সুদীপ রায়চৌধুরী: রাজ্যজুড়ে চলছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবির সংশোধন। সংশোধনের মূল কারণ ভোটার তালিকায় 'ভুত' খুঁজে বের করা। এবার সেই কাজে বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে রাজ্যে আসছেন পাঁচ আধিকারিক। কমিশনের নির্দেশে এসআইআরের কাজের শেষ দিন পর্যন্ত রাজ্যে থাকবেন তাঁরা। তাহলে কি এসআইআর প্রক্রিয়ার পরেও তালিকায় থেকে যাচ্ছে 'ভুত', প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।
জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের এসআইআর প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রের মুঠো আরও শক্ত করতে চলেছে কমিশন। সেই উদ্দেশে রাজ্যে আসছেন পাঁচ বিশেষ পর্যবেক্ষক। পাঁচ আধিকারিকই যুগ্ম সচিব পর্যায়ের আইএএস আধিকারিক। তাঁরা এখানে এসে বিভিন্ন ডিভিশনের দায়িত্ব নেবেন। কয়েকটি জেলা নিয়ে তৈরি হবে একটি করে ডিভিশন। এই পাঁচ আধিকারিককে স্পেশাল রোল অবজারভার বলছে কমিশন। কমিশন জানিয়েছে এই বিশেষ আধিকারিকরা গণনা, নোটিস এবং চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ এই প্রতিটি পর্যায়ে কড়া নজরদারি চালাবেন তাঁরা।
কমিশন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্সি ডিভিশনের দায়িত্বে থাকবেন প্রতিরক্ষা দপ্তরের যুগ্ম সচিব কুমার রবিকান্ত সিং। মেদিনীপুর ডিভিশনের দায়িত্ব নেবেন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের যুগ্ম সচিব নিরজ কুমার বনসোড়। বর্ধমান ডিভিশনের দায়িত্বে থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার দপ্তরের যুগ্ম সচিব কৃষ্ণ কুমার নিরালা। অন্যদিকে, মালদা ডিভিশনের দায়িত্ব নেবেন অর্থ দপ্তরের যুগ্ম সচিব অলক তিওয়ারি। জলপাইগুড়ি ডিভিশনের দায়িত্বে থাকবেন গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের যুগ্ম সচিব পঙ্কজ যাদব।
এই আধিকারিকদেরকে পাঠানো চিঠিতে কমিশন জানিয়েছে, তাঁদের মূল দায়িত্ব হবে যাতে কোনও যোগ্য ব্যক্তির নাম তালিকা থেকে বাদ না যায় তা দেখা। পাশাপাশি, নোটিশ দেওয়া, শুনানি সঠিকভাবে করানো এবং সর্বশেষ তালিকা প্রকাশ পর্যন্ত সব কাজে নজর থাকবে তাঁদের। কমিশন জানিয়েছে, এসআইআরের কাজের শেষ দিন পর্যন্ত বাংলায় থাকবেন এই পাঁচ আধিকারিক।
এসআইআর নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসআইআরের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এসআইআরের মাঝে একাধিক আবেদন, অভিযোগ নিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিকাঠামো ছাড়া দ্রুততার সঙ্গে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজ করাটা বিএলও-দের জন্য পাহাড়প্রমাণ চাপের, বারবার একথা উল্লেখ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। গত মাসের শেষে তৃণমূলের তরফে ১০ সদস্যের একটি টিম দেখা করে কমিশনের সঙ্গে।
অন্যদিকে, কিছু মাস আগেই চার আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ইস্যুতে সপ্তমে নবান্ন বনাম কমিশন সংঘাত। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে দিল্লিতে ডেকে 'প্রবল চাপ' দেয় জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্তকরণে কারচুপির অভিযোগ ওঠে ৪ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। তাঁরা হলেন বারুইপুর পূর্ব (১৩৭) বিধানসভা কেন্দ্রের ইআরও দেবোত্তম দত্ত চৌধুরী, সহকারী এইআরও তথাগত মণ্ডল, ময়নার ইআরও বিপ্লব সরকার, এইআরও সুদীপ্ত দাস এবং ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সুরজিৎ হালদার। এই ৪ আধিকারিককে সাসপেন্ড করে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।
