সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সপ্তমে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। এবার সরাসরি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যদের বেতন বন্ধের হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালের কথা শুনে বিশ্ববিদ্য়ালয় চালালে ‘আর্থিক অবরোধ’ তৈরি করতে পিছপা হবেন না। সাফ জানিয়ে রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আক্ষেপ, রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচিত সরকারের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বারবার বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্যকে।
মঙ্গলবার ধনধান্য স্টেডিয়ামে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে সরব হন তিনি। রাজ্যেরের প্রশাসনিক প্রধানের অভিযোগ, রাতারাতি উপাচার্য বদলে ফেলা হচ্ছে। যারা শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত নয়, তাঁদের উপাচার্য পদে বসানো হচ্ছে। যাদবপুরের উপাচার্য পদে বিজেপির কোনও সভাপতিকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর। এরপরই নাম উল্লেখ না করে মমতার হুঁশিয়ারি, “কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নির্দেশ (রাজ্যপালের নির্দেশ) মেনে চললে আর্থিক বাধা তৈরি করব। দেখি, কোন উপাচার্যকে বেতন কে দেয়? উনি শুধু নিয়োগপত্র দিতে পারেন, বেতন দিই আমরাই।” প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বেতন দেয় রাজ্য সরকার। এবার সেই বেতন বন্ধেরই হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: অবিলম্বে ছাত্রভোট করাতে হবে, রাজ্যকে নির্দেশ হাই কোর্টের]
রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের পিছনে ষড়যন্ত্র দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, শিক্ষাব্যবস্থাকে স্তব্ধ করে দেওয়ার চক্রান্ত করেছেন রাজ্যপাল। এই চক্রান্ত আমরা মানব না। উনি নিজেকে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ে বড় ভাবছেন। এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি, এভাবে চলতে থাকলে অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। দেখি, কে চালায়!” প্রয়োজনে রাজভবনের সামনে ধরনায় বসার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের প্রশাসনিক ও সাংবিধানিক প্রধানের এধরনের সংঘাত নজিরবিহীন বলে দাবি করছে ওয়াকিবহাল মহল।
প্রসঙ্গত, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে নাম না করে সিভি আনন্দ বোসকে গোপাল ভাঁড় বলে কটাক্ষ করেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। অভিযোগ, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করছেন রাজ্যপাল। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে শিক্ষাদপ্তরের নির্দেশ মেনে কাজ করার দরকার নেই বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন রাজ্যপাল। সেই বিজ্ঞপ্তিকে আইন-বিরুদ্ধ ঘোষণা করে সোমবার পালটা নির্দেশিকা জারি করল উচ্চশিক্ষা দপ্তর। এবার সরাসরি আর্থিক অবরোধের হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: হস্টেল ছাড়তে হবে প্রাক্তনীদের, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে সময় বেঁধে দিল হাই কোর্ট]