সুকুমার সরকার, ঢাকা: রহস্যমৃত্যু বাংলাদেশের বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সাদি মহম্মদের। বুধবার তাঁর নিজের বাসভবন থেকেই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, আত্মঘাতী হয়েছেন শিল্পী। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ঢাকায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। সাদি মহম্মদের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া সঙ্গীত মহলে।
ঢাকার মহম্মদপুরে থাকতেন সাদি মহম্মদ। পরিবার সূত্রে খবর, গত বছরের জুলাই মাসে মাকে হারিয়েছিলেন তিনি। সেই শোক সামলাতে পারেননি তিনি। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন। শিল্পীর ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ জানিয়েছেন, বুধবার ঘরে তানপুরা নিয়ে সঙ্গীত চর্চা করছিলেন সাদি। সন্ধ্যার পর হঠাৎ ঘরের দরজা বন্ধ দেখেন তিনি। অনেকবার ডাকাডাকির পর কোনও সাড়া না পেয়ে দরজা ভাঙা হয়। তার পর তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
[আরও পড়ুন: একমুঠো খাবারের জন্য হাহাকার গাজায়, রমজান মাসে বিপুল পরিমাণ ত্রাণ পাঠাল বাংলাদেশ]
এই ঘটনা প্রসঙ্গে মহম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তোফাজ্জল হোসেন সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, বাড়িতে যে ঘরে বসে সাদি মহম্মদ গান করতেন, সেখানেই তার ঝুলন্ত দেহ পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। জানা গিয়েছে, ময়নাতদন্তের জন্য শিল্পীর মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। পরীক্ষার পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মহম্মদপুর জামে মসজিদে সাদি মহম্মদ দেহ সমাধিস্ত করা হবে।
সাদি মহম্মদ রবীন্দ্রসঙ্গীতের উপরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। ২০০৭ সালে ‘আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে’অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তার ‘শ্রাবণ আকাশে’ও ২০১২ সালে তার ‘সার্থক জনম আমার’অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। এছাড়া ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদর শক্তি তাঁর বাবা সলিমউল্লাহকে হত্যা করে। তার বাবার নামে ঢাকার মহম্মদপুরের সলিমউল্লাহ রোডের নামকরণ করা হয়েছে।