shono
Advertisement

কাগজ দিয়েই তৈরি দুর্গা, করোনা আবহে তাক লাগাল ৯ বছরের আয়ুষের সৃষ্টি

আয়ুষের ছোট্ট হাতের ছোঁয়ায় তৈরি দুর্গার সমাদরে বেজায় খুশি তার বাবা-মা।
Posted: 08:12 PM Oct 11, 2020Updated: 11:16 AM Oct 12, 2020

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা (Coronavirus) আবহে বদলে গিয়েছে গোটা জগৎ। স্কুল, খেলার মাঠ ভুলে বাড়ির কোণেই বাস খুদেদের। তাই বাড়ছে স্মার্টফোনের ব্যবহার। অনলাইন ক্লাস আর কার্টুনের দুনিয়ায় মজে রয়েছে তারা। সকলে কী তাই করে? সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই যে ব্যতিক্রমের ছোঁয়া রয়েছে, তা ভুললে চলবে না। ঠিক যেমন আর পাঁচটা শিশুর মতো নিজের মস্তিষ্ক আর হাতকে স্মার্টফোনের স্ক্রিনে ব্যস্ত রাখেনি বাগবাজারের আয়ুষ নন্দী (Ayush Nandi)। দমবন্ধ করা করোনা আবহে সে ডুব দিয়েছে শিল্পকলায়। শিফন সুতো, কাগজ, আঠা, কিছু স্টোন আর পাশের বাড়ির কাকুর কেনা নতুন ফ্রিজের বোর্ড দিয়েই অপরূপ দুর্গাপ্রতিমা বানিয়ে ফেলেছে বছর নয়েকের আয়ুষ।

Advertisement

আয়ুষের তৈরি কাগজের দুর্গা

আয়ুষের বাবা নারায়ণ নন্দী কর্মসূত্রে শিল্প নির্দেশনার সঙ্গে যুক্ত। সেই সূত্রে বাড়িতে শিল্পকলার কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী থাকতই। আর আয়ুষের মন পড়ে থাকত বাবার কাজের ঘরের দিকে। ছোটবেলা থেকেই মাটির ছোট মূর্তি, কাগজের টুকরো জুড়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করত সে। সেসব দেখে নারায়ণবাবুও ছেলেকে উৎসাহ দিতেন। মাসখানেক আগে আয়ুষ বাবার কাছে বায়না ধরে তাকে শিফন সুতো, হ্যান্ড মেড পেপার, কিছু স্টোন ও খবরের কাগজ এনে দিতে হবে। জিজ্ঞাসা করলে বলে সে একটি দুর্গা ঠাকুর বানাবে‌। নারায়ণবাবু সে সব এনে হাজির করতেই কাজে লেগে পড়ে আয়ুষ। ঠাকুরের চালচিত্র তৈরির জন্য পাশের বাড়ির কাকুর নতুন কেনা ফ্রিজের বোর্ডগুলি চেয়ে নেয়। আর দিন কয়েকের মধ্যেই সেসব দিয়ে সে বানিয়ে ফেলে অপরূপ একটি দুর্গা প্রতিমা। ছেলের বানানো সেই দুর্গা প্রতিমা দেখে মোহিত হয়ে যান নারায়ণবাবু। এরপর ওই দুর্গা প্রতিমার একটি ভিডিও তিনি ফেসবুকে দেন। যে ভিডিওটির শেষে আয়ুষকে বলতে দেখা যায়, “আমার এই দুর্গা ঠাকুরটি যদি কেউ দেখতে আসে খুব ভাল লাগবে।”

আয়ুষ নন্দী

[আরও পড়ুন: করোনা সংকটে ছেদ পড়ল ৩০০ বছরের পরম্পরায়, এবার দুর্গাপুজো হবে না গোবরডাঙা জমিদার বাড়িতে]

সম্প্রতি আয়ুষের ওই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social media) দেখতে পান রাজপুর কালীতলার বাসিন্দা তমাল পাহাড়ি। “আমার এই দুর্গা ঠাকুরটি যদি কেউ দেখতে আসে আমার খুব ভাল লাগবে”, ভিডিওয় আয়ুষের বলা এই কথাই যেন বিদ্যুতের ঝিলিক লাগায় তাঁর শরীরে। সত্যিই কেউ কী স্বাদ পাবে না আয়ুশের সৃষ্টির, সেই প্রশ্নই মাথাচাড়া দেয় তমালবাবুর মনেও। তিনিই উদ্যোগ নেন। স্থির করেন আমজাদ হাবিব ব্র্যান্ডের ফ্রাঞ্চাইজি নেওয়া স্যালনে রাখা থাকবে খুদের সৃষ্টি। আয়ুষের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনিও প্রায় এক বাক্যেই রাজি হয়ে যান। ব্যস! যেমন ভাবনা তেমন কাজ। রবিবারই খুদের সৃষ্টিকে সমাদরে নিজের স্যালনে স্থান দেন তমালবাবু।

তমাল পাহাড়ির সঙ্গে ছোট্ট আয়ুষ

গুণীকে স্বীকৃতি দিতেও ভোলেননি তিনি। ধুতি, পাঞ্জাবি আর সঙ্গে শঙ্কু সমগ্র উপহার দেন আয়ুষকে। বাঙালি এমন ভাল দিনে মিষ্টিমুখ করবে না, তা তো হতেই পারে না। তাই মিষ্টিমুখেরও আয়োজন করেন। সঙ্গে আয়ুষকে দেওয়া হয়েছে একটি শংসাপত্র। যা আগামী দিনে চলার পথে আয়ুষকে অনুপ্রেরণা জোগাবে। ছোট্ট হাতের ছোঁয়ায় তৈরি দুর্গা প্রতিমার (Durga Puja 2020) সমাদরে বেজায় খুশি তার বাবা-মা।

পরিজনদের সঙ্গে আয়ুষ

আয়ুষের তৈরি হাতের প্রতিমা দেখতে চাইলে আপনাকে বেলঘরিয়ায় (Belgharia) ওই স্যালনে ঢুঁ মারতেই হবে। তবে উপযুক্ত কোভিডবিধি মেনে বাইরে বেরতে ভুলবেন না।

[আরও পড়ুন: উৎসবের শহরে গ্রাম বাংলার ছোঁয়া, দমদমের এই বিখ্যাত পুজোয় তৈরি হচ্ছে ‘উমা বাটী’]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement