কিংশুক প্রামাণিক: ‘জনগর্জন সভা’ ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে তিনি পথে। স্বভাবতই আজ বাড়তি মাত্রা পেয়ে গিয়েছে পুরুলিয়ার পরিষেবা প্রদান সমাবেশ। ১০ মার্চ ব্রিগেড। আচমকা কেন সেই সমাবেশ ডাকা হল সেই বার্তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ দিতে পারেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। একই সঙ্গে আজই সভামঞ্চ থেকে ১০০ দিনের কাজ করেও টাকা না পাওয়া শ্রমিকের হাতে চেক তুলে দিয়ে কেন্দ্র-বিরোধী জেহাদ আরও তীব্র করে তুলবেন মুখ্যমন্ত্রী। মনে রাখতে হবে ব্রিগেড সভার অন্যতম প্রধান ইস্যু করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা।
সোমবারই দুর্গাপুর আসেন মমতা। মঙ্গলবার পুরুলিয়া শহরে দুপুর ১২টায় পরিষেবা প্রদান সভা। সরকারের ঘোষণামতো সোমবার থেকেই জেলায় জেলায় ১০০ দিনের বকেয়ার চেক পেতে শুরু করেছে মানুষ। আজ মঞ্চ থেকে দুজনের হাতে চেক দিয়ে রাজ্য সরকারের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন মুখ্যমন্ত্রী। বহু ইতিহাসের মাটি মানভূম দিয়ে শুরু হচ্ছে মমতার এবারের জঙ্গলমহল সফর। তিন দিন তিন জেলায় তাঁর মিটিং। বিরাট কর্মযজ্ঞ। কয়েক হাজার কোটি টাকার পরিষেবা। বুধবার বাঁকুড়ার খাতড়া ও বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম শহরে হবে সভা।
[আরও পড়ুন: নাবালিকাদের আটকে দেহব্যবসা! ‘আমাদের বাঁচাও’, ফ্ল্যাটের জানলা দিয়ে আর্তনাদ নির্যাতিতাদের]
একসময় এই তিন জেলায় মাওবাদীদের দাপটে প্রতিদিন রক্ত ঝরত। সাধারণ মানুষের জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। বাংলায় পরিবর্তন আসার পর জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরান মমতা। সিপিএমকে সরিয়ে তৃণমূলের একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি হয়। কিন্তু গত লোকসভা ভোটে এই তিন জেলার চার আসনই বিজেপি জিতে নেয়। যদিও বিধানসভা নির্বাচন থেকে পঞ্চায়েত ভোট, জঙ্গলমহলের পরিবেশ ফের বদলাতে শুরু করে। তৃণমূল আবার জমি ফিরে পায়। আদিবাসী ও মাহাতো ভোটের সমর্থন অনেকটাই হারায় বিজেপি।
ঠিক এই প্রেক্ষাপটের উপর দাঁড়িয়ে লোকসভা ভোটের মুখে মুখ্যমন্ত্রী নিজের সমর্থনের ভিতকে আরও পোক্ত করতেই আসছেন বলে মনে করা হচ্ছে। আজ পুরুলিয়ায় শিল্পায়নের নানা চমক থাকবে। প্রকল্পের সুবিধা-সহ একগুছ উদ্বোধন ও শিলান্যাস কর্মসূচি রয়েছে। মার্চের শুরুতে কয়েক দফায় রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ৮ মার্চ তাঁর বারাসতে সভা। তার দুদিন পর ১০ মার্চ মমতার ব্রিগেড। পালটা চালে বিজেপি ব্যাকফুটে। তার আগে জঙ্গলমহলে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর। একদিকে যেমন ৪২ আসনে একার লড়াই, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা, এজেন্সির দৌরাত্ম্য থেকে সন্দেশখালি, সবের বিরুদ্ধে বার্তা থাকবে ব্রিগেডে। শুরু হয়েছে রেকর্ড সমাবেশের প্রস্তুতি। স্বাভাবিকভাবেই আজ মমতা কী বলেন সেদিকে সবার নজর।