মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: নাম তাঁর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মায়ের নামে। 'মেয়ে' মমতাকে খুব ভালোবাসতেন। এবারের নির্বাচনে ইচ্ছে ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকেই ভোট দেবেন। কিন্তু শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না। তাই ভোট দিতে যেতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। ভাগ্যক্রমে তিনি পোস্টাল ব্যালটের সুবিধা পেয়ে যান। শুক্রবার পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটও দেন বাড়িতে বসেই। কিন্তু তার পরই ঘটে গেল সেই ঘটনা! ভোট দেওয়ার ঠিক দশ মিনিটের মধ্যেই জগৎবল্লভপুরের ওই বৃদ্ধার তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন! বিস্ময়কর এই ঘটনাটি ঘটেছে জগৎবল্লভপুরের সিংহবাহিনী গ্রামে। বৃদ্ধার মৃত্যুতে পরিবার শোকস্তব্ধ হলেও তাঁর শেষ ইচ্ছা পূরণ হওয়ায় খুশি তাঁরা।
প্রায় বছর নব্বইয়ের গায়ত্রী মুখোপাধ্যায় বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ভুগছিলেন। তিনি কার্যত শয্যাশায়ী ছিলেন। মাঝেমধ্যেই শ্বাসকষ্টে ভুগতেন। তবে কথাবার্তা বলতে পারতেন। এবারের লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election 2024) ঢাকে কাঠি পড়তেই তিনি অন্যবারের মত মেজো ছেলে স্বপন মুখোপাধ্যায়কে জানান, এবার তিনি ভোট দিতে চান। তিনি প্রশাসনের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এবছর নির্বাচন কমিশন (Election Commission) প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বাড়িতে গিয়ে পোস্টাল ব্যালটে ভোট গ্রহণ করবে। স্বপনবাবু কালবিলম্ব না করে জগৎবল্লভপুরের বিডিও অফিসে যোগাযোগ করেন। প্রশাসনও তাদের বাড়িতে গিয়ে গায়ত্রী দেবীর ভোটগ্রহণ করবে বলে জানায়।
[আরও পড়ুন: অনুরাগ কাশ্যপের ছবিতে ঋদ্ধি সেন, ফের বলিউড সিনেমায় অভিনেতা!]
উলুবেড়িয়া জেলা প্রশাসনের তরফে শুক্রবার দুপুরে বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বেলা একটা নাগাদ প্রশাসনিক আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতে আসেন ও গায়ত্রী দেবীর ভোটগ্রহণ করেন। বৃদ্ধার নাতনির সহযোগিতায় ১২-ডি ফর্মের তিন জায়গায় বাঁ হাতের বুড়ো আঙ্গুলে টিপ সই দেন গায়ত্রী দেবী। প্রসঙ্গত তিনি আধিকারিকদের সামনেই জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে ভোট দেবেন বলে জানান। শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের (Serampore) তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দেন গায়ত্রী দেবী। ছেলে স্বপন মুখোপাধ্যায় বলেন, "মা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamta Banerjee) ভালোবাসতেন। বলতেন, মেয়েটা খুব ভালো। তাকেই আমার পছন্দ। তাই কোথায় ভোট দিতে চাও প্রশ্ন করতেই তিনি বলতেন, মমতার দলকে। আজ ভোট দেওয়ার পর নাতনির হাতে এক গ্লাস জল খান। তার পরেই মায়ের মৃত্যু হয়।"