রাহুল চক্রবর্তী: মমতাকে পাশে বসিয়ে জাতীয় স্তরে একসঙ্গে লড়াই করার বার্তা দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। অথচ প্রদেশ কংগ্রেস তোড়জোড় শুরু করেছে সিপিএমের সঙ্গে জোট করার। রাহুল গান্ধীর কাছ থেকে ছাড়পত্র মিলেছে বলে দাবি প্রদেশ নেতাদের। সিপিএমের সঙ্গে জোট সম্পর্ক এগোনোর কাজ শুরুও করে দিয়েছে। তবে বিধানসভা মডেলে লোকসভায় জোট নয়, এমনটা উঠে এসেছে দু’পক্ষ থেকে।
[দায়িত্ব নিয়েই বড় ঘোষণা প্রিয়াঙ্কার, উত্তরপ্রদেশে নয়া জোটসঙ্গী পেল কংগ্রেস]
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের যে জোট হয়েছিল, তা পরবর্তী সময়ে আর বজায় থাকেনি। বিধানসভা, লোকসভা, পুরসভার একাধিক উপনির্বাচনে সিপিএম ও কংগ্রেস আলাদাভাবে প্রার্থী দিয়েছে। তাতে দু’দলই রাজনৈতিক মানচিত্রে বিজেপির নিচে নেমে গিয়েছে। এই অবস্থায় লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম-কংগ্রেস জোট করতে আগ্রহী। রাহুল গান্ধীর ছাড়পত্র মেলার পর প্রদেশ নেতৃত্ব সিপিএম নেতাদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনাও শুরু করে দিয়েছেন। তবে কোন অঙ্কে জোট হবে, সেই প্রশ্নটাই ভাবাচ্ছে। সূত্রের খবর, ২০১৬ সালের বিধানসভা মডেলে লোকসভায় জোট হবে না। একাধিক কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, বিধায়সভায় একে কম আসন দেওয়া হয়েছিল। তারপর ছিল খারাপ আসন। তাই লোকসভায় সিপিএমের সঙ্গে সব অঙ্ক কষেই জোট করতে চান বাংলার কংগ্রেস নেতারা। প্রদেশ কংগ্রেসের দাবি, ৪২টির মধ্যে কমপক্ষে ১৪টি লোকসভা আসন। যদিও তা ছাড়তে রাজি নয় সিপিএম। বামফ্রন্টের নেতারা বলছেন, কংগ্রেসকে খুব বেশি হলে ১০টি আসন ছাড়া যেতে পারে। এদিকে, উত্তর কলকাতা আসনটিতে দলীয় প্রার্থী দিতে চায় কংগ্রেস।
[বিজেপিকে রুখতে ভোটের আগে জোট, বিরোধীদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত]
দু’দলের নেতাদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, লোকসভার যে আসনে যার সাংসদ রয়েছে, সেখানে সে দলই লড়বে। ২০১৪ সালে উত্তর-দক্ষিণ মালদহ, বহরমপুর এবং জঙ্গিপুর আসনে জিতেছিল কংগ্রেস। রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসনে জয় লাভ করে সিপিএম। জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে দীপা দাসমুন্সি প্রার্থী হতে ইচ্ছুক। কিন্তু ওই আসনে জেতা সাংসদ মহম্মদ সেলিমকে সরাতে রাজি নয় সিপিএম। ২০১৪ সালের নির্বাচনে কোন আসনে কে দ্বিতীয় স্থানে ছিল, সেই বিষয়টি নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গে সিপিএম, কংগ্রেসের তরফে এখন তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, কোন আসনে কে শক্তিশালী। প্রাথমিক আলোচনা শুরু হলেও এক টেবিলে বসার আগে দু’দলের নেতারাই সব অঙ্ক কষে নিচ্ছেন। বিধানসভায় জোট হলেও একাধিক আসনে বাম ও কংগ্রেস পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়। সেই অবস্থা কাটানোর জন্য এবার আগেভাগে দলের মধ্যে আলোচনা করে নিচ্ছেন দু’দলের নেতারা। জানা গিয়েছে, এ মাসেই লক্ষ্মণ শেঠ কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। কিন্তু তাঁকে লোকসভায় প্রার্থী করা হলে, সমর্থন দেওয়া হবে না, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সিপিএম। ফলত, জোট না হলে একক প্রার্থীও তৈরি রাখছে বাম ও কংগ্রেস। আগামী ২১ তারিখ ৪২টি আসনের প্রার্থী তালিকা নিয়ে বৈঠকে বসছে কংগ্রেস। সেখানেই ঠিক হবে সিপিএমের সঙ্গে লোকসভায় কতগুলি আসনে ‘হাত’ ধরা হবে।