সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে বিদুৎ সরবরাহ নিয়ে আদানি সংস্থার সব চুক্তি বাতিল চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিস পাঠালেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। বুধবার রেজিস্ট্রার ডাকযোগে ব্যারিস্টার এম কাইয়ুম এই নোটিসটি পাঠান। প্রসঙ্গতঃ বিগত আওয়ামি লিগ সরকারের সময় করা ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তির আওতায় আদানি গোষ্ঠীর সংস্থা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দিচ্ছে। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে আদানির ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এই বিদ্যুৎ আসছে। তবে স্থানীয় বাজারের চেয়ে বেশি দামে আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। সম্প্রতি মোটা অঙ্কের বিল বকেয়া থাকায়, তা পরিশোধের জন্য বাংলাদেশকে চূড়ান্ত সময়সীমা দিয়েছেন ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানি। অন্যথায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে তাঁর সংস্থা।
বুধবার ব্যারিস্টার এম কাইয়ুমের নোটিসে অবিলম্বে অন্যায্য একতরফা চুক্তি পুনর্বিবেচনা অথবা পুরাটাই বাতিলের দাবি তোলা হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে আদানিকে এই ঘটনায় চুক্তি পুনর্বিবেচনার কার্যক্রম শুরু না করলে হাই কোর্টে রিট করবেন বলেও জানান আইনজীবী। জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে এই সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়ারও আবেদন রয়েছে নোটিসে। এই নোটিসের জবাব দিতে পিডিবির চেয়ারম্যান ও জ্বালানি মন্ত্রকের সচিবকে তিনদিন সময় বেঁধে দিয়েছেন আইনজীবী।
হাসিনা সরকারের শাসনকালে বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশে আদানির সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে ২০১৭ সালে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি হয়। ওই সময় দেশে আমদানি করা কয়লা নির্ভর কোনও বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়নি। এসব চুক্তির একটি ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে করা ২৫ বছর মেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি। ভারতের ঝাড়খণ্ডে আদানির ১৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় পর্যালোচনা কমিটির সভায় ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব তথ্য-উপাত্ত ও নথি কমিটিকে সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আদানি গ্রুপ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বাবদ পাওনা পরিশোধের চূড়ান্ত সময়সীমা নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে। বলা হয়েছে, সাতদিনের মধ্যে ৮০০-৮৫০ মিলিয়ন ডলারের বকেয়া পরিশোধের দাবি করেনি। বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যম সূত্রে খবর, আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫ কোটি ডলার ধার মেটানোর জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে সময়সীমা দেননি তারা। বকেয়া আদায়ের জন্য পিডিবির সঙ্গে আলোচনা চলছে। দুপক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আগ্রহী আদানি গোষ্ঠী।