সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এখান থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে গ্রামটা। নাম শে। এককালে লাদাখের রাজাদের গ্রীষ্মকালীন আবাস ছিল এই গ্রামে। থাকার জন্য বিশাল প্রাসাদ তৈরি করেছিলেন তাঁরা। ১৬৫৫ খ্রিস্টাব্দে তৈরি লাদাখ রাজাদের সেই গ্রীষ্মকালীন রাজপ্রাসাদ আজও আছে। রয়েছে প্রাসাদের লাগোয়া সমসাময়িক বৌদ্ধ গুম্ফাটিও। লাদাখের সবচেয়ে বড় যে শাক্যমুনি বুদ্ধর মূর্তি, তাও রয়েছে এই গুম্ফায়। সবই দেখার জিনিস। যদিও লাদাখে বেড়াতে আসা পর্যটকরা শে গ্রামে এই প্রাসাদ বা গুম্ফা দেখতে আসেন না। আসেন ‘র্যাঞ্চোর স্কুল’ দেখতে। আর পর্যটকদের এই মনোভাবেই আপত্তি খোদ স্কুল কর্তৃপক্ষের!
[আরও পড়ুন: ২৮০০ কোটির সম্পত্তি, দুই সন্তানের কে কতটা পাচ্ছেন? মুখ খুললেন অমিতাভ]
‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমার বাবা রাঞ্চোড়দাস চাঁচড়কে মনে আছে নিশ্চয়ই। যাঁর আসল নাম ফুংশুক ওয়াংগড়ু। বন্ধুদের থেকে হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ার পর যাকে শেষমেশ খুঁজে পাওয়া গেল লাদাখের এক অভিনব স্কুলে। এই স্কুলই সেই স্কুল। যার আসল নাম দ্রুক পদ্মা কার্পো। স্থানীয়দের কাছে ওই নামেই পরিচিত স্কুলটি। মাত্র ১৮ বছর আগে তৈরি। তা হোক। তবু শিক্ষার মান, স্কুলের ভাবনা, বৌদ্ধ আদর্শ-সব মিলিয়ে এই স্কুলের সম্মান বেশ উঁচু দরের আশপাশের এলাকায়। আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা দেওয়া হয় এই স্কুলে। স্কুলের নামের মানে করলে দাঁড়ায় সাদা পদ্ম, বৌদ্ধ ধর্মে যার বিশেষ তাৎপর্য আছে। স্কুলের ক্যাম্পাসটি বৌদ্ধ মন্ডলের আদলে তৈরি।
[আরও পড়ুন: সেন্সর বোর্ডের সবুজ সংকেত, ‘গুমনামি’ বিরোধীদের কিস্তিমাত সৃজিতের]
দ্বাদশ গ্যালওয়াং দ্রুকপা এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা। পৃষ্ঠপোষক স্বয়ং দলাই লামা এবং হলিউড অভিনেতা রিচার্ড গেয়ার। অথচ এমন স্কুলের জনপ্রিয়তা তার গুণের জন্য নয়, ঐতিহ্যের জন্য নয়, স্রেফ বলিউডের একটি ছবিতে জায়গা পাওয়ার জন্য জনপ্রিয়। দেশ-বিদেশের সব পর্যটক এই স্কুল দেখতে আসেন ‘র্যাঞ্চোর স্কুল’ বলে। কেউ কেউ তো আমির খানকেই স্কুলের মালিক ভাবেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বলিউড তাঁদের যে জনপ্রিয়তা দিয়েছে, তাতে তাঁরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু, ঐতিহ্য ভুলে শুধু বলিউডের নামে তাঁরা পরিচিত হতে চান না। র্যাঞ্চোর স্কুল নয়, দ্রুক পদ্মা কার্পো নামেই পরিচিত হতে চান তাঁরা। থ্রি ইডিয়টস সিনেমায় র্যাঞ্চোর শত্রু চতুরকে স্কুলের দেওয়াল নোংরা করার জন্য ইলেকট্রিক শক দিয়ে সাজা দিয়েছিল এই স্কুলের ছাত্ররা। সেই দেওয়াল এখন পরিচিত ‘ইডিয়টিক ওয়াল’ নামে। তবে আসল দেওয়ালটি ২০১০-এর বাণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় স্কুলের বাইরে একই ধরনের একটি দেওয়াল বানিয়ে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেখানেই দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন পর্যটকরা।
The post ব়্যাঞ্চোর নামে আর পরিচিতি চায় না লাদাখের স্কুল appeared first on Sangbad Pratidin.