সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সময় এগিয়ে গিয়েছে। অনেক বেশি আধুনিক হয়ে গিয়েছি আমরা। জীবনযাত্রায় প্রযুক্তির ছোঁয়া স্পষ্ট। তবে প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা যে এখনও কুসংস্কারের শিকার, তার প্রমাণ মিলল আরও একবার। মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে আবারও দেগঙ্গায় (Deganga) বিনা চিকিৎসায় প্রাণ গেল সাপের কামড় খাওয়া এক যুবকের।
ঠিক কী হয়েছিল? জানা গিয়েছে, দেগঙ্গার কুমরুলি গ্রামের বাসিন্দা রিয়াজুল ইসলামে স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে শুয়েছিলেন। আচমকাই একটি বিষধর সাপ (Snake) তাঁকে কামড়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যেই যন্ত্রণায় প্রায় লাফিয়ে ওঠেন তিনি। অভিযোগ, কষ্ট পেলেও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়নি রিয়াজুলকে। পরিবর্তে ওঝার উপরেই ভরসা রেখেছিলেন পরিজনেরা। তাই তো ওঝাই রিয়াজুলকে সুস্থ করে তোলার জন্য ঝাড়ফুঁক করতে থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলে ঝাড়ফুঁক। ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়তে থাকেন রিয়াজুল। অবস্থা বেগতিক বুঝে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়। তবে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তাতেই সব শেষ। মাত্র ৩২ বছর বয়সেই মৃত্যু হয় রিয়াজুলের।
[আরও পড়ুন: ছেলের অনুপস্থিতির সুযোগে বউমাকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার শ্বশুর]
তবে এই প্রথম নয়। নিছক কুসংস্কারের বশে দেগঙ্গায় এর আগেও প্রাণহানি হয়েছে এক যুবকের। গত শুক্রবার বিকেলে বিলে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন দেগঙ্গার বেঁড়াচাপার বাসিন্দা সমীর। রাতে ফেরার সময়ে তাঁকে একটি বিষাক্ত সাপ কামড়ায়। এরপর কোনওক্রমে বাড়ি ফেরেন তিনি। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করানোর বদলে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যান। তিনি সমীরের উপর ঝাড়ফুঁক করে বিষের প্রভাব কমানোর চেষ্টা করেন। গাছগাছড়ার ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু ক্রমশই নিস্তেজ হতে থাকেন বছর চল্লিশের ব্যক্তি। তা সত্ত্বেও রাতভর চলে ওঝার ঝাড়ফুঁক। বাড়িতে ফিরে ভোররাতের দিকে অসুস্থ বোধ করে সমীর। তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হওয়ায় বিশ্বনাথ পুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁরা বলেন, কিছুক্ষণ আগে আনলে বাঁচানো সম্ভব হতো সাপের কামড়ের শিকার ওই ব্যক্তিকে। একের পর এক এই ধরনের ঘটনায় কার্যত স্তম্ভিত অনেকেই। কেন গ্রামবাংলায় কুসংস্কার রুখতে সঠিকভাবে প্রচার হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।