নির্মল ধর: ছবির মুখবন্ধেই গান ‘গল্প তোমাদের শোনাব আজ’। এবং শেষেও মধুমন্তীর গাওয়া অশরীরীদের নিয়ে আরও একটি গান। মাঝখানে ‘সব ভুতুড়ে’র গপ্পো। বিরসা দাশগুপ্ত পরপর তিনটি ছবিতে নানা জঁর নিয়ে যেন পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন। অবশ্য না চালিয়ে উপায়ই বা কী! দর্শক যে কোন বস্তুটি তাঁর থেকে সাপটিয়ে খাবে-এখনও তিনি বুঝে উঠতে পারেননি যে! অগত্যা গোয়েন্দা, মারপিট, প্রেমের পর এবার প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটির তাকে হাত রাখা!
[বিয়ের আগেই গর্ভবতী! গুজবের কী জবাব দিলেন রিয়া?]
কিন্তু এই অদ্ভুতুডে় ভুতুড়ে মার্কা গপ্পো তেলো চেটে দর্শক খাবে এমন কোনও ইশারা বা ইঙ্গিত ছবিতে নেই। বিজ্ঞান ও ষুক্তির সঙ্গে চিত্রনাট্যকার কল্লোল লাহিড়ি অবৈজ্ঞানিক আষাঢ়ে ও ভূতের গপ্পের এক বিষম ককটেল বানিয়েছেন। গাঁয়ের স্কুলের ‘দখল’ নেওয়ার জন্য আত্মীয় মাস্টারমশাইকে (বিশ্বজিৎ) প্যাঁচে ফেলার ব্যাপারটায় রবীনের (কৌশিক) পরিকল্পনা অদ্ভূতুড়ে লাগলেও যুক্তিতে টিকে যায়। কিন্তু নন্দিনীর (সোহিনী) অস্তিত্ব নিয়েও তো প্রশ্নের মীমাংসা হয় না। সেই-ই কি প্যারানরমাল জীব? এর কোনও বাস্তব ব্যাখ্যা ছবিতে নেই। যেমন অবাস্তব ও সমাধানহীন থাকে কিশোরী মিনির (ইদা) মৃত্যু। নন্দিনীর ভয়ংকর শক্তি হল, সে ভূত দেখতে পায়। তাঁর এই ভূত দেখতে পাওয়া নিয়েই চরসখুরি গল্প। ‘সব ভূতুড়ে’ পত্রিকার অফিসে প্রয়াত সম্পাদকের তদ্বিরি চিঠি নিয়ে নন্দিনী আসে বর্তমান মালিক অনিকেত (আবির) এবং সম্পাদক কৃপাধরের (সুপ্রিয়) কাছে। একটু পরেই উপস্থিত হন স্কুলের মাস্টারও। তাঁর অনুরোধ ভূতের হাত থেকে গ্রামের একমাত্র স্কুলটাকে বাঁচান প্লিজ। ভূতের তথ্যানুসন্ধানে অভিজ্ঞ মালিক-সম্পাদক-সহকারী নন্দিনী রওনা হন কোনও এক কুসুমপুর গ্রামের দিকে। তাঁদের গাইড সেই ভূত দেখা মানবী নন্দিনী। পরিচালক যে এই চরিত্রটার উপস্থিতি দিয়ে কী বোঝাতে চাইলেন সেটা না বোঝাই রয়ে গেল!
[প্রসেনজিতের ‘ইয়েতি অভিযান’ ট্রেলার দেখে কী বললেন আমির?]
তবে হ্যাঁ, সিচ্যুয়েশন তৈরিতে সাধারণ দর্শকের মধ্যে ভীতি এবং রহস্য জাগিয়ে তোলার কাজে বিরসা সফল। নাটক অতিনাটক ভূতুড়ে ‘নাটক’ তৈরিতে তিনি সম্পাদক এবং বিশেষ করে সুরকার শুভ প্রামাণিকের কাছ থেকে প্রভূত সাহায্য পেয়েছেন। চিত্রগ্রহণে গৈরিক সরকারের কাজও ভাল। অভিনয়ে আবির কিন্তু এবার তাঁর ম্যানারিজমের চৌহদ্দিতে আটকে পড়ছেন, বলতেই হচ্ছে। ব্যোমকেশ, ফেলুদা থেকে তেমন কোনও ডিপারচর চোখে পড়ল না। আবির, এবার একটু ভাবুন প্লিজ! সোহিনীর গেট আপে, ক্যামেরায় তাঁকে ধরার কোরিওগ্রাফিতে ‘অদ্ভূতুড়ে’ ব্যাপারটা কোনও বাড়তি কোশেন্ট দিয়েছে কি? ওঁর অভিনয় একেবারেই নিজের নয়, পরিচালকের ইচ্ছেয় করা! সত্যি বলছি ভাল লাগেনি। ইদা হয়েছে মিনি। ওর চোখ দুটো খুবই ইম্প্রেসিভ এবং এক্সপ্রেসিভ, অনেকটাই মা বিদীপ্তার মতো। অম্বরীশ ভট্টাচার্য (টাইটেল কার্ডে বন্দ্যোপাধ্যায় কেন!) কি এবার হাফ কমেডিয়ান হয়েই থাকবেন?
বিরসার এই ছবি, সত্যি বলতে এখনও পরীক্ষার পর্যায়েই রইল। সব ভূতুড়ে নাকি সবটাই ভূতুড়ে? পাশ ফেলের ব্যাপারটা বলবেন দর্শক।
The post সব ভূতুড়ে নাকি সবটাই ভূতুড়ে? কেমন হল বিরসার ছবি? appeared first on Sangbad Pratidin.