ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তোলা ইস্যুতে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে (Mahua Moitra) নিয়ে এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতি তোলপাড়। সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে দলের কী অবস্থান, তা এতদিনে বিশেষ স্পষ্ট হয়নি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কুণাল ঘোষরা আপাতভাবে মহুয়াকে লড়াইয়ে বার্তা দিলেও দল ঠিক কতটা তাঁকে সমর্থন দিচ্ছে, আদৌ দিচ্ছে কি না, এসব নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। এবার তাঁকে নিয়ে মুখ খুলে তা স্পষ্ট করে দিলেন স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের মেগা বৈঠকে তাঁর সাফ বক্তব্য, ”এদের প্ল্যান মহুয়াকে তাড়িয়ে দেওয়া। আরে তাতে তো ওই জনপ্রিয় হয়ে যাবে তিন মাসের জন্য। যেটা ভিতরে বলতো সেটা এখন বাইরে বলবে। রোজ সাংবাদিক সম্মেলন করবে। হয়ে গেল। কী যায় আসে এসবে? মূর্খ না হলে ভোটের তিন মাস আগে কেউ এই জিনিস করে।”
শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির থেকে টাকা নিয়ে সংসদে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন মহুয়া মৈত্র, এই অভিযোগে সম্প্রতি তাঁর বিরোধিতায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছিল বিজেপি। সংসদের এথিক্স কমিটি (Ethics Committee)তড়িঘড়ি তাঁকে ডেকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাঁর সাংসদ পদ বাতিলের সুপারিশে সিলমোহরও দিয়েছে এথিক্স কমিটি। তবে এ বিষয়ে আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে (Winter Session of Parliament) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ডিসেম্বরের ৪ তারিখ থেকে শুরু হবে অধিবেশন। চলবে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যেই মহুয়াকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
[আরও পড়ুন: শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, বাণিজ্য সম্মেলনে কোন খাতে কী পেল বাংলা?]
এই পরিস্থিতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা ছিল, লড়াই নিজেকেই লড়তে হবে। দলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্যও একই ছিল। মহুয়া নিজেই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় যা পদক্ষেপ নেওয়ার, তা নিচ্ছেন। এনিয়ে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী কৃষ্ণনগরের সাংসদ। হুঙ্কারের সুরে বলেছিলেন, ”আমার সাংসদ পদ বাতিল হলেও পরেরবার দ্বিগুণ ভোটে জিতে ফিরব।”
[আরও পড়ুন: নগরোন্নয়ন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নামে জালিয়াতি! ৩৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে গ্রেপ্তার ২]
এবার কার্যত তাঁর পাশেই দাঁড়ালেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং আরও সুর চড়িয়ে তাঁর বক্তব্য, এদের প্ল্যান মহুয়াকে তাড়িয়ে দেওয়া। আরে তাতে তো ওই জনপ্রিয় হয়ে যাবে তিন মাসের জন্য। যেটা ভিতরে বলতো সেটা এখন বাইরে বলবে। রোজ সাংবাদিক সম্মেলন করবে। হয়ে গেল। এর পরই তাঁর খোঁচা, ”কী যায় আসে এসবে? মূর্খ না হলে ভোটের তিন মাস আগে কেউ এই জিনিস করে?” তাঁর এই বক্তব্যে যেন মহুয়ার আত্মবিশ্বাসেরই প্রতিফলন। ওয়াকিবহাল মহলের একাশের মত, চব্বিশের নির্বাচনে দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য সৈনিককে ফের লড়াইয়ের ময়দানে নামাবেন তৃণমূল নেত্রী।
দেখুন ভিডিও: