সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোনও নারী সংসর্গ পায়নি সে। কেউই তার সঙ্গে শারীরিক মিলন করতে রাজি হয়নি। আর এই প্রত্যাখ্যানই তার মধ্যে সৃষ্টি করেছে ক্ষোভের। সেই ক্ষোভের মাত্রা এতই তীব্র যে শেষ পর্যন্ত ৩ হাজার মহিলাকে হত্যার চক্রান্তও করে ফেলেছিল আমেরিকার (US) ওহায়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের (Ohio University) বছর বাইশের পড়ুয়া। ট্রেস গেঙ্কো নামের সেই অভিযুক্ত এবার বড়সড় শাস্তির মুখে। মনে করা হচ্ছে, তাকে হয়তো যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মুখেই পড়তে হবে।
২০২১ সালের জুলাই মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল গেঙ্কোকে। সেই থেকেই হাজতবাস করছে সে। এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, সে একজন স্বঘোষিত ‘ইনসেল’। অর্থাৎ এমন এক অনলাইন সম্প্রদায়ের সদস্য, যারা বয়সে তরুণ কিন্তু মহিলাদের যৌনগত ভাবে আকর্ষণ করতে অক্ষম। আর সেই কারণেই তারা যৌনতার স্বাদ পাওয়া নারী-পুরুষের প্রতি তারা হিংসায় ভোগে।
[আরও পড়ুন: দু’দিন ধরে গণধর্ষণ যুবতীকে, গোপনাঙ্গে লোহার রড ঢুকিয়ে অত্যাচার, নির্ভয়ার ছায়া গাজিয়াবাদে]
২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত এক অনলাইন গ্রুপ চালাত গেঙ্কো। সেই সময় গ্রুপের বাকিদের সঙ্গে নারীদের উপরে হামলার নানা ছক নিয়ে আলোচনা চালাত সে। এবং সেজন্য রীতিমতো সামরিক প্রশিক্ষণও নিয়েছিল অভিযুক্ত তরুণ। জর্জিয়ার এক সেনা প্রশিক্ষণ শিবিরের সদস্য হয়েছিল সে। এরপরই ওহিয়োর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে সে ভরতি হয়। এই সময় থেকেই মহিলাদের গণহত্যা করার ছক কষতে শুরু করে গেঙ্কো। তবে পুলিশ এটা জানায়নি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত সে।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, ইন্টারনেট তন্নতন্ন করে একসঙ্গে অসংখ্য মহিলাকে কীভাবে খুন করা যায় তা খুঁজে বেড়াত গেঙ্কো। এরপর সে তৈরি করে ফেলে তাদের ‘ম্যানিফেস্টো’ও। সেখানে সে জানায় মিলনে যাঁরা অনিচ্ছুক, সেই মহিলাদের ধর্ষণ করারও অধিকার রয়েছে তাদের। পাশাপাশি মহিলাদের সাজা দিতে ‘গুলি’ চালিয়ে গণহত্যার পরিকল্পনা করার সময় ২০১৪ সালের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলি চালানোর ঘটনার উদাহরণও দেয় গেঙ্কো।
[আরও পড়ুন: কোটি কোটি টাকার মালিক আদানি কলেজও পাশ করেননি, কেন জানেন?]
শুধু পরিকল্পনা করাই নয়, রীতিমতো অত্যাধুনির আগ্নেয়াস্ত্রও কিনে ফেলেছিল সে। ৯ মিমির আধাস্বয়ংক্রিয় পিস্তল, গুলি, বুলেট প্রুফের মতো নানা সরঞ্জাম কিনে প্রস্তুতি সেরে ফেলেছিল গেঙ্কো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই চক্রান্তের সন্ধান পেয়ে তার বাড়ি হানা দেয় পুলিশ। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। আইনজীবীদের ধারণা, গেঙ্কোর যাবজ্জীবনের সাজার রায় ঘোষণা কেবলই সময়ের অপেক্ষা। তার অপরাধের গুরুত্ব এতটাই, এর কম সাজা সে পাবে না বলেই দৃঢ়মত আইনজীবীরা।