ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: নির্বাচনী বিধি জারির পরেও কীভাবে পদক্ষেপ? সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থীর। ভোটের মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ঠিক কী পদক্ষেপ করা উচিত, সে সংক্রান্ত গাইডলাইন পেশের আর্জিও জানিয়েছেন মহুয়া।
মহুয়ার (Mahua Moitra) বিরুদ্ধে প্রথম টাকার বদলে প্রশ্ন করার অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনিই তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে স্পিকারকে চিঠি লেখেন। লোকপালকেও চিঠি লেখেন তিনিই। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই মহুয়ার বিরুদ্ধে এথিক্স কমিটিকে তদন্তের নির্দেশ দেন স্পিকার ওম বিড়লা। দুবের অভিযোগের ভিত্তিতেই শেষ পর্যন্ত সাংসদ পদ হারান তৃণমূলের দাপুটে নেত্রী। মহুয়ার বিরুদ্ধে ইডি আগে থেকেই তদন্ত করছে। বিজেপি (BJP) সাংসদ নিশিকান্ত দুবের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৯ মার্চ তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তের ভার দেন লোকপাল।
সেই সঙ্গে নির্দেশ দেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যে সিবিআইকে এই মামলায় প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে হবে। মহুয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন লোকপাল। সেই নির্দেশ মতো দুর্নীতি দমন আইনেই বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে সিবিআই। আর তার পরই শনিবার মহুয়া মৈত্রর চার ঠিকানায় তল্লাশি চালায় সিবিআই। আলিপুরের ‘রত্নাবলী’ নামে এক আবাসনে যায় সিবিআই। ওই ফ্ল্যাটেই থাকেন ব্যবসায়ী ডি এল মৈত্র। তিনি সম্পর্কে মহুয়ার বাবা। এছাড়া কৃষ্ণনগর ও করিমপুরের বাড়ি এবং দলীয় কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় সিবিআই।
[আরও পড়ুন: গাড়িতে রক্তের দাগই ধরিয়ে দিল ‘খুনি’কে! ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিউ টাউনে ট্রলি ব্যাগে দেহ রহস্যের কিনারা]
সেই তল্লাশি অভিযান নিয়েই নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেন মহুয়া মৈত্র। সিবিআই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাঁর দাবি, কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সিবিআই। নির্বাচনী আচরণবিধি লাগুর পরেও কীভাবে সিবিআই তল্লাশি চালানো হচ্ছে, প্রশ্ন তোলেন তিনি। মহুয়ার আরও দাবি, সিবিআই তল্লাশির জেরে ভোটপ্রচার ব্যাহত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ভোটের মুখে সিবিআই তল্লাশি জনমানসে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও দাবি মহুয়ার। কমিশনকে তাঁর আর্জি লোকসভা ভোটের মুখে সিবিআই কীভাবে পদক্ষেপ করবে, সে সম্পর্কিত গাইডলাইন প্রকাশ করা হোক।
দ্বিতীয়ত, নির্বাচনী আচরণবিধি (Lok Sabha Elections) লাগু থাকাকালীন সিবিআই কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে যাতে গ্রেপ্তারির মতো কড়া পদক্ষেপ করতে না পারে সিবিআই, সে সম্পর্কিত গাইডলাইনও প্রকাশ করতে হবে কমিশনকে। তৃতীয়ত, সিবিআইয়ের গতিবিধি সম্পর্কিত আর কোনও জরুরি গাইডলাইন প্রকাশ করতে হলে, তাও যেন কমিশন জারি করে, সেই আর্জি জানান কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী। এদিকে, সিবিআই তল্লাশি নিয়ে শুরু জোর রাজনৈতিক তরজা। দুর্নীতির অভিযোগ করায় বিজেপি মহুয়াকে টার্গেট করেছে বলেই দাবি তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের। কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে তিনি জানান, মহুয়া মৈত্রকে গ্রেপ্তার করা হলেও তিনি জেল থেকে লড়বেন এবং জিতবেন।