shono
Advertisement

অপরিষ্কার মুখগহ্বরই কি ওরাল ক্যানসারের বাড়বাড়ন্তের কারণ? জবাব দিলেন বিশেষজ্ঞ

কোন বিষয়গুলি খেয়াল রাখতে হবে, জেনে রাখুন।
Posted: 02:15 PM Aug 05, 2023Updated: 07:02 PM Aug 05, 2023

শরীর ভাল রাখার একটি অন্যতম শর্ত হল মুখগহ্বরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা। এ ব্যাপারে সচেতন করলেন গুরুনানক ইনস্টিটিউট অফ ডেন্টাল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চ এর ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. অমিত রায়। তাঁর কথা শুনে এই প্রতিবেদন লিখলেন জিনিয়া সরকার।

Advertisement

কিছুদিন আগেই ছিল জাতীয় ওরাল হাইজিন ডে। শুধু এই একটা দিন নয় সাহাবছরের মুখগহ্বরের খেয়াল রাখা প্রয়োজন। কারণ মুখগহ্বরের পরিচ্ছন্নতা বা ওরাল হাইজিন নিয়ে জনমানসে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। ফলে রোগ ফেলে রেখে তা থেকে সমস্যা আরও বাড়ছে। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গের সুস্থতার জন্য যেমন বিশেষ যত্নের প্রয়োজন তেমনই মুখ গহ্বরের স্বাস্থ্য ঠিক রাখাও অত্যন্ত জরুরি।

নতুন কেস স্ট্যাডির তথ্য, প্রতি বছর এদেশে প্রায় দেড় লাখ করে নতুন রোগী ওরাল ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে, যার মধ্যে অধিকাংশেরই ওরাল হাইজিন যথার্থ নয়। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হল এদের মধ্যে ৫০ শতাংশ রোগীরই রোগ নির্ণয় হয় অনেক দেরিতে। প্রায় বছরখানেক পরে। তখন রোগ হয়তো অনেক ছড়িয়ে পড়ছে। তার সঙ্গে রোগীকে ক্যানসার মুক্ত করাও অনেক বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

ভুলটা হচ্ছে কোথায়?
এখন অধিকাংশই জানেন না মুখে একটা ক্ষত হলে সেটার ব্যাপারে কখন সচেতন হতে হবে বা তার জন্য কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তার সঙ্গে ওরাল ক্যানসার সেন্টারের সংখ্যা সীমিত হওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে চিকিৎসার অনীহাও রয়েছে। এটা আরও মারাত্মক।
প্রথমেই বলব, মুখে বা মাড়িতে ছোট কোন ক্ষত থাকলে নিজে থেকে একটু কিছুও করবেন না। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। দাঁতে ফুটো রয়েছে, সেখান থেকে রক্তপাত হলে সাবধান হতে হবে। অনেক সময় দাঁত মাজার সময় রক্তপাত হয়ে যায়, সেটা অনেকেই বুঝতে পারে না। সেগুলি খেয়াল রাখতে হবে।

[আরও পড়ুন: বাইপাস এখন অতীত, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিতেই খুলবে হার্টের ব্লকেজ! কী জানাচ্ছেন কার্ডিওলজিস্ট?]

খাওয়া বা কথা বলার সময় মুখে কোথাও কামড়ে ফেললে বা ভাঙা দাঁত থেকে কোথাও ক্ষত হলে তা অবহেলা না করে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। যারা তামাক, গুটখা, খৈনি, পান বা পানপরাগ খান তাঁদের মুখে কোনও রকম অসমঞ্জস্য দেখা দিলে সাবধান হতে হবে।
ওরাল হাইজিনের মধ্যে এই বিষয়গুলি অত্যন্ত অ্যালার্মিং। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই এগুলি অবহেলা করেন। ফলস্বরূপ ওরাল ক্যানসারের (Oral Cancer) এই বাড়বাড়ন্ত।

অঙ্গীকার হোক জেলায় জেলায় হেলথ সেন্টার
একদিকে যেমন সচেতনতা বাড়াতে হবে, অন্যদিকে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আরও প্রসারিত করতে হবে। এ রাজ্যে এখন ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জনের সংখ্যা অসংখ্য। কিন্তু মুখের ক্যানসার চিকিৎসার পর্যাপ্ত চিকিৎসা কেন্দ্র সারা রাজ্যে মাত্র কয়েকটা। শুধুমাত্র কলকাতার কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজই ওরাল হাইজিন বা ওরাল ক্যানসার সংক্রান্ত চিকিৎসা করা হয়। ফলে দীর্ঘ অপেক্ষার পর একজন রোগী তার চিকিৎসার ডেট পান।

তাই এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা হাসপাতালে বা হেলথ সেন্টারে ওরাল ক্যানসার ডিটেকশন সেন্টার গড়ে তোলা খুব জরুরি। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে দেরিতে রোগ নির্ণয় হওয়ার জন্য ওরাল ক্যানসার মারাত্মক আকার নিচ্ছে। আর এর পিছনে অন্যতম কারণ হল এ রাজ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকা। রাজ্যে রাজ্যে যদি এই একাধিক ডিটেকশন সেন্টার গড়ে ওঠে তাহলে একাধারে যেমন ওরাল হাইজিন নিয়ে সতর্কতা বাড়বে, তেমনই রোগও খুব তাড়াতাড়ি নির্ণয় হবে। এ ব্যাপারে সমাজের সকল মানুষ ও প্রশাসন যাতে এগিয়ে আসেন সেই অঙ্গীকার নিয়েই আজ রাজ্যের বিভিন্ন ডেন্টাল কলেজে ওরাল হাইজিন ডে পালিত হবে। কারণ, সুচিকিৎসা ব্যবস্থা ও ওরাল হাইজিন ঠিক মতো মেনে চলাই ওরাল ক্যানসার প্রতিরোধের প্রাথমিক পদক্ষেপ।

[আরও পড়ুন: স্তন বাদ না দিয়েও ব্রেস্ট ক্যানসারের নিরাময় সম্ভব! আশার আলো দেখালেন চিকিৎসক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement