shono
Advertisement

চারপাশে পাহাড়, সামনে নদী, পুজোর ছুটিতে আপনার গন্তব্য হোক কালিম্পংয়ের অফবিট গ্রামটি

দিন প্রতি খরচ মাত্র ১২০০ টাকা।
Posted: 04:04 PM Sep 04, 2022Updated: 02:27 PM Sep 05, 2022

অরূপ বসাক, মালবাজার: পুজোয় পাহাড় ডাকছে? শহুরে জীবন, কোলাহল থেকে দূরে পাহাড়ের বুকে দিন কাটাতে চান? তাহলে এই পুজোয় আপনার গন্তব্য হতেই পারে মানঝিং। যাঁরা পাহাড় ভালোবাসেন এবং চিরাচরিত পাহাড়ি গন্তব্যের বাইরে ভিন্ন স্বাদ খুঁজে বেড়ান, তাঁদের কাছে অফবিট ডেস্টিনেশন হিসেবে পরিচিতি পেতে পারে এই পাহাড়ি গ্রাম। পুজোর আগে পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে এই প্রথম হোম স্টে চালু হল সেখানে। নাম বিশিষ্ট হোম স্টে।

Advertisement

শহুরে কোলাহল, ব্যস্ততা, ছোটাছুটি থেকে মুক্তি পেতে যারা পুজোয় নির্জনতায় কয়েকটা দিন কাটিয়ে নিজেদের রিফ্রেশ করতে চান তাঁদের ফার্স্ট চয়েস হতেই পারে মানঝিং। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৭০০ ফুট উচ্চতায় কালিম্পং জেলার গরুবাথান ব্লকের পাহাড়ি গ্রাম। মাল ব্লকের ওদলাবাড়ি চৌরাস্তার মোড় থেকে উত্তরের পিচ রাস্তা ধরে পাথরঝোড়া চা বাগান পেরিয়ে আঁকাবাকা পাহাড়ি পথে ২০ কিলোমিটার দূরে এক টুকরো এলাকা এই মানঝিং।

[আরও পড়ুন: ‘TET নেবেন না, আত্মহত্যা করব’, নিয়োগ তৎপরতা শুরু হতেই পর্ষদ সভাপতিকে হুমকি উত্তীর্ণদের]

 

সারাদিন মেঘ-রোদ্দুরের লুকোচুরি চলে সেখানে। হিমেল হাওয়ার পরশ মেখে পাহাড়ি পথে হেঁটে ক্লান্ত হয়ে গেলে পাইনের সারির পাশের বেঞ্চে বসে জিরিয়ে নিতেই পারেন। মেঘ-রোদের খেলা দেখতে দেখতে গরম চায়ে চুমুক দিতে মন্দ লাগবে না। চোখের সামনে দিগন্ত বিস্তৃত পাহাড়ি উপত্যকা, গভীর খাদ, পাথরের গা বেয়ে সশব্দে বয়ে চলা চেল ও ঘিস নদীর ফেনিল জলরাশির মুগ্ধতা স্পর্শ মন ছুঁয়ে যাবে। আগে সেখানে বেড়াতে এলেও থাকার ব্যবস্থা ছিল না। এবার সেই সমস্যাও দূর হল।

এলাচ, আদা, ঝাড়ু ও ফুলের চাষ এখানকার মানুষের প্রধান জীবিকা। তবে ইদানীং পর্যটনকে আঁকড়ে ধরে নতুন করে বাঁচার দিশা খুঁজে পেয়েছে মানঝিংয়ের বাসিন্দারা। নেপালি চলচ্চিত্র ও নাট্য জগতের অভিনেতা এবং মানঝিংয়ের ভূমিপুত্র বিক্রম পরাজুলির হাত ধরে প্রথম হোম স্টে চালু হয়েছে এখানে। বিক্রমের কথায়, “গ্রামের নবীন প্রজন্মের একটা বড় অংশ কাজের খোঁজে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিয়েছিল। করোনাকালে তাঁদের মধ্যে অনেকেই ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। গ্রামেই থেকে গিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের সামনে বিকল্প কর্মসংস্থান তুলে ধরতেই হোম স্টে চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

 

[আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে উদ্ধার নগদ ১ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা, টানার জেরার পর গ্রেপ্তার মালদহের মাছ ব্যবসায়ী]

নতুন হোম স্টে-টিতে একসঙ্গে ১৫ জনের থাকা খাওয়ার সুন্দর বন্দোবস্ত রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা গরম জলের পাশাপাশি, চাইলেই মিলবে গরম চা ও সারাদিনের সুস্বাদু অর্গানিক খাবার। সব মিলিয়ে মাথাপিছু খরচও সাধ্যের মধ্যে, মাত্র ১২০০ টাকা। ইচ্ছে হলে লোকাল গাইড নিয়ে পাহাড়ি পথ ধরে ট্রেকিংও করতে পারেন। এলাকার স্থানীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ারও সুযোগ রয়েছে এখানে। সবমিলিয়ে পুজোর সময় আর্কষণীয় পুরো প্যাকেজ নিয়ে হাজির মানিঝংয়ের বিশিষ্ট হোম স্টে।

সেখানে ঘুরতে যাওয়া পর্যটক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়, নিশা থাপারা বলেন, “এর আগেও এই এলাকায় এসেছি কিন্তু থাকার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। প্রকৃতি সৌন্দর্য উপভোগ করে আবার লাভা গিয়ে রাত্রিবাস করতে হয়েছে। তবে এবার হোম স্টে হওয়ায় খুব ভাল লাগছে। পুজোর সময়ও এখানে আসব। শুনেছি, এই হোম স্টের পাশেই দুর্গাপুজো হয়। পুজোর ক’টা দিন এখানেই কাটাব।” লাভা বনদপ্তরের রেঞ্জার বলেন, “আমাদের দপ্তর থেকেও বিভিন্ন এলাকায় ইকো টুরিজম করা হচ্ছে। প্রথম মানঝিং হোম স্টে চালু হওয়ায় পর্যটকদের সুবিধা হল। তবে সব হোম স্টে যাতে পরিবেশকে বাঁচিয়ে চলে সেদিকটাও দেখতে হবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement