রমেন দাস: প্রাক্তন বিচারপতির রাজনীতিতে যোগদানের পর প্রার্থী হওয়ার জল্পনা উঠতেই তৃণমূল নেত্রী হুঁশিয়ারি ছিল, উনি যেখানেই দাঁড়াবেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে দলের ছাত্র-যুবরা। তাঁর যেমন বলা, তেমনই কাজ। তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ঘাসফুল শিবিরের সৈনিক যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। ধারে-ভারে তাঁর চেয়ে ঢের বেশি হলেও বিজেপি প্রার্থীকে বেশ তাচ্ছিল্যই করছেন দেবাংশু। বলছেন, ''প্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে কম ওজনের অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।একেব্বারে হালকা! প্রার্থী হিসেবে রেখা পাত্র অনেক বেশি এগিয়ে।'' তমলুক থেকে নিজের জয় নিয়েও কোনও সংশয়ই নেই, 'সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল'কে একান্ত সাক্ষাৎকারে তাও বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই জানালেন তরুণ প্রার্থী।
তমলুকে লোকসভার লড়াই যথেষ্ট জমজমাট। ফাইল ছবি।
তৃণমূল বরাবর তরুণ প্রজন্মকে গুরুত্ব দিতে আগ্রহী। দলীয় কাজে দায়িত্ব কিংবা সংগঠনের ক্ষেত্রে এগিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা প্রশংসনীয় নিঃসন্দেহে। এমনকী লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election 2024) মতো বড় ময়দানেও তিনি তরুণদের উপর ভরসা করেন অনায়াসে। তাই তো দেবাংশু ভট্টাচার্যকে (Debangshu Bhattacharya)অন্যান্য নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী না করে তিনি একেবারে লোকসভার লড়াইয়ে পাঠিয়েছেন। আর সেই দেবাংশু নিজের জয়ের ব্যাপারে একেবারে ১০০ শতাংশ আত্মবিশ্বাসী। 'সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে' সেই আত্মবিশ্বাসই ঝরে পড়ল তাঁর গলায়। বললেন, ''রেকর্ড করে রাখুন, তমলুক লোকসভা তৃণমূল জিতে গিয়েছে।''
[আরও পড়ুন: পঞ্চম দফায় ৪৯ আসনে নির্বাচন, গেরুয়া গড়ে মোদিকে ধাক্কা দেওয়াই লক্ষ্য বিরোধীদের]
কিন্তু প্রতিপক্ষ তো একসময়ের জাঁদরেল বিচারপতি, বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। তাঁর জনপ্রিয়তা তো কম নয়। অন্যদিকে, আবার বাম প্রার্থী তরুণ আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও প্রচার ময়দান কাঁপাচ্ছেন বেশ। নাঃ তাঁকে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না দেবাংশু। বিশেষত অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর প্রশ্ন, ''তিনি রাজনীতি কদিন করছেন? টিকিট পাওয়ার কদিন আগে বিজেপিতে (BJP) এসেছেন। তিনি কী বোঝেন রাজনীতির? তাও তো রেখা পাত্ররা একটা আন্দোলন করেছেন, যতই সেটা ভুয়ো আন্দোলন হোক। কিন্তু আদালতে বসে তৃণমূল বিরোধী কথা বলা ছাড়া ওঁকে কে কী কারণে চেনেন? আমি রেখা পাত্রর সঙ্গে তুলনা করছি না! কিন্তু রেখা পাত্র রাজনীতিকভাবে, প্রার্থী হিসেবে ওঁর চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে। পলিটিক্যাল ওয়েট হিসেবে সবচেয়ে কম ওজনের অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ প্রার্থী হলে, তাঁদের হেভিওয়েট বললে ঠিক ছিল। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় একেব্বারে হালকা! টিকিটের জন্য তিনি জাজমেন্ট বিক্রি করেছেন। ওঁর এজলাস গঙ্গাজল দিয়ে ধোয়া উচিত। উনি রাজনীতিক অভিজ্ঞতায় শিশু। ওঁর চেয়ে সায়নের অভিজ্ঞতাও বেশি। আমার তো ৬ বছরের অভিজ্ঞতা।''
[আরও পড়ুন: লক্ষ্য বাঙালি ভোট! এবার মোদির বারাণসীতে ভোট প্রচারে বঙ্গ বিজেপি]
নিজের জয় নিয়ে দেবাংশুর দাবি, ''উনি যা করেছেন, সেটাও একটা দুর্নীতি। আমি জিতব। কারণ, আমার নামে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। মানুষ সততার পক্ষে রায় দেবেন আশা করি। তমলুকে সবুজ ঝড় উঠবে। পৃথিবীতে কোনও কিছু নিশ্চিত নেই। সূর্য ওঠা-অস্ত যাওয়া আর মাথার উপরে ভগবান ছাড়া কোনও কিছু নিশ্চিত না। আমার জয় নিয়েও প্রশ্ন উঠতেই পারে। কিন্তু এই আসনে মানুষ আমাকে ভোট দেবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে উন্নয়নের পক্ষে মানুষ ভোট দেবেন বলেই আমি জিতব। উনি দিল্লি যাবেন কেন? উনি তো ভোটে হারছেন।''