নন্দিতা রায় ও সোমনাথ রায়, দিল্লি: গ্যাস হামলা থেকে প্রায় গণহারে বিরোধী সাংসদদের সাসপেনশন – চলতি সংসদ অধিবেশন কত কিছুরই না সাক্ষী রইল! সোমবার সংসদের নিরাপত্তা নিয়ে বিরোধীদের শোরগোলের জেরে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ (TMC) মোট ৩৩ বিরোধী সাংসদকে অধিবেশন শেষ হওয়া পর্যন্ত সাসপেন্ড করে দিলেন স্পিকার ওম বিড়লা। এই তালিকায় রয়েছেন তৃণমূলের ৯ সাংসদ, রয়েছেন কংগ্রেস, ডিএমকে সাংসদরাও। আর এই সাসপেনশনের খবর শুনে কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বললেন, ”যা চলছে তা একেবারেই কাঙ্খিত নয়। আমি ভাগ্যবান যে এখন আর সাংসদ নই।”
গত ১৩ তারিখ লোকসভায় ঢুকে গ্যাস হামলা (Gas Attack in Parliament) চালায় কয়েকজন যুবক। ইতিমধ্য ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। নিরাপত্তা বিঘ্নকারী এমন ঘটনার সরেজমিনে তদন্ত চলছে। এদিন সংসদের অধিবেশনের শুরুতেই নিরাপত্তা ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি চেয়ে বিরোধীরা সরব হতেই হইহট্টগোল শুরু হয় দুই কক্ষে। সাসপেন্ড হন কাকলি ঘোষ দস্তিদার, শতাব্দী রায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রতিমা মণ্ডল, অপরূপা পোদ্দার, সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল মণ্ডল, অসিত মাল।
[আরও পড়ুন: মদ্যপের হাতে গাড়ি নয়, বর্ষশেষে ড্রিঙ্ক অ্যান্ড ড্রাইভ রুখতে কড়া ব্যবস্থা]
এনিয়ে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ”সংসদে নিরাপত্তা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছি। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছি। উনি টেলিভিশন চ্যানেলে বক্তব্য রাখতে পারেন, প্রধানমন্ত্রী বিশেষ সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে পারেন আর সংসদ চলছে। এখানে কেন বলবেন না? আর এই দাবি করেছিলাম বলে তৃণমূল ও অন্যান্য বিরোধী দলের সাংসদদের সাসপেন্ড করা হল। বিরোধী কণ্ঠ রোধের এই কাজ অত্যন্ত নিন্দনীয়।”
[আরও পড়ুন: পুলিশ কর্মীর আবাসনে গুলি ছুঁড়ে আটক বায়ুসেনা জওয়ান, আতঙ্ক বারাকপুরে]
এদিকে প্রায় একই সময়ে দিল্লির বঙ্গভবনে সংসদীয় দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেখানেই এই খবর পৌঁছয়। তা শুনে কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। বলেন, ”যা চলছে সংসদে, তা মোটেই কাঙ্খিত নয়। ভাগ্যবান যে আমি আর এখন সাংসদ নই।” এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বৈঠকে হাজির ছিলেন লোকসভা ও রাজ্য়সভার সমস্ত সাংসদ। আর তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, এই বৈঠকে ছিলেন মহুয়া মৈত্রও (Mahua Moitra)। টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে কয়েকদিন আগেই তিনি লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ গোটা দলই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় মহুয়ার এই বৈঠকে থাকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।