রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: আশঙ্কাই সত্যি হল। চিন্তন বৈঠকে মুখ খুলেই ঝড় তুললেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। সন্ত্রাসের বুলি আউড়ে দলের দুর্বলতাকে ঢাকার যে চেষ্টা সুকান্ত মজুমদাররা করছিলেন তা কার্যত তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন বিজেপির এই দাপুটে নেত্রী। দলের সাংগাঠনিক দুর্বলতা থেকে কমিটি গঠনে স্বজনপোষণ, সবই উঠে এল চিন্তন বৈঠকে তাঁর বক্তৃতায়। ফের একবার আত্মসমালোচনার আহ্বান জানালেন নেত্রী।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে হম্বিতম্বির পরও সেঞ্চুরি করতে পারেনি বিজেপি। রাজ্যের উপনির্বাচন থেকে পুরভোট, সেই ধারাই চলছে। আর ভোটে হারলেই ‘শাসক দলের সন্ত্রাস’-এর অভিযোগকে ঢাল করছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু এভাবে চলবে না, দলের দুর্বলতাকেও স্বীকার করতে হবে। শনিবার রাজ্য বিজেপির চিন্তন বৈঠকে দলকে এই বার্তাই দিলেন সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাৎপর্যপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের শুরুতে তাঁকে মঞ্চে স্থান দেওয়া হয়নি। পরে অবশ্য সেখানে বক্তব্য রাখেন রাজ্য বিজেপির এই লড়াকু নেত্রী। শীর্ষনেতাদের উদ্দেশে লকেটের সাফ কথা, “শুধু সন্ত্রাস-সন্ত্রাস বললেই হবে না। নিজেদের দুর্বলতাটা স্বীকার করতে হবে।”
[আরও পড়ুন: অস্ত্রোপচারে গলা থেকে কাজলের কৌটো বের করেও বাঁচানো গেল না, SSKM-এ মৃত্যু ৮ মাসের শিশুর]
এদিকে রাজ্য কমিটি গঠন নিয়ে দলের অন্দরে তোলপাড় হয়েছে। কোন্দলে দল ছেড়েছেন অনেকে। রাজনৈতিক মহল বলছে, রাজ্য বিজেপি আপাতত আড়াআড়িভাবে বিভক্ত। এদিন সেই কমিটি গঠন নিয়েও বার্তা দেন লকেট। বলেন, “যেভাবে কমিটি তৈরি হয়েছে, তাতে যোগ্যতা নয় গুরুত্ব পেয়েছে কোটা। পুরনোদের একেবারে সরিয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। সাংসদ, বিধায়কদের সংগঠন থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে।” সবমিলিয়ে এদিন ফের একবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ একাধিক শীর্ষ নেতাকে তুলোধোনা করলেন লকেট।
তৎকাল ও নব্য বিজেপি এবং আদি বিজেপির মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে। দলের আদি নেতাদের বাদ দিয়ে কতিপয় নব্য ও তৎকাল নেতা রাজ্য পার্টির ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চাইছে। তখন লকেট চট্টোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। লকেট এদিন সকলকে নিয়ে চলার যে বার্তা দিয়েছেন তাতে খুশি বিজেপির বড় অংশই। ওই অংশের বক্তব্য, দলের নেত্রী হিসাবে সঠিক কথাই বলেছেন লকেট। যা থেকে বর্তমান তৎকাল নেতারা, যাঁরা ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চাইছেন, তাঁদেরও শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে মনে করছে রাজ্য বিজেপির বিদ্রোহী শিবির।