সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বয়স্ক মা-বাবার দেখভাল করার অর্থ তাঁদের দয়া করা নয়। এটা সন্তানদের আইনি বাধ্যতা। এক মামলায় এমনই মন্তব্য করল কর্নাটক হাই কোর্ট।
দক্ষিণী রাজ্যটির বাসিন্দা কবিতা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর বাবা রাজাশেখরা অধুনা মৃত হলেও বর্তমান রয়েছেন মা নির্মলা। কবিতার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল যোগেশের। তাঁরা কর্নাটকের তুমাকুরু জেলার বাসবপাটনা গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে রাজাশেখরা মেয়ে কবিতাকে সমস্ত সম্পত্তি উপহার দেন লিখিত ভাবে। পরে তিনিই মেয়ে-জামাইয়ের বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হন। অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের কাছে তাঁর অভিযোগ ছিল, বাড়ি তৈরি করতে ১০ লক্ষ টাকা তাঁর কাছ নিয়ে নিয়েছিলেন কবিতা-যোগেশ। কিন্তু পরে তাঁকে জোর করা হচ্ছিল সম্পত্তি বিক্রি করতে।
[আরও পড়ুন: প্রায় সাড়ে এগারো কোটি নাগরিকের প্যান কার্ড বাতিল করল কেন্দ্র, আপনারটা নেই তো?]
পরে কবিতা ও যোগেশ দাবি করেন, রাজাশেখরা ও নির্মলার চিকিৎসার জন্য ৩০ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন তাঁরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার লক্ষ করেন, যে লিখিত চুক্তি করা হয়েছিল, তাতে রাজাশেখরার তরফে শর্ত আরোপ করা হয়েছিল যে, কবিতাকে বাবার দেখভালও করতে হবে। পাশাপাশি তিনি এও জানতে পারেন, জামাই ও মেয়ে রাজাশেখরাকে মারধর করেন। এমনকী, তাঁদের বাড়ি থেকেও বের করে দিয়েছিলেন। পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সেই উপহারের চুক্তি তিনি বাতিল করে দেন।
এই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে কবিতা ও যোগেশ আদালতের (Karnataka HC) দ্বারস্থ হন। তাঁদের সাফ কথা, রাজাশেখরাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর বহু অর্থ খরচ হয়েছে। তাই তাঁদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আদালতও রায় দিয়েছে তাঁদের বিপক্ষেই। প্রথমে সিঙ্গল বেঞ্চ, আর এবার ডিভিশন বেঞ্চও জানিয়ে দিল, কবিতা ও যোগেশের চুক্তি বাতিলই থাকবে। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, ”মা ও বাবার দেখাশোনা করা কোনও দয়ার বিষয় নয়, এটা দায়বদ্ধতা। আইনগত বাধ্যবাধকতা।”