্থীদের উত্তীর্ণ হিসাবে মান্যতা দেয়। ৮২ পাওয়া প্রার্থীদের তালিকা খুব দ্রুত প্রকাশ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য, ২০১৪ নিয়ে এখনও পর্ষদ কোন বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। সেই কারণেই ফের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement