সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ষক কেন ছাড় পাবে? তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে কামদুনি প্রসঙ্গ তুলে হাই কোর্টের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তাঁর দাবি, কামদুনির ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকার ফাঁসি চেয়েছিল। আর জি কর কাণ্ডেও সময়োপযোগী পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু বিজেপি লাশের রাজনীতি করছে। সুবিচারের দাবি থেকে আন্দোলনকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, কামদুনি কাণ্ডে কীভাবে দোষীদের শাস্তির দাবিতে অগ্রণী ছিল রাজ্য সরকার। তিনি বলেন, "কামদুনির ক্ষেত্রে আমরা ফাঁসি চেয়েছিলাম। এখনও দেখি অনেককে চোর-ডাকাতকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তেমন কামদুনির ফাইলও আমার কাছে আসে। বলা হয়, ১০ বছরের বেশি হয়ে গিয়েছে এবার ছেড়ে দেওয়া হোক। আমি বলি কেন ছাড়ব? ধর্ষক কেন ছাড় পাবে?" মমতার সাফ কথা, "ধর্ষকের একমাত্র শাস্তি ফাঁসি। সেটা হলেই একমাত্র এই ধরনের অপরাধ বন্ধ হতে পারে।"
[আকও পড়ুন: ধর্ষণ রুখতে কড়া আইন, মোদি সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিষেক বললেন, ‘দরকারে আমি বিল আনব’]
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৭ জুন। কামদুনিতে গণধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে ওই তরুণীকে টেনেহিঁচড়ে পাঁচিলঘেরা পরিত্যক্ত একটি জায়গায় নিয়ে যায় ৯ দুষ্কৃতী। সেখানে দুষ্কৃতীরা ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে, নৃশংসভাবে অত্যাচার করা হয়। ওই অপরাধের কয়েকদিনের মধ্যেই ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে রাজ্য পুলিশ। ২২ দিনের মাথায় দেওয়া হয় চার্জশিট। প্রথমে আদালত ৩ জনকে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়। আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ৩ জনকে। কিন্তু পরে সেই ফাঁসির সাজা মকুব হয়ে যায় হাই কোর্টেরই রায়ে। বাকিদেরও শাস্তি কমিয়ে দেওয়া হয়। কামদুনিকাণ্ডের মতো নৃশংস ঘটনার পরও ফাঁসি না হওয়ায় অনেকেই অবাক হন। এবার ঘুরিয়ে সেই রায় নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: বন্ধের বিরোধিতায় জনস্বার্থ মামলা খারিজ হাই কোর্টে, মামলাকারীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা]
একই সঙ্গে এদিন বনধ সংক্রান্ত মামলাতেও হাই কোর্টের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য," মহারাষ্ট্রের বদলাপুর কাণ্ডের পর বিরোধীরা বনধ ডাকলে, সেই বনধ বাতিল করেছে হাই কোর্ট। একইভাবে কেরল হাই কোর্টও বনধ বাতিল করেছে। অথচ কলকাতা হাই কোর্ট বাতিল করেনি। এবার সময় এসেছে একটু সজাগ হন।" মমতার বক্তব্য, "কোনও বিচারককে নিয়ে আমি কিছু বলব না। কিন্তু আইনজীবী হিসাবে রায় নিয়ে বলার অধিকার আমার আছে। সাধারণ মানুষ যেন আদালতে গিয়ে সুবিচার পায়। বিচারের বাণী যেন নিভৃতে না কাঁদে।"