সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: লকগেট মেরামতির ৩৬ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও স্বাভাবিক হল না দুর্গাপুরের জল পরিষেবা। তা নিয়ে মানুষের ক্ষোভ তুঙ্গে। রাস্তা অবরোধ। কাউন্সিলর বনাম বিজেপি নেতার ধস্তাধস্তি। শনিবার সকাল থেকেই জল নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের কাছে কার্যত প্রায় অসহায় প্রশাসন। দুর্গাপুর নগর নিগমের পক্ষ থেকে দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করার আশ্বাস দেওয়া হয়। অন্যদিকে ফের বিপত্তি দুর্গাপুর ব্যারেজে (Durgapur Barrage)। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো ৩০ ও সদ্য মেরামতি করা ৩১ নম্বর লকগেটে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফের ‘জলাতঙ্ক’ দুর্গাপুরে।
শুক্রবার রাত থেকেই ব্যারেজের ৩০ ও ৩১ নম্বর লকগেটে ফাটল দেখা দেয়। শনিবার সকালেই তা নজরে আসে সেচদপ্তরের কর্মীদের। বিপর্যয়ের সময় দামোদরের জল শুকোতে লকগেট খোলা হয়েছিল। সেই গেট ভাল করে না বসার ফলেই ফাটল। লকগেটের একদম নিচে পুরু রবারের বেল্ট নষ্ট হয়ে যাওয়ার জন্যেই ৩০ ও ৩১ নম্বর গেট দিয়ে জল বেরচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। জল বেরনোর ফলে জলাধারে জলও কমছে। যদিও শনিবার সকাল থেকেই ফাটল ধরা অংশে পাট ও বালি দিয়ে ভরাট করার চেষ্টা চালিয়েছে সেচ দপ্তরের কর্মীরা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দামোদর হেড ওয়ার্কসের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় সিং বলেন,“সামান্য ফাটল হয়েছে। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। দ্রুত মেরামতির কাজ চলছে।”
[আরও পড়ুন: ‘গরু ও কয়লা পাচারকারীদের হয়ে মুখ্যমন্ত্রী কান্নাকাটি করেন’, CBI তল্লাশি নিয়ে খোঁচা সায়ন্তনের]
এদিকে, নিউটাউনশিপ থানার বিধাননগর হাউসিং এলাকার বাসিন্দারা জল না পেয়ে রাস্তা অবরোধ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, সাত দিন পরেও সমস্ত জায়গায় পানীয় জল এলেও এই এলাকায় কেন আসেনি? দ্রুত পানীয় জল সরবারহের দাবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সামনের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভে নামেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে আসে পুলিশও। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীপঙ্কর লাহা ঘটনাস্থলে আসেন। অবরোধকারীদের বোঝাতে গেলে সেখানে হাজির হন বিজেপি নেতা দেবাশিস রায়। তিনিও অবরোধে শামিল হন। শুরু হয়ে যায় দু’পক্ষের বচসা।
“জল নিয়ে অযথা রাজনীতির করবেন না”, বলে বিজেপি নেতার সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি হয় কাউন্সিলরের। পরে অবশ্য এলাকা ছেড়ে চলেও যান ওই বিজেপি নেতা। প্রায় ৪৫ মিনিট পর পুলিশি আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। সিটি সেন্টারের নন-কোম্পানি এলাকায় দুর্গাপুর নগর নিগমের ওভারহেড ট্যাঙ্কের সামনে স্থানীয়রা জল সরবারহের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। যদিও পরে পুলিশের আশ্বাসে উঠে যায় বিক্ষোভ। এদিন সকালে দুর্গাপুরের বিভিন্ন জায়াগায় জল নিয়ে ক্ষোভ সাধারণ মানুষের তুঙ্গে ওঠে। দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্তি বলেন, “ জল না পেয়ে মানুষের ক্ষোভ স্বাভাবিক। শুকনো ক্যানেলে জল এসে তা পাম্প করে ও পরিস্রুত করে পাঠাতে পাঠাতে সময় লাগবেই। ধীরে ধীরে নিগমের প্রতিটি ওয়ার্ডেই জল পাঠানো হচ্ছে।”