সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনার চোখরাঙানিতে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। এই পরিস্থিতিতে ঢাকায় লকডাউনের ইঙ্গিত দিলেন সেদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকায় সচিবালয়ে মন্ত্রী জানান, দেশে করোনা সংক্রমণের হার ফের বেড়ে যাওয়ায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমরা অনুরোধ করছি। ডিসি, এসপিরা নির্দেশ পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। আমি চাই আগামী সাতদিনের মধ্যে লকডাউন জারি হোক। করোনা ভাইরাসের নয়া স্ট্রেন ওমিক্রনকে আমাদের রুখতেই হবে। সে কারণে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। গণপরিবহণে মাস্ক ছাড়া চলাচল করা যাবে না। যদি কেউ বাস, ট্রেন ও লঞ্চে মাস্ক ছাড়া চলাচল করেন, তাহলে জরিমানা করা হবে।” করোনা মোকাবিলায় আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহণ চালানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে কমছে দোকানপাট ও শপিং মল খোলা রাখার সময়ও। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে আগামী সাতদিনের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: ছিঃ! মৃত্যুর পরও থামেনি ধর্ষণ! রাজস্থানের আদিবাসী কিশোরীর পরিণতিতে চাঞ্চল্য]
এর আগে ওমিক্রন মোকাবিলায় সোমবার মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের আয়োজনে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকে নানা ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা গত সপ্তাহ থেকে লক্ষ্য করছি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তা সত্যিই আশঙ্কাজনক। তাই মঙ্গলবার মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সঙ্গে আমরা বৈঠক করছি। সেই বৈঠকে আমি ছিলাম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, এসপি, ডিআইজিরাও ছিলেন। তাঁদের কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে তা চূড়ান্ত নয়। রাত ১০টার পরিবর্তে ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখার প্রস্তাবও করা হয়েছে।
সকলকে ভ্যাকসিন নেওয়ার কথাও বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “হোটেল, রেস্তরাঁয় খেতে গেলে ভ্যাকসিনের শংসাপত্র দেখাতে হবে। পরতে হয় মাস্ক। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল চলবে। যদি সংক্রমণ বেশি বাড়ে, তবে স্কুল বন্ধের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে। পাশাপাশি স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দরে স্ক্রিনিং জোরদার করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইনের ক্ষেত্রে পুলিশ পাহারা বসানো হবে। এ বিষয়ে নজর দিতে বলা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, “আমরা দেশকে নিরাপদে রাখতে চাই। দেশের অর্থনীতি ভাল থাকুক। জীবনযাত্রা স্বাভাবিকভাবে চলুক। এজন্য আমাদের সবাইকে চেষ্টা করতে হবে। শুধু সরকার কিংবা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একা পারবে না। ঝুঁকিপূর্ণ ও বয়স্ক ব্যক্তিরা সাবধানে থাকবেন। ওমিক্রন ২-৩গুণ বেশি হারে সংক্রামক।” পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালগুলি প্রস্তুত আছে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।