নন্দন দত্ত, সিউড়ি: লোকাল ট্রেনের বগির রং নীল-সাদা! রামপুরহাট-বর্ধমান লোকাল ট্রেনে বছরের শুরু থেকেই এমন রঙের বগি নিয়ে যাত্রী পরিবহন করছে পূর্বরেল। কাকতালিয়ভাবে তাকে ঘিরেই শুরু হয়েছে রং রাজনীতি। তৃণমূলের দাবি ‘দিদি’কে অনুসরণ করে বাঁচতে চাইছে কেন্দ্রেয় বিজেপি সরকার। বিজেপি নেতাদের পালটা দাবি, রং কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। দু’পক্ষের এই টানাপোড়েনের মাঝে রামপুরহাট থেকে সকাল ৬ টা ১৫ মিনিটে বর্ধমানগামী লোকাল ট্রেনটি আগ্রহ বাড়িয়েছে যাত্রীদের।
বছরের শুরুতেই রামপুরহাট লোকালের নতুন কোচ নিয়ে চলাচল শুরু করেছে পূর্বরেল। নতুন কোচের রঙের সঙ্গে রাজ্যের নীল সাদা রঙের হুবহু মিল। রাজ্যের সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলিতে যে ধরনের নীল সাদা রং থাকে অবিকল সেই রঙে রাঙানো। আগে রেলের লোকাল কোচের রং থাকত খয়েরি। দূরপাল্লার রং গাঢ নীল। যদিও রাজধানী ট্রেনের রং এখনও লাল। তবুও রাজ্যের সঙ্গে মিলে যাওয়া এমন রং আগ্রহ জাগিয়েছে যাত্রীদের। বিশেষ করে বছর দুই আগে পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডের ম্যাসানজোরের সেতুর রং ঘিরে দুই রাজ্যের বিতর্ক দেখা দিয়েছিল।
[আরও পড়ুন: যোগশাস্ত্রে পাণ্ডিত্যের সম্মান, পদ্মশ্রী পাচ্ছেন ১২৫ বছরের স্বামী শিবানন্দ]
ময়ূরাক্ষী নদীর উপর ম্যাসানজোরে বাংলার তৈরি জলাধার ও জলবিদ্যুতের সেতুতে নীল সাদা রং করতে যায় বাংলা নিযুক্ত ঠিকাদার। তাকে ঘিরে তর্ক শুরু হয়। বিজেপি নেতারা ম্যাসানজোরে অবস্থিত বাংলার তোরণ থেকে বিশ্ব বাংলা লোগো পর্যন্ত খুলে দেয়। বন্ধ হয়ে যায় রঙের কাজ। যদিও জেলায় এখন বেশিরভাগ স্কুল, সেতু সরকারি দপ্তরের রং নীল সাদা। এমনকী জেলার ছোট বাড়ি জেলা পরিষদ বামেদের লাল রঙের উপর নীল-সাদা রঙে জ্বলজ্বল করছে। সেই একই রঙে রঙীন রেলের লোকালের বগি।
রাজ্যের ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্র তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্পকে অনুসরণ করে বেঁচে আছে। মুখ্যমন্ত্রী কন্যাশ্রী করলেন। কেন্দ্র করল বেটি বাঁচাও। কিন্তু সেই বেটি বাঁচাওয়ে কত টাকা বরাদ্দ করে কেন্দ্র। দিদি নীল-সাদা রঙ করে রাজ্যজুড়ে একটা সাযুজ্য আনতে চাইল। রেল এখন তাকে দেখে নীল সাদা রং করছে। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নকল করা ছাড়া আর কোনও উপায় নাই কেন্দ্রের।” বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “রং কারও ব্যক্তিগত নাকি। কেন্দ্রীয় সরকার সঙ্গে রেল কমিটি যা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটাই রেলের বগির রং হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: পদ্মভূষণে সম্মানিত বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, পদ্মবিভূষণ জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে]
কেন্দ্রীয় রেল বোর্ডের সদস্য শতাব্দী রায় জানান, “গেরুয়া রং ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের রং যদি কেন্দ্রের পছন্দ হয়ে থাকে, সেটা তো আনন্দের। দিদির রুচিকে মান্যতা দিচ্ছে দেশের সরকার। আমি চাইব এই রং দেশজুড়ে ছেয়ে যাক।” যদিও পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানান, “কেন কোচের রং নীল সাদা, আমার তা জানা নেই।”