সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। আর যার জেরে আর্থিক দেনার দায়ে জর্জরিত টেলিকম সংস্থাগুলি বড়সড় স্বস্তি পেল। টেলিকম সংস্থাগুলিকে চার বছরের মোরেটোরিয়াম প্রদানের উপর অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। অর্থাৎ এজিআর এবং স্পেকট্রাম বাবদ বকেয়া টাকা দেওয়ার জন্য আরও চার বছরের সময় দেওয়া হল টেলিকম সংস্থাগুলিকে (Telecom Industry)। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এই সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আরও বেশ কিছু নয়া সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের মতো বড়সড় ঘোষণাও রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক দেনার দায়ে জর্জরিত টেলিকম সংস্থাগুলি। স্প্রেকটাম বাবদ ২০২২ সালের এপ্রিলে তাদের একটি কিস্তির টাকা জমা দেওয়ার কথা ছিল। আর তাতেই চার বছরের সময়সীমা দেওয়া হল টেলিকম সংস্থাগুলিকে। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে কোনও কিস্তির টাকা দিতে হবে না ভোডাফোন, এয়ারটেলের মতো বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলিকে। আর এই সময়সীমা কার্যকর হবে আগামী ১ অক্টোবর থেকে। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, “টেলিকম ক্ষেত্রে ন’টি কাঠামোগত সংস্কার এবং পাঁচটি প্রক্রিয়াগত সংস্কারে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সেই সংস্কারের ফলে পুরো টেলিকম ক্ষেত্রের কাঠামো পালটে যাবে। যা টেলিকম ক্ষেত্রকে আরও গভীর ও বিস্তৃত করবে।”
[আরও পড়ুন: সাবধান! সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে ষড়যন্ত্রের ফাঁদ, ভিডিও কল রিসিভ করলেই খোয়াতে পারেন সর্বস্ব]
আসলে দেশের এই তিন টেলিকম সংস্থার কাছে অ্যাডজাস্ট গ্রস রেভেনিউ বা AGR বাবদ প্রায় ৯৩ হাজার ৫২০ কোটি টাকা পায় কেন্দ্র। কেন্দ্রের টেলিকম মন্ত্রকের কাছে ভোডাফোন আইডিয়া (Vodafone Idea), এয়ারটেল (Airtel)-এবং টাটা টেলিসার্ভিসের বিপুল অর্থ বকেয়া রয়েছে। AGR বাবদ ভোডাফোন আইডিয়ার একটা সময় বকেয়া ছিল ৫৮ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। তার মধ্যে মোটে সাত হাজার কোটি টাকা মিটিয়েছে তারা। অন্যদিকে, ভারতী এয়ারটেলের বকেয়ার পরিমাণ ছিল ৪৩,৯৮০ কোটি টাকা। এখনও তাদের ২৫,৯৭৬ কোটি টাকা মেটাতে হবে। টাটা টেলিসার্ভিসকে মেটাতে হবে ১৬ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা। এই টাকা এককালীন মেটাতে হলে এই তিন সংস্থাকেই একপ্রকার পথে বসতে হত। সেই বিপত্তির হাত থেকে গত সেপ্টেম্বরে সংস্থা তিনটিকে মুক্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। AGR মেটানোর জন্য সংস্থাগুলিকে ১০ বছর সময় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। যার প্রথম কিস্তি মেটানোর সময়সীমা ছিল ১ মার্চ ২০২১। এর মধ্যে মোট বকেয়ার ১০ শতাংশ মেটাতে হত সংস্থাগুলিকে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও টেলিকম সংস্থাগুলিকে এবার চারবছরের ছাড় দিল কেন্দ্র।
এখানেই শেষ নয়, টেলিকম ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। এর আগে টেলিকম ক্ষেত্রে কেবলমাত্র ৪৯ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ করা যেত। কিন্তু নয়া সিদ্ধান্ত কোনও সংস্থায় ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ করা যাবে। এছাড়া নতুন সিম কিংবা কানেকশনের জন্য আর কোনও ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। বরং যাবতীয় কাজ অনলাইনে করতে পারবেন গ্রাহকরা। কেওয়াইসিও করা যাবে অনলাইনে।