সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পায়ে ব্যথা গত প্রায় ২০ দিন ধরে। তবে মনের জোরের কাছে হার মেনেছে সেই শারীরিক যন্ত্রণা। তাই ১৪ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ – এতগুলো দিন টানা প্রচার করে গিয়েছেন হুইলচেয়ারে বসে, জেলায় জেলায় ঘুরে। আগামী ১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় নন্দীগ্রামে (Nandigram) ভোট। তার আগে মঙ্গলবারই ছিল প্রচারের শেষদিন। ওইদিন বিকেলে নন্দীগ্রামের টেঙ্গুয়া মোড়ের জনসভাই ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ সভা। সমাপ্তির সময় মঞ্চে বেজে ওঠে জাতীয় সংগীত। সঙ্গে সঙ্গে প্রায় প্রতিবর্ত ক্রিয়ার টানেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ক্ষণিকের জন্য ভুলেই গিয়েছিলেন, তিনি আহত, তাঁর পায়ে আঘাত। যদিও তারপর সকলের সাহায্য নিয়ে এক পায়েই কোনওক্রমে উঠে দাঁড়ান। গলা মেলান ‘জনগণমন অধিনায়ক’এর সুরে।
গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে মনোনয়ন পেশের পর মন্দির দর্শনে গিয়ে বাঁ পায়ে চোট পান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর প্রায় ২ দিন হাসপাতালে ভরতি থাকার পর তিনদিন পরই তিনি হুইলচেয়ারকে সঙ্গী করে জেলায় জেলায় নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়েছিলেন। তাঁকে দেখা গিয়েছিল ব্যতিক্রমী রূপে। সভামঞ্চের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে দাপিয়ে বেড়িয়ে ভাষণ দেওয়ার পরিচিত দৃশ্যে বদল এসেছিল।মমতাকে দেখা গিয়েছিল, মঞ্চের একটি জায়গায় হুইলচেয়ারে বসে বক্তব্য রাখতে। কখনও বা তীব্র যন্ত্রণার প্রকাশ ঘটে গিয়েছে তাঁর মুখের রেখায়। তবে গত কয়েকদিনে তাঁকে এভাবেই দেখতেই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন সবাই। বিরোধীরা আবার এ নিয়ে কুকথা বলতেও ছাড়েনি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষই বলেছিলেন, ”শাড়ি পরে পা দেখাচ্ছেন, তার চেয়ে বারমুডা পরে পা দেখান।” অর্থাৎ তাঁদের অনেকের ধারণা, ভাঙা পা নিয়ে হুইলচেয়ারে ঘোরা আসলে ‘নাটক’। কিন্তু ধারণা ভুলও প্রমাণিত হয়। এক্ষেত্রেও হল।
[আরও পড়ুন: দাবদাহের মাঝেই সুখবর, চলতি সপ্তাহে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া, নামবে বৃষ্টিও]
শনিবার পড়ন্ত বিকেলে সকলে দেখলেন, মঞ্চে জাতীয় সংগীত বেজে ওঠার পরই হুইলচেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি। তা দেখে আশপাশ থেকে ছুটে আসেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষী, দলের সতীর্থরা। দোলা সেন, সুব্রত বক্সিরা তাঁকে ধরে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু নেত্রী বেশ চাঙ্গা। তবু কোনওক্রমে ভাঙা পা স্ট্যান্ডের উপর রেখে ডান পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন, ফের উঠে দাঁড়াবেনই তিনি।