রুপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও সুমন করাতি: সদস্য সংগ্রহের ব্যর্থতা থেকে গোষ্ঠীকোন্দল, বঙ্গ বিজেপির হাল নিয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা তথা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। হুগলিতে দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই লোকসভা ভোটে সেখানে হারতে হয়েছে প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। বঙ্গ বিজেপির কোন্দল নিয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য তথা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। প্রকাশ্যে দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বলে রাজ্য বিজেপি নেতাদের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন মহাগুরু।
গোটা বঙ্গ বিজেপিতে চরম কোন্দল চলছে। এক গোষ্ঠী, অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সরব। পাশাপাশি বাংলায় দলের সংগঠনও তলানিতে। নির্বাচনেও খারাপ ফল হচ্ছে। সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রাও 'ফেল' করেছে। পাণ্ডুয়ায় বিজেপির সক্রিয় সদস্যতা অভিযান কর্মসূচির এক বিশেষ বৈঠক শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ছিলেন বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্ব ও পদাধিকারীরা। কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল দলের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি ও সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা। কিন্তু সেই বৈঠকে গিয়েই দলের কাজকর্ম নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মহাগুরু। মিঠুন বলেন, "এখানে যতগুলো বিধানসভা আমি দেখেছি সবগুলোতেই জেতা আছে। কিন্তু আমরা জিততে পারিনি। এর একমাত্র কারণ নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। যেটা খুবই দুঃখের। যদি সবাই কাজ করত এখানে তা হলে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে হারতে হত না। এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বদ্ধ কাজ করেছে।"
এর পরই সদস্য সংগ্রহ অভিযানে দলের ব্যর্থতা নিয়ে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন মিঠুন। গত ২৭ অক্টোবর সল্টলেক ইজেডসিসি- তে রাজ্য বিজেপির সদস্য সংগ্রহের অভিযানের সূচনা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে বক্তা ছিলেন মিঠুনও। বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলায় সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লক্ষ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ৫১ হাজার সদস্য হয়েছে। সক্রিয় সদস্যের ক্ষেত্রেও অনেকটাই খামতি রয়েছে। সক্রিয় সদস্য সংগ্রহ করার কথা ছিল ৩০০০ সেখানে ৩৬৩ জন মোটে সক্রিয় সদস্য হয়েছেন। আর এই তথ্য দেখে ক্ষুব্ধ হন মহাগুরু। কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, "আমি বসের (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশে এসেছি। বসকে কী জবাব দেব?"
এর পরই ক্ষুব্ধ মহাগুরু কর্মীদের বলেন, "কী জোস দেখলাম। মালা পরানোর ধুম লেগে গেল। এর আগেও দেখেছি, ভাবলাম কিছু হবে। কিন্তু কিছু হয় না। আমাকে ডেকে আনবেন। আমি মুড়ি, গুড় খেয়ে প্রচার করব। আর তার রেজাল্ট হবে জিতে যাওয়া সিট হার। কী লজ্জা! আমি কথা দিয়েছিলাম তাই এসেছি। না হলে পার্টিকে সময় দিয়ে কী লাভ। আমি প্রধানমন্ত্রীকে কথা দিয়েছি। আমাকে কী, কী না অফার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আমার বিশ্বাস পার্টি শক্তিশালী হলে সব হবে।" এর পরই তাঁর হুঁশিয়ারি, "বস (প্রধানমন্ত্রী) আমাকে বলে রেখেছেন নো মার্সি। যারা কাজ করবে না তাদেরকে সরে যেতে হবে। এত জায়গায় ঘুরে এলাম, সব জায়গায় কি জিততে পেরেছি? না। কারণ, আমরা সব জায়গায় কাজই করতে পারিনি।"