স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশের ভূমিকম্পে কলকাতায় কোনও ক্ষতি হয়নি ঠিকই। কিন্তু পুরসভা কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। শতাব্দীপ্রাচীন হগ মার্কেটকে রক্ষা করতে 'সিসমিক বার' বসানোর তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল। চলতি সপ্তাহেই পুর ইঞ্জিনিয়াররা নিউ মার্কেট তল্লাট জরিপ করবেন। ভূমিকম্প প্রতিরোধের 'সিসমিক বার' বসানোর জন্যও দ্রুত কাজ শুরু হবে। কাজ শুরুর জন্য ডিপিআরও (ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট) তৈরি করেছে পুরসভা। বিদেশের সিঙ্গাপুর, জাপান বা ভারতের মুম্বইয়ে পুরনো সরকারি-বেসরকারি বহুতলকে ভূমিকম্প থেকে রক্ষা করতে 'সিসমিক বার' বসানো হয়। ভূমিকম্প হলে তার অভিযাত তাৎক্ষণিক গ্রহণ করে 'সিসমিক বার'।
বহুকাল আগে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন কলকাতা ভূমিকম্প প্রবণ। বিভিন্ন সময়ে কলকাতা পুরসভা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকদের দিয়ে নিউ মার্কেটের অবস্থা পরীক্ষা করিয়েছিলেন। বাজার বিভাগের মেয়ার পারষদ আমিরউদ্দিন ববি বলেছেন, "মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে দ্রুত পুর কমিশনার সুমিত গুপ্তার সঙ্গে এই বিষয়ে দ্রুত আলোচনায় বসব।" পুর বাজার বিভাগের কর্তাদের কথায়, নিউ মার্কেটের প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো এই বাজার এক সময়ে দেশের প্রথম সারির মার্কেট হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল। এখনও দেশ-বিদেশের পর্যটকরা শুধুমাত্র দ্রষ্টব্য স্থান হিসাবে নিউ মার্কেটে আসেন। স্বাভাবিকভাবেই নিউ মার্কেটকে রক্ষা করার জন্য হেরিটেজ কমিটিও তৎপর। এরপরেই পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর নিউ মার্কেটে 'সিসমিক বার' বসানোর জন্য অর্থ বরাদ্দ করে। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশেই দ্রুত কাজ শুরু করতে উদ্যোগী পুরসভা।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূপদার্থ ও সিভিল বিভাগের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকদের পরামর্শে মাটির তলা দিয়ে ভূমিকম্প প্রতিরোধী তার যাবে। নিউ মার্কেটের সামনের রাস্তার দু'পাশ দিয়ে মাটি খুঁড়ে তার বসানো হবে। নিউ মার্কেটের প্রতিটি দোকানের কলামকে জুড়ে দেওয়া হবে। এইভাবেই কাজ হওয়ার কথা। কিন্তু কাজ শুরুর সময় কয়েকটি দোকানকে বন্ধ রাখতে হতে পারে। নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ শুরু হবে বলে পুরসভার এক কর্তা জানিয়েছেন। ১৮৭৪ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্তা এস এস হগ এই মার্কেটের পত্তন করেন। ১৫০ বছর আগে পুরসভা প্রথম এই বাজারকে অধিগ্রহন করে। প্রায় তিন হাজার ব্যবসায়ী রয়েছেন এই বাজারে।
