সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছুটির অভাবে কি বেড়াতে যাওয়া হয় না? চিন্তা নেই। ক'দিন পর মেরি ক্রিসমাস। হাতে দু'দিনের ছুটি। এই ছুটিটা কোনও ভাবেই নষ্ট করবেন না। এই সময়ের মধ্যেই আপনি ঘুরে আসতে পারেন পাহাড়, জঙ্গল, ঝর্না কিংবা ঐতিহাসিক স্থান। কলকাতার আশেপাশেই রয়েছে বেড়াতে যাওয়ার এমন সুযোগ। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা, কিংবা পড়শি রাজ্যেও ঘুরে আসতে পারেন আপনি। রইল এমন ৫ জায়গার হদিশ।
এটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একটি সুন্দর সমুদ্র সৈকত। দিঘা ও মন্দারমণির মাঝে অবস্থিত। কলকাতা থেকে সড়কপথে তাজপুরের দূরত্ব প্রায় ১৭০ কিলোমিটার। বাসে বা নিজস্ব গাড়িতে যেতে পারেন। গাড়িতে গেলে NH16 ধরে যেতে হবে। সময় লাগবে প্রায় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা। ট্রেনে গেলে কাঁথি বা দিঘা স্টেশন পর্যন্ত যাবেন। সেখান থেকে অটো বা ট্যাক্সি নিয়ে সোজা তাজপুর। এই সমুদ্র সৈকত শান্ত এবং তুলনামূলকভাবে নির্জন। এখানে প্রচুর লাল কাঁকড়ার দেখা মেলে। তাজপুর প্যারাসেলিং এবং অন্যান্য জলক্রীড়ার জন্য বিখ্যাত। তাজপুরে থাকার জন্য নানা ধরনের হোটেল, রিসর্ট এবং কটেজ আছে।
এটি পুরুলিয়া জেলার একটি সবুজ অরণ্য ও আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। ঘন শাল-পিয়াল জঙ্গলে ঘেরা। কলকাতা থেকে ট্রেনে পুরুলিয়া বা ঝাড়গ্রাম যেতে পারেন। সেখান থেকে গাড়িতে দুয়ারসিনি পৌঁছানো যায়। সড়কপথেও নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাওয়া সম্ভব। দূরত্ব প্রায় ২৫০ কিলোমিটার। ঘন জঙ্গল ও আদিবাসী সংস্কৃতি এই স্থানের প্রধান আকর্ষণ। ডুলুং নদীর তীর বরাবর হেঁটে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা অসাধারণ। এখানে আদিবাসী লোকনৃত্য দেখার সুযোগ পাবেন। বনদপ্তরের কটেজ বা কিছু স্থানীয় লজ এখানে থাকার জন্য সেরা বন্দোবস্ত।
বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া
এটি বাঁকুড়া জেলার একটি ঐতিহাসিক শহর। একসময় মল্ল রাজবংশের রাজধানী ছিল এই বিষ্ণুপুর। কলকাতা থেকে ট্রেনে বিষ্ণুপুর স্টেশন পৌঁছানো সবচেয়ে সহজ। সড়কপথে বাসে বা গাড়িতে সরাসরি বিষ্ণুপুর যাওয়া যায়। সময় লাগবে প্রায় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা। বিষ্ণুপুর তার পোড়ামাটির (টেরাকোটা) মন্দিরের জন্য বিশ্ববিখ্যাত। জোড় বাংলা, রাসমঞ্চ এবং মদনমোহন মন্দির এখানকার প্রধান দর্শনীয় স্থান। বালুচরী শাড়ির জন্যও এই স্থান বিশেষ ভাবে প্রসিদ্ধ। থাকার জন্য পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের ট্যুরিস্ট লজ এবং অনেক বেসরকারি হোটেল এখানে আছে।
নিমপীঠ ও কৈখালি
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার এই স্থানগুলি সুন্দরবনের প্রবেশপথের কাছাকাছি অবস্থিত। কলকাতা থেকে ক্যানিং বা বারুইপুর হয়ে সড়কপথে নিমপীঠ ও কৈখালি যাওয়া যায়। ট্রেনে ক্যানিং পর্যন্ত গিয়ে তারপর স্থানীয় পরিবহন নিতে পারেন। নিমপীঠে রামকৃষ্ণ আশ্রম ও কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। কৈখালি একটি বোটানিক্যাল সাইট। এখানকার নদী তীরবর্তী শান্ত পরিবেশ পর্যটকদের মন টানে। নিমপীঠের আশ্রমের অতিথিশালা বা আশেপাশে কিছু স্থানীয় লজে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
এটি ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ধানবাদ জেলার টুণ্ডি অঞ্চলে অবস্থিত। ধানবাদ শহর থেকে কিছুটা দূরে। কলকাতা থেকে ট্রেনে ধানবাদ যাওয়া যায়। ধানবাদ স্টেশন থেকে গাড়িতে ভাটিন্ডা জলপ্রপাত পৌঁছাতে হয়। কলকাতা থেকে ট্রেনে যেতে প্রায় ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় লাগে। পাহাড়ি পথে এই জলপ্রপাতের সৌন্দর্য অসাধারণ। অনেকে একে 'ভারতের মিনি ক্যানিয়ন' বলেও ডাকেন। বর্ষার পরেই এর রূপ সবচেয়ে বেশি খোলে। ট্রেকিং-এর সুযোগও মেলে এখানে। ধানবাদ শহরে থাকার জন্য একাধিক হোটেল ও লজ পাওয়া যায়। সেখান থেকে সকালে জলপ্রপাত ঘুরে আসা যায়।
