সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নয়া ভূমিকায় অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। কীভাবে জনসংযোগ করবে তৃণমূল, কীভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে দলীয় নেতৃত্ব, তা কার্যত হাতেকলমে শিখিয়ে দিলেন ‘স্যর’ অভিষেক। জনসংযোগের রূপরেখা এঁকে দিলেন তিনি। জানিয়ে দিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কর্মসূচি কীভাবে পৌঁছে দেওয়া হবে আমজনতার কাছে।
মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ (Didir Suraksha kabach) কর্মসূচির উদ্বোধন হয়। তারপরই হাতেকলমে সেই কর্মসূচি শিখিয়ে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। কীভাবে চলবে এই কর্মসূচি? অভিষেক জানিয়েছেন, কর্মসূচির দু’টি পর্যায় রয়েছে। এক, অঞ্চলে বা নগরে একদিন এবং দুই, দিদির দূত। গোটা প্রক্রিয়াটা পরিচালনা করবেন ৩২০ নেতা ও সাড়ে ৩ লক্ষ কর্মী। কর্মসূচি চলবে ১০-২৮ জানুয়ারি।
[আরও পড়ুন: ‘দিদিকে বলো’র পর ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’, পঞ্চায়েত ভোটের আগে নয়া কর্মসূচি তৃণমূলের]
রইল বিস্তারিত কর্মসূচি
অঞ্চলে বা নগরে একদিন: রাজ্যসভা-লোকসভার সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, জেলা সভাপতি-সহ মোট ৩২০ জন নেতা যাবেন ৩ হাজার ৩৪৭ অঞ্চলে। প্রতি অঞ্চলে যাবেন একজন নেতা। এক-একজনকে অন্তত ১০ দিন করে এই কর্মসূচি পালন করতে হবে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হবে কর্মসূচি। জনসংযোগ সভা করে স্থানীয় মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনবেন দলীয় নেতৃত্ব। তারপর এলাকার কোনও গণমান্য ব্য়ক্তির সঙ্গে কথা বলতে হবে ওই নেতাকে। এরপর দলের কোনও কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ/নৈশভোজ সেরে রাত কাটাবেন ওই নেতা। একইসঙ্গে ওই অঞ্চলের সরকারি প্রতিষ্ঠানে সারপ্রাইজ ভিজিটও করবেন জনপ্রতিনিধিরা। কে কবে কোন অঞ্চলে যাবেন, তা ঠিক করে দেবে দল। তবে কোন দিন সরকারি প্রতিষ্ঠানে সারপ্রাইজ ভিজিট করবেন, তা ঠিক করবেন ওই জনপ্রতিনিধি। তবে এই মধ্য়াহ্নভোজ বা নৈশভোজ মানে এলাহি ভোজ নয়, গ্রামে গ্রামে ছোট মাছ পাওয়া যায়, সতর্ক করে দিয়েছেন খোদ তৃণমূলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
দিদির দূত: নগরে একদিন কর্মসূচির পরদিন থেকেই ওই এলাকায় যাবেন ‘দিদির দূত’রা। এক-একটা দলে থাকবেন ৫ জন। প্রত্যেকের হাতে থাকবে দলের নির্দিষ্ট ব্যান্ড ও বুকে থাকবে ব্য়াজ। বাংলার ১০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে হবে সকলকে। প্রতিটি পরিবারকে সময় দিতে হবে আধঘণ্টা। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তাঁরা মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনবেন। হাতে তুলে দেবেন ‘দিদির চিঠি’। প্রতিটি বাড়িতে কে কোন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন, তা জানতে হবে। আবার কারা কোন প্রকল্পের জন্য় যোগ্য় তাও জানতে এবং জানাতে হবে। কোনও অভিযোগ থাকলে তা ‘দিদির দূত’ অ্যাপে রেজিস্ট্রার করতে হবে। বাড়ির প্রতিটি সদস্যের ফোনে কিউআর কোড স্ক্যান করে ডাউনলোড করে দিতে হবে অ্য়াপটি। দিতে হবে দলের ক্যালেন্ডার। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হলে বাড়ির দরজায় দলের দেওয়া স্টিকার লাগিয়ে দিয়ে আসতে হবে।
[আরও পড়ুন: ‘রামনামে ভয় কেন? তৃণমূল কী ভূত?’, ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান বিতর্কে কটাক্ষ দিলীপের]
এদিন দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে অভিষেক স্পষ্ট বার্তা, “চাকরি করুন। তারপর দিনে ২ ঘণ্টা সময় দিন দলকে। দিদির দূতেরা যাবেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের প্রতিনিধি, প্রতিভূ হয়ে। তাই আরও বিনম্র, বিনয়ী হতে হবে। ধৈর্য রাখতে হবে অপরিসীম।” ৩ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবকের জন্য় ১০ দিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে দল। শুধু পঞ্চায়েত এলাকার জন্য, ভবিষ্যতে এই কর্মসূচি পুরসভা এলাকাতেও এই কর্মসূচি ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সবমিলিয়ে এদিনে দলে কার্যত ‘স্যর’-এর ভূমিকা পালন করলেন অভিষেক।