নিরুফা খাতুন: বড়দিনের আগেই পাহাড়ের পর্যটকদের জন্য বড় উপহার দিচ্ছে রাজ্য বন দপ্তর। এ সপ্তাহের শেষে দার্জিলিংয়ের চিড়িয়াখানায় আসছে এক জোড়া সাইবেরিয়ান বাঘ। ভূমধ্যসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাস থেকে লারা ও আকামাস নামে সাইবেরিয়ান বাঘের দুই শাবককে নিয়ে আসা হচ্ছে। এই শীতে দর্শকদের চমক দিতে বিমানে করে আনা হচ্ছে তাদের। বিনিময়ে দার্জিলিং থেকে পাঠানো হচ্ছে দুটি রেড পান্ডা। সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে।
শুক্রবার লারা ও আকামাস কলকাতায় নামবে। তার পর তাদের ঠিকানা হবে শৈল শহরে। নতুন অতিথিকে স্বাগত জানাতে পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কে এখন সাজোসাজো রব। উল্লেখ্য, দার্জিলিংয়ে (Darjeeling) সাইবেরিয়ান বাঘ আগেও ছিল। ২০০৭ সালে মারা যায়। পরে অনেক অতিথি এসেছে। কিন্তু সাইবেরিয়ান বাঘ আর নিয়ে আসা হয়নি। তুষার দেশের বাঘ নিয়ে এসে গত শীতে দর্শকদের চমক দিতে চেয়েছিল রাজ্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। তার জন্যই সাইবেরিয়ার সঙ্গে আলোচনাও শুরু করা হয়েছিল।
কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ায় সাইবেরিয়ান থেকে বাঘ নিয়ে আসার পরিকল্পনা থমকে যায়। ভাবনা ছিল, যুদ্ধ মিটে গেলে পুনরায় সাইবেরিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে। কিন্তু যুদ্ধ না মেটায় অন্য দেশে সাইবেরিয়ান বাঘের (Siberian Tiger) খোঁজ চালায় কর্তৃপক্ষ। অবশেষে সাইপ্রাসের পাফোস চিড়িয়াখানায় খোঁজ মেলে লারা ও আকামাসের। স্ত্রী লারার বয়স এখন এক বছর ১০ মাস। আকামাসের বয়স এক বছর সাত মাস। রাজ্যে জু অথরিটির মেম্বার্স সেক্রেটারি সৌরভ চৌধুরি জানান, প্রথমে রাশিয়া থেকে সাইবেরিয়ান বাঘ নিয়ে আসার কথা হয়েছিল। সেখানে যুদ্ধ চলায় সাইপ্রাস থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: শীতের মিঠে রোদে কমলার রসে মজতে চান? আপনার জন্য নতুন ঠিকানা]
শুক্রবার একজোড়া বাঘ কলকাতায় এসে পৌঁছবে। তারপর তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে কোয়ারান্টাইনে কিছুদিন রাখা হবে। বড়দিনের আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হবে বাঙালির সাধের দার্জিলিংয়ে। ইতিমধ্যেই দুজনের জন্য ঘর তৈরি হয়ে গিয়েছে। তার আগে আকাশপথে কলকাতায় আসার ধকল থাকবে। তাই সফরের ক্লান্তি কাটানোর জন্য আলিপুর চিড়িয়াখানায় সাময়িক বিশ্রামের ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। রয়্যাল বেঙ্গলের থেকেও সাইবেরিয়ান বাঘ দ্বিগুণ বড় এবং শক্তিশালী। তুষার দেশের এই বাঘের খাবারও বেশি লাগে।
একটি রয়্যাল বেঙ্গল দিনে ৯-১২ কেজি মাংস খেতে পারে। সাইবেরিয়ান বাঘের লাগে ১০-১৪ কেজি। এরা শীতপ্রধান দেশ ছাড়া থাকতে পারে না। শৈলশহরে পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্ক। গত বছর দেশের মধ্যে সেরা চিড়িয়াখানার তকমা পেয়েছে দার্জিলিং। রয়্যাল বেঙ্গল বাঘ এখানে রয়েছে। তবে সব থেকে বেশি দর্শক টানে স্নো লেপার্ড, রেড পান্ডারা। এবার শীতে লারা ও আকামাস এদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দর্শক টানবে বলেই আশা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।