নন্দন দত্ত, বীরভূম: ভোট এলেই ভয় নয়, ভাবনায় জড়সড় হয়ে যায় লালন শেখের পরিবার। বগটুই গ্রামে ভাদু শেখ হত্যার পরে যে গণহত্যা হয়েছিল তাতে মূল অভিযুক্ত ছিল নিচু পাড়ার ভাদুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু লালন শেখ। কিন্তু তাঁকেই সিবিআই হেফাজতে মরতে হয়েছিল। রামপুরহাটের সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের দোতলার শৌচাগারে ঝুলন্ত অস্বাভাবিকভাবে মৃত অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর দুবছর পরেও এখনও স্বামীর সঙ্গে শেষ দেখার দৃশ্য ভুলতে পারেন না স্ত্রী রেশমা বিবি।
তিনি জানালেন, "লালন শেখ তখন সিবিআই হেফাজতে। তাঁদের এক কর্তা বিরাজবাবু স্বামীকে নিয়ে এল। ভালো করে হাঁটতে পারছে না লালন। ওরা বলল, দেখে নে। স্বামীকে শেষ দেখা দেখে নে। তখনও বুঝিনি এটাই শেষ দেখা হবে। ১২ ডিসেম্বর ২০২২ সালে স্বামীকে মেরে দেওয়ার খবর পেলাম টিভিতে।" তার পর থেকে একটা আতঙ্ক কাজ করছে লালনের পরিবারে।
[আরও পড়ুন: অভিযোগকারীরা বিজেপির মুখোশ খুলে দিচ্ছে! সন্দেশখালি কাণ্ডে এবার তৃণমূলের পাশে কংগ্রেস]
মাটির ঘর। টিনের চালা। সেই ঘরে লালনের ছবি। এখন সেদিকে তাকালে চোখে জল আসে রেশমা বিবির। কেমন আছেন তিনি? জানালেন, "আল্লার হুকুমে দিন চলছে। তিনি জানেন আমরা কেমন আছি।" গ্রামে তাঁর ভয় নেই তবে দুশমনি আছে। তাতেই তাঁদের ভাবনা। কারণ, দুবছর পর তাঁর স্কুলে পড়া ছেলে রোহনের নামে নোটিস দিল সিবিআই। তাও আবার বাড়িতে নয়, মিহির পাড়ার মোড়ে নোটিস টাঙিয়ে চলে গিয়েছে। এখন কী করবেন ভাবতে পারছে না রেশমা বিবি।
নোটিস পেয়ে ঘর ছাড়া রোহন। বাবার মৃত্যুর পর বাবার একটা ১২ চাকা ট্রাক ছিল। সেটার ভাড়া খাটিয়ে সংসার চলত। জানুয়ারি মাসে ছেলের নামে নোটিসের পর সেটাও প্রায় বন্ধ। এখন কী করবেন জানেন না! তবে তাঁরা রাজনীতি বোঝেন না। তাঁদের নিয়ে রাজনীতি হয়েছে সেটা বোঝেন। কিন্তু রাজনীতি না করলেও ভোট দেবেন। শতাব্দী রায় একবার হলেও তাঁর বাড়ি এসেছিলেন যে। তিনি তো অন্তত খোঁজ নিয়েছেন। আর এখন তো কেউ খবরই রাখে না।