ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: শুধুই কি অ্যাডিনো (Adenovirus) বা সমগোত্রীয় ভাইরাসের দাপট? নেপথ্যে করোনা (Coronavirus) নেই তো? জ্বর-শ্বাসকষ্ট, সর্দিকাশিতে আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে, তাতে এমনটাই আশঙ্কা রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কোভিডের মতো এই ক্ষেত্রেও শিশুর শ্বাসযন্ত্রের কোষে ‘সাইটোকাইন স্টর্ম’ বা তীব্র প্রদাহ হচ্ছে। ফলে বাচ্চারা দ্রুত নেতিয়ে পড়ছে, শ্বাসযন্ত্র কাজ করছে না। পালস রেট নামছে। কাউকে কাউকে অক্সিজেনও দিতে হচ্ছে।
ঘটনা হল, কোভিড (COVID-19) রোগীদের ক্ষেত্রে এমনটাই দেখা গিয়েছিল। তাই অ্যাডিনো ভাইরাসের দাপটেও করোনা পরীক্ষায় জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্যভবন। রিপোর্ট পজিটিভ হলেই শিশুদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করতে হবে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আশঙ্কার মেঘ আরও ঘনিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে ভরতি প্রায় সব বাচ্চার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (তীব্র শ্বাসকষ্ট) রয়েছে। কোভিডের মতোই শ্বাসনালি ও ফুসফুসে সংক্রমণ হয়ে নিউমোনিয়া (Pneumonia)হওয়ারও প্রবল সম্ভাবনা। তাই যে সব বাচ্চা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, তাদের একবার করোনা RT-PCR টেস্ট করতে হবে। আক্রান্ত শিশু ও পরিবারকে মেনে চলতে হবে কোভিডবিধি।
[আরও পড়ুন: ২১ বছর বয়সি উঠতি মডেলের সঙ্গে হোটেলে রাত কাটালেন লিওনার্দো ডি ক্য়াপ্রিও! ভাইরাল ছবি]
বুধবার কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ১৩ বছরের একটি মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বাচ্চাটিকে তীব্র শ্বাসকষ্ট ও জ্বর-সহ ভরতি করা হয়েছিল। গত দেড় মাসে অন্তত দশটি শিশুর মৃত্যুর পরে স্বাস্থ্যদপ্তর নড়চড়ে বসেছে। এদিনই বি সি রায় শিশু হাসপাতালে কয়েকটি শিশুর কোভিড টেস্টের পাশাপাশি ভাইরাস প্যানেল টেস্ট হয়েছে। হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. দিলীপ পালের কথায়, ‘‘ভাইরাস প্যানেল টেস্ট করলে একলপ্তে অন্তত পাঁচটি ভাইরাসকে চিহ্নিত করা সম্ভব।’’ বিসি রায়ে এদিনও অন্তত ৪০টি বাচ্চা ভেন্টিলেশনে রয়েছে। তাদের ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’’ মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ ডা. মিহির সরকার বলেন, ‘‘দিনে কত আক্রান্ত, তার তথ্য কোভিডের সময় জানা যেত। এখন তো সেই সুযোগ নেই।’’
[আরও পড়ুন: ‘জমি বা কমিটি দরকার?’, ভাষা বিতর্কে শুভাপ্রসন্নকে ফের খোঁচা কুণালের]
স্বাস্থ্যদপ্তরের এ দিনের বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (এআরআই), ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেস (আইএলআই) অর্থাৎ ফ্লু এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট ও জ্বরে আক্রান্ত বাচ্চাদের অবশ্যই কোভিড পরীক্ষা করতে হবে। ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. জয়দেব রায় বলেন, ‘‘সব শিশুদের অ্যাডিনো সংক্রমণ ধরে নিয়ে চিকিৎসা হচ্ছে। এমনও হতে পারে, করোনা আর অ্যাডিনো, দুইয়ে মিলে সাঁড়াশি আক্রমণ শানাচ্ছে। তাই এত দ্রুত ছড়াচ্ছে।’’