সুব্রত বিশ্বাস: হাওড়া স্টেশন থেকে দশটি তৎকাল ও প্রিমিয়াম তৎকাল টিকিট-সহ দালালকে গ্রেপ্তার করল আরপিএফের সিআইবি বিভাগের কর্মীরা। অমরনাথ ধানুকা নামে ওই দালালের কাছ থেকে পাওয়া টিকিটগুলিতে যাত্রার দিন হাওড়া থেকে ছিল শনিবারই। তার আগে এই টিকিটগুলি যাত্রীদের কাছে মোটা টাকায় হস্তান্তর করার জন্য এসেছিলেন অমরনাথ। খবর পেয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে আরপিএফ। উদ্ধার ১০টি টিকিটের, মোট মূল্য ৭০ হাজার টাকা। টিকিটগুলি বেঙ্গালুরু, রাজকোট ও চেন্নাইয়ের রিজার্ভ টিকিট বলে আরপিএফ জানিয়েছে।
ওয়েটিং লিস্ট সরাতে যখন তৎপর রেল, ঠিক তখনই সক্রিয় দালাল চক্র। চেন্নাই, কেরল, বেঙ্গালুরু, সুরাটের টিকিট এখন দালালরা তুলে নিচ্ছে দিঘার মতো পর্যটন কেন্দ্রের স্টেশন থেকে। রেল মদত-সহ রেলের বিভিন্ন এক্স হ্যান্ডেলে অভিযোগ উঠেছে এনিয়ে। খড়গপুরের সিনিয়র ডিসিএম অলোক কৃষ্ণা জানিয়েছেন, বেআইনি এই কাজ খতিয়ে দেখে তা বন্ধের ব্যবস্থা করবে দক্ষিণ পূর্ব রেল।
[আরও পড়ুন: খুনের রাজনীতি অব্যাহত! তামিলনাড়ুতে দুষ্কৃতী হামলায় এবার মৃত AIADMK কর্মী]
যাত্রীদের অভিযোগ, দিঘা একেবারে প্রান্তিক ও পর্যটন স্থল। ফলে সেখানে পর্যটকদেরই ভিড় থাকে। সেই সুযোগে স্থানীয় ‘গৌরাঙ্গ’-এর দালাল সিন্ডিকেটের সক্রিয়। তৎকাল টিকিট দেওয়ার আগে সিন্ডিকেটের দশ-বারোজন একেবারে লাইনের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে। কাউন্টার খুলতেই বুকিংবাবু এন্টার মারতেই এদের টিকিট বেরিয়ে আসে। চাহিদা পূর্ণ সংরক্ষিত টিকিট মেলে মাত্র কুড়ি থেকে বাইশ সেকেন্ডের মধ্যে। ফলে লাইনের প্রথম জনের ভাগ্যেই জোটার সম্ভবনাই থাকে। এই টিকিটের সদ্ব্যবহার করতেই কলকাতা থেকে সুদূরে দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
অভিযোগ, পিআরএসের আওতায় সব বুকিং কাউন্টার থেকে পুরনো লোডিং মেশিন তুলে দেওয়া হলেও দিঘার দু’টি কাউন্টারে এখনও এই লোডিং মেশিন চালু রয়েছে। এই মেশিনে তৎকাল টিকিট দেওয়ার সময়ের আগে থেকেই যাত্রীদের নাম, ধাম সব ঢুকিয়ে রাখা যায়। সময় শুরু হলেই শুধু এন্টার টিপলেই বেরিয়ে আসে টিকিট। দালালদের এই বেআইনি কাজ বন্ধ করতেই এই মেশিন তুলে দেওয়া হয়েছে। এখনকার ব্যবহৃত মেশিনে টিকিট দেওয়া শুরু হলে তবেই নাম, ধাম লেখা যায় (আগে লেখা যায় না)। একমাত্র দিঘাতেই ওই পুরনো মেশিন সক্রিয় বলে অভিযোগ। খড়গপুরের সিনিয়র ডিসিএম অলোক কৃষ্ণ এই মেশিন বন্ধ করার প্রতিশ্রুতিও দেন। যাত্রীরা অভিযোগে জানিয়েছেন, প্রতিদিন ওই স্টেশন থেকে অন্তত চারটি এসি ও চারটি স্লিপার টিকিট এভাবেই কেটে নেয় দালাল চক্র। চার হাজারের চারটি টিকিট কম করে ষোল হাজার টাকায় কালোবাজারি করে দালাল চক্র বলে অভিযোগ। এই টিকিট ওই দিনই বাসে কলকাতা চলে আসে বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যের সীমান্ত এলাকার যেসব পরিযায়ী শ্রমিক ভিন রাজ্যে যায়, তাদের কাছেই এই টিকিট মোটা দামে বিক্রি করা হয় বলে জানা গিয়েছে।