ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দার্জিলিং থেকে মালদহ, পরপর সাতটি লোকসভা আসন। সব কটিই বিজেপির দখলে। ২০১৯-এর সেই ফল পালটে দেওয়ার লক্ষ্যে নয়া স্ট্র্যাটেজি নিয়ে এবার নির্বাচনী ময়দানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১-এর বিধানসভা ভোট থেকে সেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তেইশের পঞ্চায়েত ভোট দেখিয়েছে উন্নয়ন আর মজবুত সংগঠনই তৃণমূল সরকারের মূল চাবিকাঠি। পঞ্চায়েত ভোটে গুরুদায়িত্ব নিয়ে ময়দানে নেমে ‘বাংলার মতো’ পেয়ে গিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার চব্বিশের কঠিন লড়াই। উত্তরবঙ্গজুড়ে পরপর নির্বাচনী সভা শুরু করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে ভোট স্ট্র্যাটেজি নিয়ে জমি প্রস্তুত করতে নামছেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)। উত্তরবঙ্গে পরপর কর্মিসভা।
উত্তরবঙ্গে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই প্রচার শুরু তৃণমূল নেত্রীর। তার আগে সোমবারই উত্তরবঙ্গ পৌঁছচ্ছেন অভিষেক। শিলিগুড়িতে তাঁর পর পর কর্মিসভা। তার পর একইভাবে কর্মিসভা দক্ষিণবঙ্গেও। পরপর পাঁচদিনের কর্মসূচি। শিলিগুড়ি পৌঁছে বিকেলে পরপর বৈঠক। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের কর্মীদের সেখানেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ম্যারাথন এই বৈঠক থেকেই জরুরি বার্তাটুকু দিয়ে দেবেন অভিষেক। পরদিন ২ এপ্রিল তাঁর বৈঠক কোচবিহারে। সেখানেও কর্মিসভা। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি-এই তিন জেলার ভোট প্রথম দফায়। যার জেরে এই তিন জেলাকে সামনে রেখে শুরুতেই ময়দানি লড়াইয়ের বার্তা দিয়ে দেবেন অভিষেক। মনে রাখতে হবে, কোচবিহার জেলা থেকেই তৃণমূলে জনজোয়ারের কর্মসূচি শুরু করেছিলেন অভিষেক।
[আরও পড়ুন: কে বেশি বিষাক্ত? ‘গোখরো’ মিঠুন নাকি ‘চন্দ্রবোড়া’ অভিজিৎ! ভোটপ্রচারে চর্চায় কার্টুন]
জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার–তিনটি কেন্দ্রই বিজেপির দখলে। পঞ্চায়েতের প্রচারে এসে এই এলাকার সমস্যা ধরে ধরে উল্লেখ করে অভিষেক বোঝাতে চেয়েছিলেন, বিজেপি এই এলাকাগুলিতে কোনও উন্নয়নের কাজ করেনি। উল্টে বাংলার টাকা আটকে দিতে কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছে। সঙ্গে উস্কানি দিয়েছে উত্তরবঙ্গকে বাংলা থেকে আলাদা করে দেওয়ার। অভিষেকের আর্জি ছিল মানুষ স্রেফ অধিকার আর উন্নয়নের নিরিখে ভোট দিন। বিপুল জয় পায় তৃণমূল। সেই ভিতের উপর দাঁড়িয়ে এবার তৃণমূল লোকসভার মতো ভোটে বড় পরীক্ষায় নামছে। তারই সুর বেঁধে দেবেন অভিষেক। এর পরই একে একে দক্ষিণবঙ্গে নামবেন। ৩ এপ্রিল বীরভূমে তাঁর কর্মিসভা।
পরপর এখান থেকেই প্রচার করতে জঙ্গলমহলে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে সেই ক্ষেত্রে প্রস্তুত করে আসবেন অভিষেক। ৪ এপ্রিল যাবেন ঝাড়গ্রাম। সেখানেই ঝাড়গ্রাম আর ঘাটালের নেতৃত্বকে নিয়ে তাঁর কর্মিসভা রয়েছে। আবার পরদিনই চলে যাবেন মালদহ। ৫ এপ্রিল সেখানে কর্মিসভা। মালদহ দক্ষিণ ছাড়া দার্জিলিং, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, বালুরঘাট, মালদহ উত্তর-সহ ৬টি কেন্দ্রই বিজেপির দখলে। মালদহ দক্ষিণ কংগ্রেসের আসন। এবার সেখানে আসন দখলে রাখার আশা কংগ্রেসের কেউই সেভাবে করতে পারছে না। বিজেপি চাইছে এই আসনটি নিতে। ফলে ত্রিমুখী লড়াইয়ে একমাত্র এগিয়ে তৃণমূল সরকারের উন্নয়ন আর কৌশলী পদক্ষেপ। যাকে সামনে রেখে নামছেন অভিষেক।