সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘স্টার্ট আপ’ বা নতুন কোনও উদ্যোগ৷ ধারণাটি বেঙ্গালুরু বা দিল্লিতে বেশ জনপ্রিয় হলেও এ রাজ্যে এখনও আড় ভাঙেনি৷ কারও অধীনে চাকরি না করে, নিজের যোগ্যতা ও উদ্ভাবনী ক্ষমতার উপর ভর করে নতুন কিছু করে দেখানোই হল ‘স্টার্ট আপ’-এর মূল মন্ত্র৷ এবার রাজ্যের ‘স্টার্ট আপ’-কে উৎসাহ দিতে উদ্যোগী খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সূত্রের খবর, আগামিকাল থেকে শুরু হতে চলা বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন ২০১৭-র অন্যতম আলোচ্য বিষয় হতে চলেছে ‘স্টার্ট আপ’৷ এছাড়াও এবার ‘এমারজিং সেক্টর’ হিসাবে সামুদ্রিক, খনিজ, অচিরাচরিত শক্তি ও সিটি গ্যাসকে রাখা হয়েছে৷ ফোকাস থাকবে উৎপাদনমূলক শিল্প, পরিবহণ, নগর পরিকাঠামো ও আবাসন, বিদ্যুত্ ও পরিকাঠামো, তথ্য-প্রযুক্তি-সহ অন্তত এগারোটি ক্ষেত্রে৷
(একমাসের জন্য বাখরাহাটে জারি ১৪৪ ধারা)
কয়েকটি বিখ্যাত ‘স্টার্ট আপ’-এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন এই সম্মেলন। থাকবে একটি ভারতীয় অনলাইন ট্যাক্সি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা থেকে শুরু করে অনলাইনে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার স্টার্ট-আপও। অংশগ্রহণ করবে কলকাতায় যাত্রা শুরু করা ফাস্ট ফুড চেন যা ছড়িয়ে পড়েছে দেশের আরও ১০টি শহরে। স্টার্ট-আপ নিয়ে ‘সেশন’টি অনুষ্ঠিত হবে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট (আইআইএম), কলকাতার সহযোগিতায়। আইআইএম কলকাতা’র ইনোভেশান পার্কের সিইও মনে করেন পূর্ব ভারতে স্টার্ট-আপ-এর উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সাহায্য করবে এই সম্মেলন। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে স্টার্ট-আপের উপর জোর দেওয়ায় বাংলার ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আয়োজিত বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ তার আগেই সেজে উঠেছে গোটা শহর৷ রাজারহাট থেকে ইকো পার্ক, নবান্ন থেকে মিলনমেলা প্রাঙ্গণ আলোর রোশনাইতে সর্বত্র সাজ সাজ রব৷ এই প্রথম দেশে এইরকম বড় বাণিজ্যিক সম্মেলনের উদ্বোধন করতে চলেছেন রাষ্ট্রপতি৷ আজ সন্ধ্যায় ইকো পার্কে প্রথা মেনে মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে নৈশভোজে থাকবেন আমন্ত্রিত বিশিষ্টরা৷
(সাইবার ক্যাফেতে ৩০০ টাকা দিলেই মিলছে নতুন আধার কার্ড)
শুক্রবারে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্যিক সম্মেলনের উদ্বোধনে রাষ্ট্রপতি ছাড়াও থাকবেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷ রাজ্য প্রশাসনেও সাজ সাজ রব৷ বরাবরই এই সম্মেলন আন্তর্জাতিক রূপ নেয়৷ রাজ্যের অর্থনীতিতে নয়া দিশা রচনা করে৷ এবারও সেই পটভূমি প্রস্তুত৷ বিশ্ববঙ্গ সম্মেলন রাজ্যে বাণিজ্যিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নবদিগন্ত রচনা করেছে৷ কোন কোন বিশিষ্ট শিল্পপতি বা শিল্প সংস্থা আগামিদিনে বাংলায় বিনিয়োগ করতে চলেছে, তাও এই সম্মেলন থেকে উঠে আসবে৷ এ বিষয়ে শেষ মুহূর্তের প্রয়োজনীয় কাজ সারতে ব্যস্ত অর্থমন্ত্রী৷ তাঁর দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় কথা বলেছেন৷ কেন্দ্রীয় সরকারের নোটবন্দির সিদ্ধান্তের পর দেশের অর্থনীতি সাময়িক যে ধাক্কা খেয়েছে, তার প্রেক্ষিতে এবারের বিশ্ববঙ্গ সম্মেলন অন্য মাত্রা পাচ্ছে৷ অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের মত, রাজ্যে বিকল্প শিল্প পথের বার্তা এই সম্মেলন থেকে উঠে আসবে৷ আগামিদিনে রাজ্যে বিনিয়োগের পথ আরও প্রশস্ত হওয়ার ক্ষেত্রে এই বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য৷
গতবার শিল্প সম্ভাবনায় দেশে যথেষ্ট সাড়া জাগিয়েছিল বাংলার শিল্প-বাণিজ্য সম্মেলন৷ প্রকল্প রূপায়ণের দিক থেকে অন্য রাজ্যকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বাংলা৷ বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছিল প্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকার৷ আমেরিকা, ব্রিটেন, ইতালি, স্পেন, জার্মানি-সহ ২৬টি দেশের প্রতিনিধি অংশ নিয়েছিলেন৷ এবার এই তৃতীয় বাণিজ্য সম্মেলনে রাজ্যের স্থায়ী সরকার, আকর্ষণীয় বাণিজ্য-বৃদ্ধি, উন্নত গভর্ন্যান্স ও সামাজিক পরিকাঠামোর অগ্রগতিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে৷ শিল্পক্ষেত্রে গত আর্থিক বছরে রাজ্যে ১০.৫৯ শতাংশ উন্নয়ন বৃদ্ধি পেয়েছে৷ শিল্পে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া কীভাবে সহজ হয়েছে, তা-ও দেখানো হচ্ছে৷ যে কারণে রাজ্য ঘোষণা করেছে, ‘কাম টু বেঙ্গল, রাইড দ্য গ্রোথ’৷ ভোরসাগর গভীর সমুদ্র বন্দর, অমৃতসর-দিল্লি-কলকাতা শিল্প করিডর-এর বিষয়ও তুলে ধরা হচ্ছে৷ বিমানবন্দর থেকে কলকাতার বিভিন্ন স্থানে শিল্প-বাণিজ্য সম্মেলনের তোরণ গড়া হয়েছে৷ এবারের সম্মেলন আধুনিকতার দিক থেকেও ব্যতিক্রমী হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন রাজ্যের আধিকারিকরা৷
(শ্রীনু খুনে হাত রয়েছে দিলীপ ঘোষের, বিস্ফোরক অভিযোগ স্ত্রী পূজার)
The post বাণিজ্য সম্মেলনে এবার মমতার নজর কোন দিকে? appeared first on Sangbad Pratidin.